‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বৃহস্পতিবার

২১ মার্চ ২০২৪

১:০৭:৪৯ PM
1445906

পশ্চিমে বিরাজমান অন্ধকার ও প্রতিরোধের ন্যায্যতা প্রমাণ করেছে গাজা: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, সাম্প্রতিক গাজা পরিস্থিতি পশ্চিমা বিশ্বে বিরাজমান অন্ধকার এবং প্রতিরোধ ফ্রন্ট গড়ার ন্যায্যতা প্রমাণ করেছে। তিনি গতকাল (বুধবার) ফার্সি নববর্ষ বা নওরোজ উপলক্ষে ইফতারের আগে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের এক সমাবেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।

আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বর্তমানে প্রধান ইস্যু হচ্ছে ফিলিস্তিন ও গাজা। কয়েকটি দিক থেকে ফিলিস্তিন ইস্যুকে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। প্রথমত গাজা পরিস্থিতি সবাইকে দেখিয়েছে কতটা অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে আছে পশ্চিমা বিশ্ব। আর এই পশ্চিমা বিশ্ব নিজেকে সভ্য বলে দাবি করছে। মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলো নিয়ে তারা নানা দাবি করছে। গাজা পরিস্থিতি প্রমাণ করেছে তাদের জীবনযাপন, চিন্তা ও কাজ অজ্ঞতায় আচ্ছন্ন।

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, গাজায় আবাল-বৃদ্ধ-বণিতাসহ ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রোগীরাও রয়েছেন। ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। অবকাঠামোগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। তথাকথিত সভ্য পশ্চিমা বিশ্ব শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছে। এ কাজে বাধা তো দিচ্ছেই না বরং সহযোগিতা করছে। গাজার মানুষের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের নৃশংস আগ্রাসনের শুরু থেকেই আমেরিকার নেতারা আসা-যাওয়া শুরু করে। ইউরোপীয়রাও একের পর এক আসতে থাকে। এভাবে তারা ইসরাইলি অপরাধ ও নৃশংসতার প্রতি নিজেদের সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা স্পষ্ট করেছে।

তিনি আরও বলেন, গাজার ঘটনা প্রতিরোধ ফ্রন্ট গড়ার ন্যায্যতা প্রমাণ করেছে। এটা স্পষ্ট করেছে যে, পশ্চিম এশিয়ায় প্রতিরোধ ফ্রন্টের উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্রমেই প্রতিরোধ ফ্রন্টকে শক্তিশালী করতে হবে।

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইহুদিবাদীদের ৭০ বছরের নিপীড়ন প্রত্যক্ষ করার পর জাগ্রত বিবেকসম্পন্ন মানুষ চুপচাপ বসে থাকতে পারে না, তারা প্রতিরোধের কথা ভাববে এটাই স্বাভাবিক।

তিনি বলেন, ফিলিস্তিনি জাতি ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী অপরাধীদের অব্যাহত জুলুমের মোকাবিলা করতেই প্রতিরোধ ফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রতিরোধ ফ্রন্ট নিজেদের শক্তি-সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছে এবং মার্কিন হিসাব-নিকাশ পাল্টে দিয়েছে। ইরাক, সিরিয়া, লেবানন ও অন্য দেশগুলোর ওপর আধিপত্য পাকাপোক্ত করতে চেয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু প্রতিরোধ সংগ্রামীরা প্রমাণ করেছে, এটা সম্ভব নয় এবং মার্কিনীদেরকে এই অঞ্চল ত্যাগ করতেই হবে। 

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলের শাসক গোষ্ঠী নানা ধরণের সংকটের সম্মুখীন, শুধুমাত্র নিজেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রে নয় বরং সংকট থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রেও তারা সমস্যার মধ্যে রয়েছে। তারা নিজেকে রক্ষায় অক্ষম। এখনি যদি দখলদার ইসরাইল গাজা থেকে সরে আসে তাহলেও তারা ব্যর্থ। আবার সরে না আসলেও তারা ব্যর্থ। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে স্ববিরোধিতা, চরম বিভ্রান্তি এবং ইহুদিবাদী কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব দখলদার ইসরাইলকে দ্রুতই পতনের দিকে নিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজায় সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিটাকে বেছে নিয়েছে। এমন কাজ করেছে যে, গোটা বিশ্বেই তারা এখন ঘৃণিত। লন্ডন, প্যারিস ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের রাজপথে এমনকি খোদ আমেরিকায় যারা ফিলিস্তিনের সমর্থনে প্রতিবাদ করছে তারা আসলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাদের ঘৃণা প্রকাশ করছে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইয়েমেন, ইরাক, সিরিয়া এবং লেবাননের প্রতিরোধ সংগ্রামীরা যে পদক্ষেপই নিচ্ছে তার জন্য আমেরিকা ইরানকে দায়ী করছে। এই ভুল হিসাব-নিকাশ আমেরিকাকে বিপর্যস্ত করবে। তারা মানুষ চেনে না। প্রতিরোধ সংগ্রামীরা তাদের বিবেক-বুদ্ধি ও ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে। অবশ্য ইরান প্রতিরোধ সংগঠনগুলোকে সমর্থন করে।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবের এই নেতা শত্রুদের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক করে তরুণদেরকে শত্রুদের চেয়ে অগ্রগামী হওয়ার আহ্বান জানান্ তিনি বরেন, শত্রুরা আপনাদেরকে হতাশ করতে চায়। উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে যাওয়ার ভয়ে থাকে। শত্রুরা নিরাশ করার আগেই আপনারা আশাবাদ সৃষ্টি ও বিকাশের জন্য চেষ্টা জোরদার করুন।#

342/