২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ০৮:২৩
সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি গাজা শহর ছেড়েছে।

গাজা শহরে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) ব্যাপক হামলার মুখে এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে বাস্তচ্যুত হয়েছেন।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): শনিবার এক  প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরাইল। হামলা শুরুর আগে গাজা নগরীতে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনি বসবাস করছিল বলে ধারণা করা হয়। হামলার প্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষকে দক্ষিণ গাজার আল মাওয়াসি এলাকায় নির্ধারিত মানবিক অঞ্চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইল।



গত সপ্তাহে গাজা শহর থেকে মানুষের সরে যাওয়ার হার আরও বেড়েছে। কারণ আইডিএফ শহরের ভেতরের আরও গভীরে প্রবেশ করেছে। আইডিএফের আরবি ভাষার মুখপাত্র কর্নেল আভিখাই আদ্রেয়ি বলেন, গাজা নগরী প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

কারণ এর বাসিন্দারা বুঝতে পারছেন যে সামরিক অভিযান আরও তীব্র হচ্ছে এবং দক্ষিণে সরে যাওয়াই তাদের নিরাপত্তার জন্য উত্তম।

  শনিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গত দুই বছরে মোট নিহতের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৪৯ জনে এবং আহতের সংখ্যা ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫১৮ জনে পৌঁছেছে।

এছাড়া গত ২৭ মে থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। শনিবার ত্রাণ নিতে গিয়ে ৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। 


গাজায় এমএসএফের জরুরি সমন্বয়কারী জ্যাকব গ্রেঞ্জার বলেছেন, ইসরাইলি বাহিনী আমাদের ক্লিনিকগুলোকে ঘিরে রাখায় আমাদের কার্যক্রম বন্ধ করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। তিনি আরও বলেন, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।

গাজা সিটিতে চিকিৎসার চাহিদা বিপুল। যেখানে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের মধ্যে নবজাতক, মারাত্মক আহত ও গুরুতর অসুস্থ রোগীরা স্থানচ্যুত হতে অক্ষম। তারা চরম বিপদের মধ্যে রয়েছেন।

হামাস কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত একটি উদ্ধারকারী বাহিনী জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ১৪০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।

এদিকে অধিকৃত পশ্চিমতীরে ইসরাইলের অবৈধ বসতি স্থাপন কার্যক্রম থেকে লাভবান হচ্ছে ১৫০টিরও বেশি কোম্পানি। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে এয়ারবিএনবি, বুকিং ডটকম, এক্সপিডিয়া এবং ট্রিপঅ্যাডভাইজরও রয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় তাদের ডাটাবেজ হালনাগাদ করেছে, যেখানে ১৫৮টি কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যারা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত বসতিগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসে পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ লাভের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে ফিলিস্তিন। তবে এখন পর্যন্ত জোটের পক্ষ থেকে কোনো উত্তর আসেনি।

ফলে আপাতত অতিথি দেশ হিসেবেই জোট সম্মেলনে অংশ নেবে ফিলিস্তিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, রাশিয়ায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত আবদেল হাফিজ নোফাল। রুশ সংবাদমাধ্যম আরআইএকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত নোফাল বলেন, ফিলিস্তিন আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দিয়েছে।

গত  মঙ্গলবার ৮ মুসলিম ও আরব দেশের নেতা ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। সেই বৈঠকের বিষয়ে শনিবার ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, গাজা প্রসঙ্গে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে অত্যন্ত অনুপ্রেরণামূলক ও ফলপ্রসূ আলোচনা করছি বলে জানাতে পেরে আনন্দিত।  টানা চারদিন ধরে তীব্র আলোচনা চলছে এবং সফল চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha