‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
শনিবার

২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

১:৪৪:১৭ AM
735824

হিজবুল্লাহ’র ১ লক্ষ ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে ইসরাইল

শহীদ এমাদ মুগনিয়ার স্মরণে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকারের উপদেষ্টা বলেন: হিজবুল্লাহ’র এক লক্ষাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে ইসরাইলের প্রতিটি এলাকা।

হলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা-: শহীদ এমাদ মুগনিয়ার স্মরণে বিশেষ সম্মেলন গত বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তেহরানে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সম্মেলনে ইরানের উচ্চপদস্থ সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তা এবং ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী রক্ষী বাহিনী’র ডেপ্যুটি চিফ জেনারেল হুসাইন সালামি, হাদ্দাদ আদেল, হুসাইন শেইখ, জেনারেল পাকপুর, কুদস বাহিনী সহকারী প্রধান জেনারেল কাআনী, কাযেম দারাবী এবং এমাদ মুগনিয়ার সহযোদ্ধা ‘আনিস নাক্কাশ’সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ইরানের জাতীয় পার্লামেন্টের স্পিকারের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা এ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে বলেন: হিজবুল্লাহ এক লক্ষাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে ইসরাইলের প্রতিটি অঞ্চল।

আইআরজিসি’র ডেপ্যুটি চিফ জেনারেল সালামি বলেন: তাকফিরিদের মোকাবেলায় হিজবুল্লাহ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। যাতে লেবাননকে তাকফিরী সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।

লেবাননে শহীদ এমাদ মুগনিয়ার ভূমিকার প্রতি ইঙ্গিত করে জেনারেল সালামি বলেন: প্রতিটি জাতির ইতিহাসে সর্বদা এমন ব্যক্তিদের উপস্থিতি পরিলক্ষিত যারা ঐ জাতির স্বকীয়তা ও ব্যক্তিত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তারা অমর ব্যক্তিত্বের অধিকারী। ইতিহাস যাদেরকে স্মরণ রাখে। শহীদ এমাদ মুগনিয়া এমনই ব্যক্তিদের একজন।

তিনি বলেন: এমাদ মুগনিয়া লেবাননের জন্য এনেছেন সম্মান এবং একে অপরাজেয় ও দুর্ভেদ্য একটি ভূখণ্ড হিসেবে পরিচয় করিয়েছেন; যা মুসলিম বিশ্ব এবং লেবানন জাতির জন্য গর্বের কারণ হয়েছে।

বৈরুতের সৈকত মার্কিন সেনাদের উপর হামলার ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন: বৈরুতের সৈকতে ২৭০ জন মার্কিন সেনা হত্যা অভিযানে অংশগ্রহণকারী যোদ্ধাদের একজন ছিলেন শহীদ এমাদ মুগনিয়া। ঐ সকল যোদ্ধারা মার্কিন সেনাদেরকে এমনভাবে বৈরুত ত্যাগে বাধ্য করেছিল যে, আজ পর্যন্ত মার্কিন সেনারা লেবাননে ফিরে আসতে পারেনি।

৩৩ দিনের যুদ্ধে ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনের সদস্যদের বিরত্বের প্রতি ইঙ্গিত করে বিপ্লব রক্ষী বাহিনী (আইআরজিসি)’র সহকারী প্রধানের সংযোজন: যখন সবাই মনে করত, জায়নবাদী ইসরাইল বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি এবং তারা অপরাজেয় তখন এমাদ মুগনিয়া লেবাননের অপর যোদ্ধাদেরকে সাথে নিয়ে ভৌগলিক দিক থেকে বাহ্যিকভাবে ক্ষুদ্র একটি এলাকাকে রাজনৈতিক ও নিরপত্তার দিক থেকে একটি বৃহত দেশে রূপান্তরিত করেন।

জেনারেল সালামি বলেন: ইতিহাসের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে জায়নবাদীদের সাথে আরবদের অনেক যুদ্ধ হয়েছে -এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সোভিয়েত ইউনিয়নও তাদেরকে সহযোগিতা করেছে- তারা জায়নবাদীদের হাতে পরাজিত হত। কিন্তু যখন বিপ্লবের কুড়ি আরব বিশ্বের যুবকদের অন্তরে এবং চিন্তায় প্রস্ফুটিত হতে শুরু করলো, তখন প্রতিরোধের চারা গাছ তাদের মনে জন্ম নিল। আর এ চারাগাছের ফল হিসেবে প্রথমে তারা ১৯৯৬ সালে ১৬ দিনের যুদ্ধে দখলদার জায়নবাদী ইসরাইলকে পরাজিত করে। এরপর ২০০০ সালে দখলদাররা লেবাননের দক্ষিন অঞ্চল ত্যাগ করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

দখলদার জায়নবাদীরা সর্বদা জীবন-মৃত্যুর মাঝে বসবাস করে সুখ-শান্তির মাঝে নয়–এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন: ৩৩ দিনের যুদ্ধে হিজবুল্লাহ’র কাছে পরাজিত হওয়ার পর ইসরাইলি শক্তির খ্যাতি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। পক্ষান্তরে জনগণের প্রতিরোধ উজ্জীবিত হয় এবং নতুন প্রাণ লাভ করে।

সর্বোচ্চ নেতা যে ভবিষ্যদ্বানী করেছিলেন (আগামী ২৫ বছরের মধ্যে বিশ্বের রাজনৈতিক মানচিত্রে ইসরাইল নামের কোন কিছু থাকবে না) তা আজ তা বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে –এ কথার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন: লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী লেবাননের একটি শক্তি থেকে আজ মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী একটি শক্তিতে পরিণত হয়েছে। ইসরাইল ইচ্ছা করলেই দখল করে নিতে পারে এমন ভূখণ্ড এখন লেবানন ও ফিলিস্তিন নয়।

তার সংযোজন: সিরিয়াতে তাকফিরিদের মোকাবেলায় (যারা জায়নবাদী ইসরাইল ও আমেরিকার কৌশলগত শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে) যুদ্ধরত। তারা বর্তমানে সিরিয়াতে ইসলামি প্রতিরোধ গড়ে তুলে সিরিয়াকে রক্ষা করছে। তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে সিরিয়াতেই সন্ত্রাসীদেরকে রুখে দেয়া এবং সন্ত্রাসীরা যাতে সিরিয়া অতিক্রম করে লেবাননে প্রবেশ না করে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা।#