‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : IRIB
সোমবার

৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৪

৪:৫৬:০০ PM
502792

'উত্তর ইসরাইলে' ফেরার স্বপ্ন ছাড়ুন: ফিলিস্তিনিদের প্রতি লিভনি

ইহুদিবাদী ইসরাইলের কথিত বিচারমন্ত্রী জিপি লিভনি ১৯৪৮ সালে অধিকৃত ফিলিস্তিন বা তথাকথিত উত্তর ইসরাইলে ফিলিস্তিনিদের ফিরে যাওয়ার 'স্বপ্ন' ত্যাগ করা উচিত বলে যে মন্তব্য করেছেন হামাস তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা আবনা : ইহুদিবাদী ইসরাইলের কথিত বিচারমন্ত্রী জিপি লিভনি ১৯৪৮ সালে অধিকৃত ফিলিস্তিন বা তথাকথিত উত্তর ইসরাইলে ফিলিস্তিনিদের ফিরে যাওয়ার 'স্বপ্ন' ত্যাগ করা উচিত বলে যে মন্তব্য করেছেন হামাস তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

লিভনি সম্প্রতি জার্মানির মিউনিখে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ক এক সেমিনারে বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের উচিত ইয়াফা ও হাইফা শহরে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন ত্যাগ করা এবং এ ধরনের আশা ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তার লঙ্ঘন।

লিভনি আরো বলেছেন, এই শহরগুলো আরবদের শহর নয় বলে সেগুলোর হিব্রু নামই ব্যবহার করা উচিত ফিলিস্তিনিদের।

ফিলিস্তিন ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরের সদস্য মুসা আবু মারজুক লিভনির ওই অযাচিত নসিহত প্রত্যাখ্যান করে তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই শহরগুলোতে ফিলিস্তিনিদের ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে এবং আমরা কখনও আমাদের ইতিহাস ভুলে যাব না।

আবু মারজুক আরো বলেছেন, ইহুদিবাদী সরকার ইসরাইলকে একটি ইহুদি সরকার হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে এবং ফিলিস্তিনিদের এটা বোঝাতে চাইছে যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে নিজের ইতিহাস ভুলে যেতে হবে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা মাতৃভূমিতে ফিরে আসার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে এবং তারা কখনও মাতৃভূমির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ও ফিলিস্তিনের পবিত্র স্থানগুলোকে ভুলবে না।

ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীরা ত্রিশের দশক থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাস, হত্যাযজ্ঞ ও জবর দখলের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের নানা অঞ্চল থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা শুরু করে এবং ব্রিটেন ও আমেরিকার সহায়তায় ফিলিস্তিনিদের জমিতেই ইসরাইল নামক রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা দেয়। এইসব জবরদখলের পরিণতিতে ৫৫ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী হিসেবে আশপাশের আরব দেশগুলোতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।

ইসরাইল জাতিসঙ্ঘের আইন অমান্য করে এখনও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করে ও তাদের বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে অবৈধ ইহুদি বসতি নির্মাণ করে যাচ্ছে যাতে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলি কর্তৃত্ব পাকাপোক্ত হয়। 

ফিলিস্তিন স্বশাসন-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শান্তি আলোচনার পাশাপাশি এইসব অপরাধযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে বর্ণবাদী ইসরাইল।

হামাস ও জিহাদসহ ফিলিস্তিনের সংগ্রামী দলগুলো ইসরাইলের সঙ্গে কথিত শান্তি আলোচনার বিরোধিতা করে আসছে এবং এই দলগুলো দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ-বিরতি বা সন্ধিকে মেনে নিলেও কখনও দখলদার ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে না বলেও উল্লেখ করে আসছে। সংগ্রামী এইসব দলের বক্তব্য অনুযায়ী ফিলিস্তিনকে পুরোপুরি স্বাধীন করা হলে জবরদখলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত গোটা ইসরাইলের অস্তিত্ব তথা ইসরাইলের এক ইঞ্চি জমিও টিকে থাকবে না।

ফিলিস্তিনের সংগ্রামী দলগুলো আরো বলছে, ইসরাইল শান্তি আলোচনাকে কেবল অবৈধ ইহুদি বসতি বিস্তারের হাতিয়ার বা ঢাল হিসেবেই ব্যবহার করে আসছে।

উল্লেখ্য, ইহুদিবাদ ইহুদি ধর্মের নামে প্রচারিত উগ্র বর্ণবাদ-ভিত্তিক একটি মতবাদ এবং ইহুদি ধর্মের সঙ্গে এর কোনো প্রকৃত সম্পর্ক নেই। ইহুদিরাই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতি ও বিশ্বের ওপর শাসন আর কর্তৃত্ব করার জন্য স্রস্টা তাদের মনোনীত করেছেন এবং এ লক্ষ্যে যে কোনো অন্যায় অবিচার ও সন্ত্রাস তাদের দৃষ্টিতে বৈধ।