‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
মঙ্গলবার

১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

১২:৫২:৫৪ AM
1437241

মহানবীর বে’সাত দিবস; মানবজাতির ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন

মুসলমানদের অন্যতম খুশির দিন হল ঈদে মাবআস। যেদিন সর্বপ্রথম রসূলুল্লাহর (সা.) প্রতি পবিত্র কুরআনের আয়াত নাজিল হয়। (اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ)

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ২৭শে রজব পবিত্র মক্কা শহরে রসূলুল্লাহর  (সা.) প্রতি সর্বপ্রথম ওহী নাজিল হয়। তখন তাঁর বয়স ছিল ৪০ বছর। দিনটি মাবআস বা নবুয়ত ঘোষণা দিবস নামেও পরিচিত। ইসলামে এই দিবসটিকে আল্লাহর মনোনীত অন্যতম দিন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই দিনে হজরত জিবরাইল (আ.) কর্তৃক ওহী নিয়ে আসা, আল্লাহর বানী নাজিল হওয়া এবং রসুলের (সা.) নবুয়ত ঘোষণার পর, যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হল রসূলের নবুয়ত ঘোষণার উদ্দেশ্য। অর্থাৎ শেষ নবী হিসেবে রসূলুল্লাহর  (সা.) উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা; যেমন, মানুষকে একত্ববাদে দাওয়াত দেয়া, ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করা, অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করা, মানুষের চিন্তার স্তরকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করা, মানুষের মধ্যে বিভেদ দূর করা এবং ঐশী আয়াত ও আহকাম পড়ে শোনানো।

রসূলুল্লাহ (সা.) তার ইবাদতের জন্য বেশিরভাগ সময় মক্কার নগরীর পাশে অবস্থিত হেরা পর্বতের গুহায় যেতেন এবং আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন হতেন। এই গুহায় থাকাকালেই তিনি নবুয়ত ঘোষণার আদেশ পান। তৎকালীন সময় বেশিরভাগ লোকেরা মূর্তিপূজা বা ভিন্ন ধর্মের অধিকারী ছিল। একারণেই মহান আল্লাহ, মহানবীর (সা.) মাধ্যমে অজ্ঞদেরকে একত্ববাদের দাওয়াত দিলেন।

তখন রসূলুল্লাহ (সা.) লোকদের উদ্দেশ্যে আল্লাহর একত্ববাদের দাওয়াত দিতে শুরু করেন। তার নিকটাত্মীয়দের মধ্য থেকে হজরত আলী (আ.) এবং হজরত খাদিজা (সা.আ.) আল্লাহর উপর ঈমান নিয়ে আসেন এবং ধীরে ধীরে একত্ববাদের এই ধর্ম ছড়িয়ে পড়ে। আমরা মুসলিমরাও প্রতিবছর ২৭ রজব দিনটিকে বরকতময় হিসেবে উৎসব পালন করে থাকি।

উল্লেখ্য যে, রেওয়ায়তে বর্ণিত এই দিবসের মোস্তাহাব আমলসমূহের মধ্যে দোয়া, গোসল ও নামাজ উল্লেখযোগ্য।

কেন মাবআস দিবসে আমিরুল মুমিনীন আলী (আ.)-এর জিয়ারত পাঠ করা উত্তম?

মাবআসের রাতের আমলসমূহের মধ্যে উল্লেখ্য অন্যতম আমল হল আমিরুল মুমিনীন আলী (আ.)-এর জিয়ারত পাঠ, যা এই রাতের সবচেয়ে উত্তম আমল হিসেবে পরিগণিত।

মরহুম শেইখ আব্বাস কুম্মি (রহ.) তার মাফাতিহুল জিনান গ্রন্থে এই রাতের আমলের মধ্যে আমিরুল মুমিনীন (আ.)-এর তিনটি জিয়ারত উল্লেখ করেছেন এবং এরপর প্রায় ছয়শ বছর আগের আহলে সুন্নতের এক আলেম আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে বতুতার উদ্ধৃতিতে একটি ঘটনা বর্ণনা করেন।

ইবনে বতুতা তার ‘রাহলাতু ইবনে বতুতা’ নামে পরিচিত ভ্রমণকাহিনীতে, মক্কা থেকে নাজাফ সফর এবং আমিরুল মুমিনীন (আ.)-এর পবিত্র মাজার যিয়ারত সম্পর্কে লিখেছেন:

