২৫ এপ্রিল ২০২৫ - ২৩:১৩
Source: Parstoday
সংকটের দ্বারপ্রান্তে ব্রিটেন; সরকার কি কর বাড়াবে নাকি সরকারি পরিষেবা কমাবে?

পার্সটুডে- ব্রিটেনের সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, আর্থিক বছরের শেষে ব্রিটিশ সরকারের বাজেট ঘাটতি ১৫১.৯ বিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছেছে যা দেশটির জন্য উদ্বেগজনক। ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট ঘাটতিগুলোর একটি হলো এটি। এই ঘাটতি কর বৃদ্ধি এবং ব্যয় নিয়ন্ত্রণের জন্য কিয়ার স্টারমার সরকারের উপর নতুন চাপও তৈরি করেছে।

বার্তা সংস্থা ইরনা'র বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানাচ্ছে, ব্রিটেনের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস ঘোষণা করেছে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ১২ মাসে সরকারি রাজস্ব এবং ব্যয়ের মধ্যে ব্যবধান গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ বিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি এবং পরিকল্পনা ও বাজেট দপ্তর বা ওবিআর'র গত মাসের পূর্বাভাসের চেয়ে তা ১০ শতাংশ বেশি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যদি এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে সরকার হয় করের হার বাড়াতে বাধ্য হবে অথবা জনসেবামূলক তৎপরতা সীমিত করতে বাধ্য হবে; উভয় পথই  স্টারমার সরকারের জন্য বড় ধরণের রাজনৈতিক চাপ তৈরি করবে। ইতিমধ্যে বেসরকারি খাতের অর্থনৈতিক অবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে বিবেচিত পিএমআইতেও উদ্বেগজনক প্রবণতা দেখা দিয়েছে।

এসএন্ডপি গ্লোবাল সংস্থার মূল্যায়নে দেখা যাচ্ছে, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাজ্যের উৎপাদন ও পরিষেবা কার্যকলাপের সম্মিলিত সূচক ৪৮.২-এ নেমে এসেছে। এই সূচকটি কেবল প্রবৃদ্ধির সীমার (৫০) নিচেই নয় বরং গত ২৯ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন, যা অর্থনৈতিক কার্যকলাপে পতন এবং যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যৎ অর্থনীতির প্রতি কোম্পানিগুলোর আস্থা হ্রাসের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

স্টারমার সরকার অর্থ সংগ্রহের জন্য নতুন উৎসের সন্ধান করছে

পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ব্রিটিশ সরকারের বর্তমান বাজেটও পূর্বাভাসের চেয়ে প্রায় ১৪ বিলিয়ন পাউন্ড বেশি অর্থাৎ এটি ৭৪.৬ বিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছেছে। ব্রিটেনের পরিকল্পনা ও বাজেট অফিস ঘোষণা করেছে, খরচ মেটাতে তারা আগামী বছর বন্ড ইস্যুর পরিমাণ ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বৃদ্ধি করবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ'র সর্বশেষ প্রতিবেদনে, ২০২৫ সালের জন্য ব্রিটেনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১.৬ থেকে কমিয়ে ১.১ শতাংশ করেছে। আইএমএফ দেশটিকে বিশ্বব্যাপী ঋণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সামগ্রিকভাবে হঠাৎ করে বাজেট ঘাটতি বৃদ্ধি এবং বেসরকারি খাতের তৎপরতা ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় ব্রিটিশ সরকার একটি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে। যদিও ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী নানা উপায়ে ঋণ হ্রাসের পথ প্রশস্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে, মুদ্রাস্ফীতি যখন বেশি মাত্রায় এবং অর্থনৈতিক মন্দাও বাড়ছে তখন কর বৃদ্ধি বা সরকারি পরিষেবা কমানোর চাপ সরকারের জনপ্রিয়তাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার যদি বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হয় তাহলে এই সরকার বৈধতার সংকটে পড়বে এবং একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হবে।#

342/

Your Comment

You are replying to: .
captcha