‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
সোমবার

৪ মার্চ ২০২৪

৬:১২:০১ PM
1442154

আবির্ভাবের প্রথম ধাপ: শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিপ্লব

প্রচলিত চিন্তাধারার বিপরীতে, হজরত মাহদির (আ.ফা.) আবির্ভাব প্রকৃত অর্থে চিন্তাগত, শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের উপর নির্ভরশীল; কোন সামরিক অভ্যুত্থান ও রক্তপাতে নয়। তিনি মানুষের চিন্তার স্তরকে এতটাই উপরে নিয়ে যাবেন যে, তারা নিজেরাই একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ শাসনব্যবস্থার প্রতি এগিয়ে যাবে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): আহলে বাইত (আ.) বিশ্ব সংস্থার আইন বিষয়ক মহাপরিচালক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীন ড. আলী আকবর বাদি’ঈ ‘আবির্ভাবের প্রাথমিক অবস্থা; শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিপ্লব’ শিরোনামে লেখা একটি কলামে তিনি লিখেছেন:

বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম

নাহজুল বালাগার ১৫০ নং খুতবায় হজরত আমিরুল মুমিনীন (আ.), আবির্ভাবকালে যুগের ইমামের (আ.ফা.) সঙ্গী ও সহযোগীদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন।

এক) ইমামের সঙ্গী-সহযোগীরা, কুরআন ও এর তাফসীরের সাথে পরিচিত।

দুই) তারা জ্ঞানপিপাসু এবং প্রত্যহ হিকমত ও প্রজ্ঞার সুধা পান করেন।

অতএব, তাঁর দৃষ্টিতে যুগের ইমামের (আ.ফা.) সহযোগীরা হল ঐ সকল শিক্ষিত ও জ্ঞানপিপাসু ব্যক্তি যারা কুরআনের সাথে পরিচিত।

ثُمَّ لَیُشْحَذَنَّ فِیهَا قَوْمٌ شَحْذَ الْقَیْنِ النَّصْلَ تُجْلَی بِالتَّنْزِیلِ اَبْصَارُهُمْ وَ یُرْمَی بِالتَّفْسِیرِ فِی مَسَامِعِهِمْ وَ یُغْبَقُونَ کَاْسَ الْحِکْمَةِ بَعْدَ الصَّبُوح‌؛

তারপর একটি দল ফিতনা চূর্ণ করার প্রস্তুতি নেয়, তরবারির মত পালিশ হয়, তাদের দৃষ্টিগুলো কুরআনের আলোয় আলোকিত এবং তাদের কর্ণগুলো কুরআনের ব্যাখ্যায় অনুপ্রাণিত, সকাল সন্ধ্যা তারা হেকমতের পেয়ালা পান করে।

১৮২নং খুতবায় ইমামে জামানার (আ.ফা.) বৈশিষ্ট্য বর্ণনার সময় উল্লেখ করেন,

তিনি জ্ঞান ও প্রজ্ঞা রক্ষায়, এটিকে রক্ষাকারী বর্ম পরিধান করেছেন, প্রজ্ঞাকে তার পূর্ণ আদবের সাথে গ্রহণ করেছেন, এর প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন, খুবই ভালভাবে জেনেছেন এবং এর প্রতি নিবেদিত হয়েছেন।

 قَدْ لَبِسَ لِلْحِكْمَةِ جُنَّتَهَا، و أَخَذَهَا بِجَمِيعِ أَدَبِهَا، مِنَ الْاِقْبَالِ عَلَيْهَا، وَ الْمَعْرِفَةِ بِهَا، وَ التَّفَرُّغِ لَهَا

ইমাম আলী (আ.) তার এই ভাষণের অব্যাহতিতে বলেন, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা তার জন্য এমন দু’টি হারিয়ে যাওয়া বস্তু, যে জিনিসকে তিনি নিরলস খুঁজে বেড়াচ্ছেন এবং এই অন্বেষণের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে।«فَهِيَ عِنْدَ نَفْسِهِ ضَالَّتُهُ الَّتِي يَطْلُبُهَا، وَ حَاجَتُهُ الَّتِي يَسْأَلُ عَنْهَا» এই কথাটি অপর একটি বিষয়ের গুরুত্ববহন করে যে, ঐশী পুরুষের কাজের পরিকল্পনা প্রজ্ঞার উপর নির্ভরশীল এবং যে কোন ধরনের পরিবর্তন সৃষ্টির পূর্বে, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। বিষয়টি রেওয়ায়তে বর্ণিত হজরত মাহদি (আ.ফা.) সম্পর্কিত বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশেষ করে ইমাম বাকির (আ.) হতে বর্ণিত হাদিস হতে এরূপ জানা যায়, «إذا قامَ قائِمُنا وَضَعَ يَدَهُ عَلى رُؤُوسِ الْعِبادِ فَجَمَعَ بِها عُقُولُهُمْ وَ كَمُلَتْ بِها أَحْلامُهُم» যখন আমাদের কিয়ামকারী উঠে দাঁড়াবে তখন সে তার হাতকে বান্দাদের মাথার উপরে রাখবে [তাদেরকে নিজের প্রতিপালনের আওতায় নিয়ে আসবে] এবং এভাবে তাদের বুদ্ধিবৃত্তিকে মনযোগী করবে এবং তাদের চিন্তাশক্তিকে পরিপূর্ণ করবে।

খুতবার এই অংশ হতে খুব ভালভাবে স্পষ্ট হয় যে, প্রচলিত চিন্তাধারার বিপরীতে, হজরত মাহদির (আ.ফা.) আবির্ভাব প্রকৃতঅর্থে চিন্তাগত, শিক্ষাগত ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের উপর নির্ভরশীল; কোন সামরিক অভ্যুত্থান ও রক্তপাতে নয়। তিনি মানুষের চিন্তার স্তরকে এতটাই উপরে নিয়ে যাবেন যে, তারা নিজেরাই একটি ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ শাসনব্যবস্থার প্রতি এগিয়ে যাবে।#176A