‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
বুধবার

১৫ মে ২০১৯

৬:৫৪:৩৩ AM
941520

বিবৃতি প্রদান করে, সৌদি আরবের আশ-শারক অঞ্চলের জনগণের বিরুদ্ধে আলে সৌদের দমননীতির নিন্দা জানিয়েছে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): পবিত্র রমজান মাসে সৌদি আরবের স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠী আলে সৌদ কর্তৃক এ দেশের শিয়া অধ্যুষিত আশ-শারক অঞ্চলের জনগণের উপর হামলার ঘটনায় বিবৃতি প্রদান করে নিন্দা জানিয়েছে আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা (মাজমা)।
বিবৃতির শুরুতে পবিত্র কুরআনের আয়াত উল্লেখ করে বলা হয়েছে,
«أن فرعون علا فی الارض وجعل ألها شیعا یستضعف طآیفة منهم یذبح أبناء هم ویستحی نساءهم إنه کان من المفسدین»
“ফেরাউন তার দেশে উদ্ধত হয়েছিল এবং সে দেশবাসীকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে তাদের একটি দলকে দূর্বল করে দিয়েছিল। সে তাদের পুত্র-সন্তানদেরকে হত্যা করত এবং নারীদেরকে জীবিত রাখত। নিশ্চয় সে ছিল ফাসাদ সৃষ্টিকারী”। (সূরা ক্বাসাস : ৪)
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সৌদি আরবের শারক অঞ্চলের নিরীহ ও অসহায় জনগণের ন্যূনতম নাগরিক অধিকারের দাবীতে তোলা আওয়াজ স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য সহিংস দমন-পীড়ন ও জনগণের নিরাপত্তা বিরোধী পদক্ষেপ নতুন কিছু নয়। এর ধারাবাহিকতায় জল্লাদ ও রক্তপিপাষু আলে সৌদ পবিত্র এ রমজান মাসে কাতিফ প্রদেশের শিয়া অধ্যুষিত বিশেষ করে আস-সানাবেস ও তারুত এলাকার রোজাদার মানুষগুলোর উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। যার নেতৃত্বে ছিল সৌদি সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
কথিত দূর্বৃত্ত ও সন্ত্রাসীদেরকে আটকের অজুহাতে তারা এ অভিযান চালিয়েছে বলে শাসক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে । এ হামলার আওতায় ছিল বিভিন্ন মসজিদ, ইমামবাড়ি ও সাধারণ মানুষের বাড়ি-ঘর। এছাড়া হামলায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নিরীহ রোজাদার শহীদ এবং আহত হয়েছে।
আলে সৌদের পোষ্য সৈন্যরা মানবতা বিরোধী ও ন্যাক্কারজনক এ পদক্ষেপের কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে জানিয়েছে, ‘একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আটকের জন্য এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে’।
তারা এদেশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসরত মুসলমানদেরকে সৌদি আরবের নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলেও চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন বার্তা সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, আলে সৌদের পোষ্য সৈন্যরা সম্প্রতি পরিচালিত এ অভিযানে সাধারণ জনগণের বাড়ীঘর ভেঙ্গে দেয়ার জন্য বুলডোজার ব্যবহার করেছে। এছাড়া তারা ক্ষেপণাস্ত্র ও গুলি চালিয়ে সাধারণ মানুষ বিশেষতঃ নারী ও শিশুদের মাঝে ত্রাস সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতির অপর অংশে উল্লেখ করা হয়েছে, গণজাগরণ ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কর্তৃক বারংবার আলে সৌদকে ব্যাঙ্গ ও তাদের উপর চাপ প্রয়োগের পর এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া সাধারণ জনগণের মাঝে ভয়-ভীতি বলবত রাখার বিষয়টিও ছিল তাদের এ অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য। স্বৈরাচারী এ শাসক গোষ্ঠী, উপযুক্ত কোন ব্যাখ্যা না দিয়েই প্রতিনিয়ত শিয়া অঞ্চলগুলোতে এ ধরনের সহিংস ও নৃশংস আভিযান পরিচালনা করে।
একইভাবে তারা অবৈধ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মাধ্যমে নাগরিক অধিকার আদায়ের দাবী এবং মাযহাবগত সাম্প্রদায়িকতা দূরীকরণে এ সকল অঞ্চলের শিয়াদের যে কোন প্রকার মুভমেন্টকে অঙ্কুরেই নষ্ট করে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে।
ইয়েমেনের উপর আগ্রাসনে অবমাননাকর পরাজয়ের স্বাদ গ্রহণের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইনগত এবং রাজনৈতিক মূল্য হাত ছাড়া করেছে আলে সৌদ। এখন নিজের দেশের জনগণের ন্যায্য দাবীকে ইরানের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত করার পায়তারা করছে। আর এক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও মিডিয়া শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা এ বিষয়টি উপস্থাপনের চেষ্টা করছে যে, ইরান তাদের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। আর তাই আত্মরক্ষার্থে এ ধরনের নীতি অবলম্বনে বাধ্য হয়েছে তারা।
বিবৃতির শেষাংশে উল্লেখ করা হয়েছে, আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থা (মাজমা), সোশ্যাল এক্টিভিস্ট ও আহলে বাইত (আ.) এর অনুসারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরসহ অন্যান্য বিষয়ে আলে সৌদের এহেন দমন এবং মূর্খতাপূর্ণ নীতির নিন্দা জানায়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সমাজ বিশেষতঃ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সকল রাজনৈতিক দল ও নেতা এবং বিশ্বের মুক্তিকামী আইনবিষারদদের প্রতি আহবান জানায় যাতে তারাও যেন মানবতা বিরোধী এ পদক্ষেপের নিন্দা জানান এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পদদলিত অধিকারের আদায়ের প্রতি সমর্থন ও এ ধরনের পদক্ষেপের সাথে জড়িতদেরকে আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় তোলার জন্য সোচ্চার হন।
এছাড়া স্বৈরাচারী ও শাসক গোষ্ঠীকে সকল প্রকার বিধ্বংসী অস্ত্র এবং নির্যাতনে ব্যবহৃত হয় এমন সরঞ্জাম সরবরাহের পথ বন্ধ করার আহবান জানানো হয়েছে আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটির বিবৃতিতে।#