‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
মঙ্গলবার

১১ এপ্রিল ২০১৭

১১:৫৫:৪৮ PM
823319

সিরিয়া ও ইরাকে সন্ত্রাসী লেলিয়ে ইসরাইল হজম করছে ইসলামের প্রথম কেবলা

মুসলমানদের প্রথম কেবলা আলকুদসের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের নানা ষড়যন্ত্র ও হঠকারী পদক্ষেপ দিনকে দিন জোরদার হচ্ছে।

আবনা ডেস্ক: মুসলমানদের প্রথম কেবলা আলকুদসের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের নানা ষড়যন্ত্র ও হঠকারী পদক্ষেপ দিনকে দিন জোরদার হচ্ছে। বিশ্ব-সমাজের নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তাই এক্ষেত্রে বর্ণবাদী ইসরাইলের ধৃষ্টতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সম্প্রতি ইহুদিদের একটি উৎসব অনুষ্ঠানের অজুহাতে গোটা বায়তুল মোকাদ্দাস তথা জেরুজালেম এবং গাজার সীমান্ত অঞ্চলে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার নামে ফিলিস্তিনিদের ওপর নজিরবিহীন সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে দখলদার ইসরাইল।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এইসব হয়রানির ব্যাপারে বিশ্ব-সমাজের নীরবতার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, ইসরাইল গোটা বায়তুল মোকাদ্দাসকে সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেছে।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনিরা দখলদারদের পক্ষ থেকে নানা ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ ও উস্কানিমূলক ব্যবস্থার শিকার হয়েছে। মুসলমানদের প্রথম কিবলার শহর আলকুদসসহ ফিলিস্তিনিদের নানা অঞ্চলে ইহুদিবাদীরা এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে ইহুদিদের নানা উৎসব অনুষ্ঠানের অজুহাতে। বিবৃতিতে ইসরাইলের এসব পদক্ষেপকে কুদস-শরীফসহ ফিলিস্তিনের নানা অঞ্চলের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পাঁয়তারা বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে বিশ্ব-সমাজের উদাসীনতার প্রতিবাদ জানিয়েছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইসরাইল ইহুদিদের কথিত নানা উৎসবের সময় মুসলমানদেরকে তাদের প্রথম কিবলা তথা আলআকসা মসজিদে ঢোকার অনুমতি দেয় না। এভাবে প্রতি বছরের প্রায় ২০০ দিনই মুসলমানদেরকে মসজিদুল আকসায় ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরাইলি দখলদার কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও এই পবিত্র মসজিদ সংলগ্ন ছাদযুক্ত ও ছাদবিহীন নানা স্থানকে ইহুদিদের পবিত্র স্থান বলে দাবি করছে ইসরাইল।
আল-আকসা মসজিদের ওপর ইসরাইলের নানা আগ্রাসী পদক্ষেপ কেবল আন্তর্জাতিক আইনেরই লঙ্ঘন নয়, একইসঙ্গে তা আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরাইলের দ্বিপাক্ষিক চুক্তিরও লঙ্ঘন। ইসরাইল ১৯৯৪ সালে জর্দানের সঙ্গে স্বাক্ষর-করা এক চুক্তি অনুযায়ী আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইহুদিবাদীদের উপাসনা নিষিদ্ধ করেছিল।
আসলে ইসরাইল নানা অজুহাতে কুদস শরিফকে মসুলমানদের হাত থেকে পুরোপুরি বের করে আনার জন্যই আল-আকসা মসজিদকে সময় ও স্থানের ভিত্তিতে বিভক্ত করছে।
ইসরাইল এমন সময়ে ফিলিস্তিনে সম্প্রসারণকামীতা ও আধিপত্য জোরদার করেছে যখন বিশ্ববাসীর দৃষ্টি পড়ে আছে মূলত সিরিয়া আর ইরাকের তাকফিরি সন্ত্রাসীদের তৎপরতার ওপর। মূলত ফিলিস্তিনের দিক থেকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টিকে অন্যদিকে ব্যস্ত রাখার জন্যই পশ্চিমা মদদে তাকফিরি-ওয়াহাবি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সিরিয়া ও ইরাকের ময়দানে নামানো হয়েছে।
তাই এখন ইহুদিবাদীদের সন্ত্রাসের পাশাপাশি তাকফিরি সন্ত্রাসও মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় দুর্যোগে পরিণত হয়েছে।
দখলদার ইসরাইল বহু বছর থেকেই বায়তুল মোকাদ্দাস তথা জেরুজালেমকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ও রাজধানী করার ভয়ানক ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার এই ষড়যন্ত্র জোরদার হয়েছে মাত্র। তাই এ বিষয়ে বিশ্ব সমাজকে অতীতের চেয়েও বেশি সতর্ক হতে হবে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ৪৭৮ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী বায়তুল মোকাদ্দাসে ইহুদিবাদীদের যে কোনো দখলদারিত্ব, আগ্রাসন ও ইসরাইলের সঙ্গে এর সংযুক্তি এবং কুদস পরিচালনায় ইসরাইলের যে কোনো হস্তেক্ষপ পুরাপুরি অবৈধ। একই প্রস্তাবে ইসরাইলের এ জাতীয় পদক্ষেপগুলো প্রতিরোধ করতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল।
কিন্তু বিশ্ব-সমাজ এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে উদাসীনতা দেখিয়ে আসছে। ফলে বর্ণবাদী ইসরাইল কোনো ভয়-ভীতি ছাড়াই খেয়াল-খুশিমতো কুদস শরিফ নিয়ে আরও বেশি হঠকারী ও বিপজ্জনক খেলায় মেতে উঠেছে। তাই এ বিষয়ে ফিলিস্তিন সরকারের প্রতিবাদ খুবই ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক। #