২৬ আগস্ট ২০২৫ - ২১:৫১
৫ সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় বিশ্ব নেতাদের প্রতিক্রিয়া

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিসের আল-নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কাজ করা পাঁচজন সাংবাদিক।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): গাজার নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় ৫ সাংবাদিকসহ ২০ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় বিশ্ব নেতা ও সাংবাদিক সংগঠনগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।



কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস

৫ সাংবাদিক নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে।  ইসরায়েলকে অবৈধভাবে বারবার সংবাদমাধ্যমকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য জবাবদিহিতার আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

প্যালেস্টিনিয়ান জার্নালিস্টস সিন্ডিকেট

এই হামলা বিন্দুমাত্র সন্দেহ ছাড়াই প্রমাণ করে যে দখলদার বাহিনী মুক্ত সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে উন্মুক্ত যুদ্ধ চালাচ্ছে। সাংবাদিকদের ভয় দেখানো এবং তাদেরকে অপরাধগুলো বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার পেশাদার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখাই ইসরায়েলের লক্ষ্য বলেও উল্লেখ করেছে সিন্ডিকেট।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

‘কখন এই ঘটনা ঘটেছে?’

‘আমি জানতাম না। আমি এতে খুশি নই। আমি এটা দেখতে চাই না। একই সময়ে,আমাদের পুরো দুঃস্বপ্নটা শেষ করতে হবে।’

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ

বেসামরিক নাগরিক এবং সাংবাদিকদের অবশ্যই সব পরিস্থিতিতে সুরক্ষিত রাখতে হবে। সংঘাতের বাস্তবতা বিশ্বকে জানাতে গণমাধ্যমকে অবশ্যই স্বাধীনভাবে এবং মুক্তভাবে তাদের মিশন সম্পাদন করতে সক্ষম হতে হবে।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে যে, দখলদার বাহিনী সাংবাদিক,ত্রাণকর্মী ও চিকিৎসাকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করায় বেসামরিক নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা প্রদানে দ্রুত ও কঠোর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।  এই নৃশংসতার জন্য দায়ীরা যেন কোনোভাবেই শাস্তি এড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক

গাজার খান ইউনিসে নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনিদের হত্যার ঘটনাকে কঠোরভাবে নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব। তিনি দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

মার্কিন সিনেটর জিন শাহিন, সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটি

‘ব্যক্তিগতভাবে আমি গাজায় বোমাবর্ষণ এবং সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত। আমি মনে করি এটি এখনই শেষ হওয়া প্রয়োজন।’

জেরোম গ্রিমো, এমএসএফ জরুরি সমন্বয়কারী, গাজা

‘গত ২২ মাস ধরে আমরা দেখছি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিকদের নিশ্চুপ করা হচ্ছে এবং চিকিৎসাকর্মীরা ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ছে। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইনকে উপেক্ষা করতে থাকায় তাদের গণহত্যামূলক অভিযানের একমাত্র সাক্ষীরা-সাংবাদিকরা ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে।

রাভিনা শামদাসানি, জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের প্রধান মুখপাত্র

‘গাজায় সাংবাদিক হত্যাকাণ্ড বিশ্বকে স্তব্ধ নীরবতায় নয়-কর্মে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য করা উচিত। জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার দাবি করতে হবে।’

ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস

‘যখন মানুষ গাজায় অনাহারে মরছে,তাদের সীমিত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগও বারবার হামলার মাধ্যমে ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

আমরা এটি যথেষ্ট জোর দিয়ে বলতে পারছি না: স্বাস্থ্যসেবার ওপর হামলা বন্ধ করুন। এখনই যুদ্ধবিরতি দিন!’

ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি

‘শেষ অবশিষ্ট কণ্ঠগুলো—যারা শিশুদের নীরবে মৃত্যুবরণ ও দুর্ভিক্ষের কথা বিশ্ববাসীর উদাসীনতা ও নিষ্ক্রিয়তার মধ্যে রিপোর্ট করছে—তাদের নিশ্চুপ করে দেওয়া অত্যন্ত ভয়াবহ। চলুন আমরা এই মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ শেষ করি। এখন রাজনৈতিক সদিচ্ছার সময়। আগামীকাল নয়,এখনই।’

জেরুজালেম-ভিত্তিক ফরেন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন

‘আমরা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের কাছ থেকে অবিলম্বে ব্যাখ্যা দাবি করছি। আমরা ইসরায়েলকে আহ্বান জানাচ্ছি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করার ঘৃণ্য প্রথা একবারেই বন্ধ করতে।

আমরা আন্তর্জাতিক নেতাদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আপনারা আমাদের সহকর্মীদের রক্ষা করতে যা করার আছে সব করুন। আমরা নিজেরা এটি করতে পারব না।’

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha