আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য জড়ো হওয়া বিশ্বনেতাদের সামনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মুখে ছিল কেবলই প্রশংসাবাণী।
সে প্রশংসা করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। উপাধি দেয় ‘শান্তির দূত’। নোবেল শান্তি পুরস্কারে মনোনয়নের কথাও স্মরণ করে। ধন্যবাদ দেয় পারমাণবিক শক্তিধর ভারতের সঙ্গে সংঘাত বন্ধের জন্য।
শাহবাজ শরিফ যখন এমন প্রশংসা করছিলে, তখন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বেশ আত্মতৃপ্ত মনে হচ্ছিল। পেছনে অন্য দেশের নেতারা স্থির দাঁড়িয়ে ছিলেন। কারও কারও হতবাক চেহারায় অবিশ্বাস প্রকাশ পাচ্ছিল। করতালির সময়ও তারা দ্বিধান্বিত ছিলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে স্বীকৃতি ও প্রশংসা বেশ গুরুত্ব পায়। ফলে শাহবাজ শরিফের কথাগুলো তার কাছে উদ্দীপনামূলক ছিল বলেই ধরে নেওয়া যায়।
ট্রাম্পীয় কূটনীতির মঞ্চে চাটুকারিতা কোনো প্রতারণা নয়, বরং একধরনের মুদ্রা। নীতিনির্ধারণের কোনো অনুচ্ছেদের চেয়ে অতিরঞ্জিত প্রশংসা অনেক বেশি সদিচ্ছা কিনে দিতে পারে।

রাজনৈতিক মনোবিজ্ঞানীরা এটিকে বলেন ‘নার্সিসিস্টিক রিওয়ার্ড লুপ’। এটি এমন এক মানসিক প্রতিক্রিয়ার চক্র, যেখানে আপনি বাস্তবতা তুলে ধরার বদলে শুধু প্রশংসা করে সহযোগিতা আদায় করতে পারেন।
সম্মেলনে শাহবাজ শরিফ ঠিকই তার লক্ষ্যের জায়গায় সফল হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। অন্য বিশ্ব নেতারা যেখানে এমন ভাষণকে কূটনীতির ভুল পদ্ধতি হিসেবে মূল্যায়ন করছিলেন, সেখানে ট্রাম্প কারও আনুগত্যের প্রতিধ্বনি শুনছিল।
শাহবাজ শরিফের প্রশংসার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়াও যে রাষ্ট্রনায়কের মতো ছিল তা নয়; তাকে প্রশংসায় ভাসা এক তারকার মতো দেখাচ্ছিল—সে হাসল, রসিকতা করল ও ইঙ্গিত দিল।
সম্মেলনে শাহবাজ শরিফ যে ভাষণ দিয়েছে তা গাজার মানুষের ভাগ্য ও সংস্কারে কোনো বদল আনবে না। কিন্তু বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন ব্যাকরণ হয়ে থাকবে—যেখানে অযৌক্তিক কথাও কার্যকর হয়, ভুল পদক্ষেপ হয় গণমাধ্যমের মনোযোগ আকর্ষণের কৌশল।
Your Comment