আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ৪৪টি দেশের ৭০টিরও বেশি জাহাজ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে ‘সুমুদ’। ফ্লোটিলার উদ্দেশ্য গাজার অবরুদ্ধ জনগণের কাছে মানবিক সহায়তা, খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়া।
এতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন, মানবাধিকারকর্মী, পরিবেশকর্মী, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নিয়েছেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ৪ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে আরও কয়েক ডজন জাহাজ এই অভিযানে যুক্ত হবে।
ফ্লোটিলার জাহাজগুলো বার্সেলোনা, জেনোয়া, তিউনিস এবং গ্রিস থেকে রওনা হয়েছে। যাত্রার শুরুতে স্পেনের বার্সেলোনার বন্দরে হাজারো মানুষ বিদায় জানাতে জড়ো হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, বহরটি তিউনিসিয়া, লিবিয়া ও মিশরের আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করে সেপ্টেম্বরের মধ্যভাগে গাজায় পৌঁছাবে। তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ফ্লোটিলা গাজার উপকূলে পৌঁছালে অংশগ্রহণকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
মেহের নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের দ্য আর্টিস্টিক সেক্টরের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালক ও ফ্লোটিলার সদস্য আগাজানি বলেন, 'সুমুদ হলো তৃতীয় তৃণমূল পর্যায়ের ফ্লোটিলা, যা সমুদ্রপথে গাজার অবরোধ ভাঙতে উদ্যোগ নিচ্ছে এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরছে।'
তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, এর আগে মাদলিন নামের একটি জাহাজ ইতালি ও মালির মাঝামাঝি স্থানে ইসরায়েলি ড্রোন হামলার শিকার হয়েছিল। অন্যদিকে, হান্দালা জাহাজটি ফিলিস্তিনি জলসীমায় প্রবেশ করার পর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১২ জন আটক হন এবং পরে বহিষ্কৃত হন।
আগাজানি বলেন, গাজার নারী-শিশুদের রক্ষায় অবরোধ ভাঙার একমাত্র পথ তৃণমূলের এই ধরনের আন্দোলন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, এবার ডজনখানেক জাহাজ একত্রিত করা হয়েছে, যা অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য ও ওষুধ গাজায় পৌঁছে দেবে।
ইউরোপজুড়ে অংশগ্রহণকারীরা বার্সেলোনায় যুক্ত হয়েছেন এবং এরপর তিউনিসিয়ার পথে রওনা হয়েছেন। আফ্রিকা, এশিয়া ও আমেরিকা থেকেও কর্মীরা এই অভিযানে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
‘সুমুদ’ শব্দের অর্থ ‘অটলতা’। আগাজানি জানান, প্রতিদিন নতুন মানুষ এই উদ্যোগে যুক্ত হচ্ছেন। তার কথায়, 'হলিউডের অভিনেতা থেকে শুরু করে সামাজিক কর্মী— সবাই একত্রিত হচ্ছেন এবং দখলকৃত ফিলিস্তিনের উদ্দেশে যাত্রা করছেন।'
তিনি আরও যোগ করেন, স্বেচ্ছাসেবকদের ইসরায়েলের সম্ভাব্য বাধা বা সরাসরি হামলা মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। 'আমরা প্রতিরোধে প্রস্তুত এবং গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করব।'
শেষে আগাজানি জোর দিয়ে বলেন, 'সুমুদ একটি সম্পূর্ণ তৃণমূল ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। মুসলিম ও অমুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ এতে অংশ নিচ্ছেন। সবাই প্রকাশ্যে ঘোষণা করছেন— আমরা ইসরায়েলি হুমকিকে ভয় করি না।
গাজার মানুষের জীবন যখন ঝুঁকির মুখে, তখন আমাদের আরামদায়ক জীবনযাপন করার অধিকার নেই।'
Your Comment