এই শহরের মানুষ সবাই রাফেজী (শিয়া) এবং এই বরকতময় মাজারের (আমিরুল মুমিনীনের মাজার) একটি কেরামত প্রকাশ পেয়েছে। বিশেষ করে ২৭শে রজবের রাতে -যে রাতটি নাজাফের অধিবাসীদের নিকট জাগরণের রাত নামে পরিচিত- ইরাক, খোরাসান, পারস্য ও রোম থেকে পঙ্গু, শয্যাশায়ী যে কোন ধরণের রোগী এই শহরে নিয়ে আসে; অতঃপর এশার নামাজের পর এই রোগীদেরকে পবিত্র জারিহের (রওযা) পাশে নিয়ে আসে; লোকেরাও একত্রিত হয় এবং রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠা এবং উঠে দাঁড়ানোর অপেক্ষা করতে থাকে। এদের কেউ কেউ নামাজ পড়ে, কেউ কেউ জিকির পাঠ করে, কেউ কেউ কুরআন তিলাওয়াত করে এবং কেউ কেউ বসে বসে পবিত্র জারিহের দিকে তাকিয়ে থাকে।

যখন অর্ধেক বা দুই-তৃতীয়াংশ রাত অতিবাহিত হয়ে যায়; সব পঙ্গু ও শয্যাশায়ী রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠে দাঁড়ায়, যেন তাদের কোন রোগ নেই এবং বলতে থাকে: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ, আলীউন ওলীউল্লাহ। এই ঘটনাটি বিখ্যাত ও অধিক বর্ণিত। যদিও আমি (ইবনে বতুতা) ঐ রাতে নাজাফে ছিলাম না তবে আমার বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের মুখে শুনেছি।

অবশ্য একটি মাদ্রাসার গেস্ট হাউজে, হাটা-চলা করতে না পারা রোম, ইসফাহান ও খোরাসান তিনজন ব্যক্তিকে দেখেছি। তাদের নিকট জিজ্ঞাসা করেছি: কেন তোমরা আরোগ্য লাভ করনি ও এখানে রয়েছ?

তারা বলেছে: আমরা ২৭শের রাতে পৌঁছুতে পারিনি তাই এখানে আগামী বছরের ২৭শের রাত পর্যন্ত এখানে থাকবো যাতে আরোগ্য লাভ করতে পারি।

মজার বিষয় হচ্ছে, ঘটনাটি আহলে সুন্নতের একজন আলেমের মাধ্যমে বর্ণিত হয়েছে।

রসূলের বে’সাতের সাথে আমিরুল মুমিনীনের (আ.) জিয়ারতের সম্পর্ক জানতে হলে, সূরা মায়েদার ৩ ও ৬৭ নং আয়াতের শানে নুযূলের প্রতি লক্ষ্য করতে হবে। তাহলে এই সম্পর্কের রহস্য উন্মোচিত হবে। সূরার ৬৭ নং আয়াতে বলা হয়েছে: (یا ایّها الرّسول بلّغ ما أنزل الیک من ربّک و إن لم تفعل فما بلّغت رسالته) হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর রেসালতের কিছুই পৌছালেন না।

সকল শিয়া মুফাসসির এবং অনেক সুন্নি মুফাসসিরদের দৃষ্টিতে এই আয়াত গাদিরে খুমে নাজিল হয় এবং এই আয়াত নাজিলের পর একলক্ষ চব্বিশ হাজার উপস্থিতির সম্মুখে রসূল (সা.) আনুষ্ঠানিকভাবে আমিরুল মুমিনীন (আ.)-কে তার স্থলাভিষিক্ত করেন।

আয়াতের ভাষ্যের দিকে লক্ষ্য করুন, আল্লাহ তার রসূলের উদ্দেশ্য বলেছেন, যদি আপনি এই কাজ না করেন তাহলে আপনার নবুয়ত ও রেসালত অসম্পূর্ণ ও অপরিপূর্ণ! এবং এই ঘোষণার পরেই কিন্তু বাইয়াত গ্রহণ করা হয়। অতঃপর সূরা মায়েদার ৩নং আয়াত নাজিল হয়: (الیوم یئس الّذین کفروا من دینکم و أتممت علیکم نعمتی و رضیت لکم الاسلام دینا) আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে কবুল করে নিলাম।

অর্থাৎ কাফেররা আমিরুল মুমিনীনের স্থলাভিষিক্তের কারণে হতাশ হয়ে পড়ে কেননা তারা মনে করেছিল রসূল (সা.)-এর ওফাতের সাথে সাথে এই দ্বীনের সমাপ্তি ঘটবে। অথচ এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে মহান আল্লাহ মুসলমানদের ভবিষ্যৎ অবস্থার কথা জানিয়ে দেন, দ্বীন ও নেয়ামতের পূর্ণতা দান করেন এবং এই দ্বীনের প্রতি নিজের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

এই ঘটনা সম্পর্কে আহলে সুন্নতের ইতিহাস গ্রন্থ তারিখে বাগদাদিতে, আবু হুরায়রার উদ্ধৃতিতে বর্ণিত হয়েছে, গাদিরে খুমের আলীর (আ.) বাইয়াতের ঘটনার পর, উমর ইবনে খাত্তাব তাকে বলে, (بخّ بخّ یابن علی بن ابی طالب أصبحت مولای و مولا کلّ مسلم) আপনাকে মোবারকবাদ জানাই হে আবু তালিবের পুত্র! কেননা আপনি আমার এবং সকল মুসলমানের অভিভাবক হয়ে গেলেন। ঠিক এমন সময় এই আয়াতটি নাজিল হয়: (الیوم أکملت لکم دینکم) – আল-গাদির, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৩০।

মূলকথা হল, মহানবীর (সা.) রেসালাত তার প্রকৃত উত্তরাধিকারী আলী (আ.)-এর অভিভাবকত্ব (বেলায়াত) ব্যতীত অসম্পূর্ণ। অর্থাৎ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, কেউ রসূলকে মানে কিন্তু আমিরুল মুমিনীনকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে মানে না, কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী তার দ্বীন অসম্পূর্ণ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির সামিল নয়। আর তাই মাবআসের রাতে আমিরুল মুমিনীনের জিয়ারত, সবচেয়ে উত্তম আমল হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। যাতে বিবেকবান মানুষ এই মৌলিক বিষয়কে স্মরণে রাখতে পারে। কেননা পবিত্র কুরআনের সূরা জারিয়াতের ৫৫নং আয়াতে এসেছে: (و ذکّر فانّ الذّکری تنفع المومنین) এবং স্মরণ করুন; কেননা, স্মরণ মুমিনদের উপকারে আসে।

মাহদাভীয়াত হল বে’সাতের পূর্ণতা দানকারী

আল্লাহর রসূলের উপর অবতীর্ণ দ্বীন, যা তিনি মানুষের কাছে পৌঁছে দেন, তা ছিল নিখুঁত। কিন্তু মুসলমানরা এর বিশুদ্ধতা ধারণে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে, ইসলাম হল সর্বশেষ ধর্ম এবং যদি এই সর্বশেষ দ্বীন সম্পূর্ণ না হয় তাহলে আল্লাহর মানুষকে হেদায়েতের উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই এমন কাউকে থাকতে হবে যিনি এই দ্বীনকে তার প্রকৃত রূপে মানুষের নিকট উপস্থাপন করবেন।

হাদিস থেকে যা পাই তা হল, ইমামে জামানার শাসনকালে ইসলামের প্রতিটি উদ্দেশ্য বাস্তবরূপ লাভ করবে; দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষ আল্লাহর ইবাদত করবে ও একটি আদেশের অধীনে থাকবে এবং বিশ্বব্যাপী একটি শাসনব্যবস্থা কায়েম হবে। অন্যদিকে, মানুষের জীবনযাত্রার মান এতটাই ভালো হবে যে, কোন অভাবী ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না। এর অর্থ হল সুবিচার প্রতিষ্ঠা। সে যুগের লোকদের মধ্যে বিশ্বাসঘাতকতা, চুরি বা অন্যের অধিকার লঙ্ঘন করার প্রবণতা থাকবে না। অর্থাৎ নৈতিকতা পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হবে, যে উদ্দেশ্যে নবীকে (সা.) পাঠানো হয়েছিল তা পূর্ণতা পাবে।

 

রসূলুল্লাহর (স.) বে’সাত সম্পর্কে আমিরুল মুমিনীনের বানী

ইমাম আলী (আ.) বলেন, আল্লাহ এমন এক প্রেক্ষাপটে তাঁর নবুয়ত ঘোষণা করেন, যে প্রেক্ষাপটে অন্য কোন নবীর নবুয়ত ঘোষণা হয়নি। যখন লোকেরা দীর্ঘ ঘুমে নিমজ্জিত ছিল, ফিতনা বেড়ে গিয়েছিল, কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছিল, চারিদিকে যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল, পৃথিবী ধোঁকা ও প্রতারণায় ভরে গিয়েছিল, জীবন্ত গাছের পাতা হলুদ হয়ে গিয়েছিল, যেন তার আর বাঁচতে ইচ্ছা করছিলো না।

