‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : parstoday
বৃহস্পতিবার

১৬ জুন ২০১৬

১১:৪৫:০৫ AM
760577

হিজবুল্লাহকে নিয়ে ইসরাইলের আতঙ্ক ও আত্মরক্ষার অনুশীলন

লেবাননের জনপ্রিয় ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তাদের অনেকেই নিজের ও পরিবার-পরিজনের জন্য গোপন আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করেছে।

আবনা ডেস্ক: লেবাননের জনপ্রিয় ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তাদের অনেকেই নিজের ও পরিবার-পরিজনের জন্য গোপন আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করেছে।
লেবাননের দৈনিক আলআখবার ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম ও সংবাদ সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ইসরাইল ২০০৬ সালের জুলাই মাসে শুরু-হওয়া ৩৩ দিনের যুদ্ধের বার্ষিকী নির্ধারিত দিনের কিছু আগেই পালন করেছে। হিজবুল্লাহর সঙ্গে ওই যুদ্ধে যেসব ইসরাইলি নিহত হয়েছিল তাদের পরিবার-পরিজন এই বার্ষিকী পালন করেছে হিব্রু ক্যালেন্ডারের আলোকে। প্রায় একই সময়ে ইসরাইল হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধের মহড়া চালিয়েছে এবং এ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে।
ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, হিজবুল্লাহর সামরিক ক্ষমতা অনেক বেড়েছে এবং সিরিয়ায় যুদ্ধ করতে করতে হিজবুল্লাহর অভিজ্ঞতাও অনেক বেড়েছে।
ইসরাইলি দৈনিক জেরুজালেম পোস্ট লেবানন সীমান্ত অঞ্চলের একজন উচ্চ-পদস্থ ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তার কথা এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছে। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ২০০৬ সালের তুলনায় হিজবুল্লাহর হিজবুল্লাহর সামরিক ক্ষমতা গুণগত ও পরিমাণগত দিক থেকে অনেক গুণ বেড়েছে। দৈনিকটি লিখেছে, দশ বছর আগের সেই যুদ্ধের তুলনায় হিজবুল্লাহর সেনারা অস্ত্রে-শস্ত্রে অনেক বেশি সুসজ্জিত এবং ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ ও ক্ষমতার অধিকারী।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, হিজবুল্লাহর সেনারা সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র থেকে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করছে ইসরাইলি সেনাদের জন্য কঠিনতম অনুশীলন বা মহড়ার মাধ্যমেও তা অর্জন করা খুব কঠিন ব্যাপার।
ইসরাইলি দৈনিক মাআরিভ লিখেছে, সম্প্রতি (গত সপ্তায়) ইসরাইলের নতুন যুদ্ধ-মন্ত্রী লিবারম্যানের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা-বৈঠকে সম্ভাব্য নতুন যুদ্ধের বিষয়ে ইসরাইলের প্রস্তুতির অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। এ বৈঠকে লিবারম্যান হিজবুল্লাহকে ইসরাইলের সবচেয়ে মারাত্মক শত্রু বলে অভিহিত করেন।
ইসরাইলি পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, ইরান থেকে শুরু করে সিরিয়া, লেবানন ও গাজা অঞ্চলে ইসরাইলের শত্রুদের কাছে রয়েছে দুই লাখ বিশ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র; আর এর অর্ধেকেরই বেশি রয়েছে হিজবুল্লাহর কাছে। হিজবুল্লাহ এখন যুদ্ধের একটি গোষ্ঠী ও দল থেকে পুরোপুরি এক সশস্ত্র বাহিনীতে পরিণত হয়েছে বলে বৈঠকে বলা হয়। হিজবুল্লাহর সেনা সংখ্যা ২০ হাজারে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও হিজবুল্লাহর ২৫ হাজার রিজার্ভ সেনা রয়েছে বলে ওই বৈঠকের বক্তব্যে জানানো হয়েছে। হিজবুল্লাহর বিশেষ নৌ-ইউনিট ও গোয়েন্দা ড্রোন-ইউনিটও রয়েছে বলে ইসরাইলের ওই বৈঠকে বলা হয়। হিজবুল্লাহর ইলেকট্রনিক যুদ্ধ-ক্ষমতা ও সাইবার যুদ্ধের ক্ষমতাও বাড়ছে এবং এসব ইউনিট ইসরাইলের যোগাযোগ-সরঞ্জাম থেকে তথ্য বাগিয়ে নিচ্ছে আড়ি-পাতার মাধ্যমে। হিজবুল্লাহর গোয়েন্দা-সক্ষমতাও ক্রমেই বাড়ছে বলে ইসরাইল জানিয়েছে।
হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হলে গ্যালিলি শহর ও নানা উপশহর থেকে কত দ্রুত পালানো যায় ও ইসরাইলি অভিবাসীদের ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া যায় ইসরাইলি সেনারা যুদ্ধের মহড়ায় তার অনুশীলন করেছে। বিনা কারণে এমন অনুশীলন করা হয়নি বলে ইসরাইলের চ্যানেল-টু টেলিভিশন মন্তব্য করেছে। ইসরাইল বহু ভূগর্ভস্থ আত্মগোপন ও আশ্রয়-কেন্দ্র গড়ে তুলেছে হিজবুল্লাহর ভয়াবহ হামলার কথা মাথায় রেখেই। এসব কেন্দ্রে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যও মজুদ রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরাইলের এক সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, কাউকেই বিশ্বাস করা যায় না। তাই কেবল নিজের ওপর আস্থা রাখা যায়। হিজবুল্লাহর সেনারা কঠোর প্রচেষ্টা চালাবে ও তারা সফলও হবে, কারণ ইসরাইলি সেনাদের প্রস্তুতি নেই। ইসরাইলি সেনারা কেবল কথা বলতেই ওস্তাদ, কাজের বেলায় অনেক পিছিয়ে থাকে, অন্যদিকে হিজবুল্লাহর সেনারা যা বলে তা কার্যকর করে। #