মেহের নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, গাজা ও লেবাননের দুর্বল পরিস্থিতি এবং পশ্চিম এশিয়াসহ সারা বিশ্বের বিশৃঙ্খল অবস্থার সুযোগে ইহুদিবাদী ইসরাইল দ্রুত সিরিয়ায় তাদের দখলদারিত্ব পাকাপোক্ত করছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিম সিরিয়ার কুনেইত্রা প্রদেশ অর্থাৎ গোলান উপত্যকা ইহুদিবাদী ইসরাইলের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তু। এই প্রতিবেদনে সিরিয়ায় ইসরাইলি দখলদারিত্বের কারণগুলো উল্লেখ করা হল:
সিরিয়ায় দ্রুত ইসরাইলি দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা
বাশার আল-আসাদের সরকার পতনের কয়েক ঘন্টা পর, ইসরাইল গোলান উপত্যকার বাফার জোনে তাদের সৈন্য পাঠায়, যার বেশিরভাগই ১৯৬৭ সাল থেকে তারা দখল করে রেখেছিল এবং এরপর ঘোষণা করে যে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত সিরিয়ার সাথে উত্তেজনা কমানো সংক্রান্ত চুক্তি বাতিল করা হলো। ভেঙে দেওয়া সিরিয়ার সেনাবাহিনী হারমন পর্বত থেকে সরে যাওয়ার পরপরই, দখলদার বাহিনী সিরিয়ার হারমন পর্বতে তাদের সামরিক অবস্থান শক্তিশালী করে এবং অধিকৃত গোলানের সাথে দীর্ঘ ৭৬ কিলোমিটার সীমান্তবর্তীর প্রায় ৪ কিলোমিটার গভীরে প্রবেশ করে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, কুনেইত্রায় ইসরাইলের আগ্রাসন এবং দখলদারিত্ব সম্পর্কে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সিরিয়ার নাগরিকরা ইসরাইলি দখলদারিত্ব সত্ত্বেও শাসক "আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি"-এর সন্দেহজনক নীরবতার অভিযোগ করেছে। তারা বলেছে, ইসরাইলি সৈন্যরা সমস্ত সিরিয়ানদের অস্ত্র কেড়ে নিয়েছে এবং কুনেইত্রায় যা ইচ্ছা তাই করছে।
কুনেইত্রায় দখলদারদের বর্বরতা
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে যে ইসরাইলি বাহিনী গভর্নরের অফিসের বাইরের কিছু ভবন ভেঙে দিয়েছে, বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, গাছ উপড়ে ফেলেছে এবং গভর্নরের অফিসের যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ইসরাইলি আগ্রাসন ও দখলদারিত্বের ফলে কুনেইত্রা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ চিত্র বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসে পরিপূর্ণ, এবং দখলদার ইসরাইলের সৈন্যরা গভর্নরের আসবাবপত্র, টেবিল, জানালার কাচ এবং সমস্ত সরঞ্জাম ভেঙে ফেলে ভবনের দেয়ালে হিব্রু ভাষায় কিছু লিখে দেয়।
জোলানি সরকারের সন্দেহজনক নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে সিরিয়ার নাগরিকরা অবরুদ্ধ
জোলানি এখনও মৌখিকভাবে হলেও কুনেইত্রা এবং সিরিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে ইসরাইলি আগ্রাসন এবং দখলদারিত্বের নিন্দা করেনি। এই প্রসঙ্গে, কুনেইত্রা প্রাদেশিক পরিষদের প্রধান বলেছেন যে নতুন সিরিয়ান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী কুনেইত্রার বিশাল এলাকায় উপস্থিত রয়েছে; কিন্তু তারা ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে চলছে।
সিরিয়ার জনগণের সম্পদ ইসরাইলের দখলে
দুধ এবং পনিরের জন্য পশুপালনের কারণে কুনেইত্রা দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ার দুগ্ধ বাজার হিসেবে পরিচিত। কুনেইত্রা একটি কৌশলগত এলাকা যেখানে বিশাল খোলা জায়গা রয়েছে যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বিশাল বায়ু টারবাইন তৈরি করা যায় যা কিনা দখলিকৃত গোলানেও ইসরাইল নিজেদের জন্য তৈরি করেছে। এই অঞ্চলে সামরিক আগ্রাসনের পাশাপাশি দখলদার ইসরাইল প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠন করছে এবং কুনেইত্রায় নিজেদের ক্ষমতা জোরদারের কাজে লাগাচ্ছে। যদিও আন্তর্জাতিক সমাজ এই ইসরাইলি আগ্রাসন মোকাবেলায় কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না, অন্যদিকে সন্ত্রাসী জোলানি সরকার ইসরাইলের এই লুণ্ঠন কেবল তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে।#
342/
Your Comment