রহমতের নবীর নৈতিক জীবন থেকে মুগ্ধকর অনুচ্ছেদ

ইমাম সাদিক (আ.) বলেন, আল্লাহর রসূলের (সা.) নিকট একটি আতরদানি ছিল, যার মাধ্যমে তিনি প্রতি ওযুর পর নিজেকে সুগন্ধি করতেন। তিনি যখনই ঘর থেকে বের হতেন, তার চলার পথ ধরে আতরের ঘ্রাণ ভেসে বেড়াতো।

রসূলুল্লাহ (সা.) অপছন্দ করতেন যে, কেউ তাঁর জন্য উঠে দাঁড়াক, আর এ কারণেই লোকেরা তাঁর সামনে উঠে দাঁড়াত না, কিন্তু তিনি চলে যাওয়ার সময়, তার সাথে উঠে দাঁড়াত এবং তাঁকে সাথে তাঁর বাড়ি পর্যন্ত সঙ্গ দিত।

আলী (আ.) বলেন, রসূলুল্লাহ (সা.) সারাজীবনে কখনোই কারো সাথে করমর্দন করে, নিজের হাতকে আগে সরিয়ে নেননি। কখনোই কোন কাজে অংশ নিয়ে নিজে আগে বের হয়ে আসেননি। কখনো কেউ তার সাথে কথা বলা শুরু করলে এবং সে নিজে থেকে কথা শেষ করার হওয়ার আগে তিনি শেষ করেছেন। কখনোই কারো সম্মুখে পা লম্বা করে বসেননি। কখনোই হেলান দিয়ে বসে আহার করেননি।

তার নিকট কোন কিছু চাওয়া হলে তিনি না করতেন না এবং তিনি কখনোই কোন অভাবী ব্যক্তিকে ফিরিয়ে দেননি। তার নামাজ ছিল সম্পূর্ণ এবং অন্যদের তুলনায় ধীরগতির। তিনি সবসময় অল্প কথা বলতেন এবং অহেতুক কথা বলা থেকে দুরে থাকতেন। যখন কোন রাস্তা দিয়ে অতিক্রম করতেন তাঁর সুগন্ধিই তাঁর উপস্থিতির কথা বলে দিত। যখন অন্যদের সাথে দস্তরখানে খেতে বসতেন, সবার আগে খাবার গ্রহণ শুরু করতেন এবং সবার শেষে খাওয়া শেষ করতেন। খাওয়ার সময় নিজেই নিয়ে খেতেন, শুধু খোরমার খাওয়ার সময় আগে বাকি সবার দিকে হাত বাড়িয়ে দিতেন।

রসূলুল্লাহ (সা.) কখনোই নিজের কারণে কারো প্রতিশোধ নেননি বরং কষ্ট-দাতাদেরকে ক্ষমা করে দিতেন এবং তাদেরকে এড়িয়ে যেতেন।

একটি রেওয়ায়তে বর্ণিত হয়েছে, রসূলুল্লাহ নিজের জুতা সেলাই করতেন। নিজের কাপড় সেলাই করতেন। নিজেই ঘরের দরজা খুলতেন। যখন তার খাদিম ক্লান্ত হয়ে যেত, তিনি নিজে তার সাহায্য করতেন। নিজের রাতের ওযুর পানি সংগ্রহ করে রাখতেন। তিনি অন্যদের তুলনায় বেশি লাজুক ছিলেন। বসার সময় হেলান দিতেন না। ঘরের কাজে পরিবারকে সহেযোগিতা করতেন এবং নিজ হাতে মাংস টুকরা করে দিতেন।

নিজে দাফন কাফন করতেন, শহরের দুর প্রান্তেও রোগীদের সাক্ষাতে যেতেন। গরীবদের সাথে বসতেন, দরিদ্রদের সাথে আহার করতেন, নিজ হাতে তাদের খাদ্য তৈরি করতেন। নিকটাত্মীয়দের খোঁজ খবর নিতেন। কারও উপর অত্যাচার ও রূঢ় আচরণ করেননি। কেউ ক্ষমা চাইলে ক্ষমা করতেন। সবার আগে তার ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠত। নিজের দাস-দাসীদের চেয়ে উত্তম খাদ্য ও পোশাক ব্যবহার করতেন না। কখনোই কাউকে গালি দেননি। কখনোই স্ত্রী ও খাদিমকে অভিশাপ দেননি।

রসূল (সা.) বলেছেন, যদি দিনরাত জুড়ে কারও প্রতি কোন ক্ষোভ না করে থাকতে পারো, তবে এমনটিই কর। কেননা এটা আমার সুন্নত। যে আমার সুন্নতকে জীবিত করলো, সে যেন আমাকে জীবিত করলো আর যে আমাকে জীবিত করলো সে বেহেশতে আমার সাথে থাকবে।#176A