২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১২:৩১
ইসরায়েল: লেবানন-সিরিয়া-গাজা-ইয়েমেনে সামরিক অভিযান চলবে

মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে আন্তর্জাতিক মহলের নানামুখী কূটনৈতিক তৎপরতা ও মধ্যস্থতা চললেও লেবানন, সিরিয়া, গাজা ও ইয়েমেনে সামরিক অভিযান বন্ধ না করার কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, আঞ্চলিক উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এই চার অঞ্চলে তাদের সামরিক কার্যক্রম পূর্ণ শক্তিতে চলবে।




ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর পাইলটদের একটি প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে কাটজ এসব কথা বলে। 


ওই অনুষ্ঠানে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সেনাপ্রধান এয়াল জামিরও উপস্থিত ছিল। প্রতিরক্ষা দপ্তরের এই অবস্থান থেকে এটি স্পষ্ট যে, অদূর ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত থামার কোনো সম্ভাবনা দেখছে না ইহুদিবাদী এই দেশটি।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘মারিভ’-এর বরাত দিয়ে আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ তার বক্তব্যে প্রতিটি ফ্রন্টের জন্য পৃথক কৌশলগত লক্ষ্য পুনর্ব্যক্ত করেছে। সে বলে, লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ অব্যাহত রাখা হবে এবং সিরিয়ার জাবাল আল-শেইখ বা মাউন্ট হারমোন ও নিরাপত্তা অঞ্চল থেকে ইসরায়েলি বাহিনী কোনোভাবেই সরে আসবে না। 

গাজা প্রসঙ্গে সে আবারও হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল করা এবং এলাকাটিকে নিরস্ত্রীকরণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে। এ ছাড়াও ইয়েমেনের হুথিরা যাতে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে না পারে, সেজন্য সেখানেও ইসরায়েলের অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি ঘোষণা দেয়।

ইরান ইস্যুতে কথা বলতে গিয়ে ইসরায়েল কাটজ এক চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে।  জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে চালানো হামলায় ইরানের পারমাণবিক ও কৌশলগত সক্ষমতার অপূরণীয় ক্ষতি করা হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ইরানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে সে বলে, কৌশলগত কারণে হামলার বিস্তারিত তথ্য এই মুহূর্তে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। 

তবে ইরানের পারমাণবিক স্বপ্ন নস্যাৎ করতে ইসরায়েল যে সফল হয়েছে, সেই দাবিই সে তার বক্তব্যে তুলে ধরে। যদিও ইরান বা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা এখন পর্যন্ত এই বিশাল ক্ষয়ক্ষতির দাবি নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

উল্লেখ্য যে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৭১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই আগ্রাসনের ফলে সৃষ্ট আঞ্চলিক উত্তেজনায় ইসরায়েল লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুথিদের সঙ্গে ভয়াবহ পাল্টাপাল্টি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। 

চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ইরানের সঙ্গেও ইসরায়েলের সরাসরি যুদ্ধ শুরু হলেও পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। সিরিয়ার অভ্যন্তরেও গত এক বছরে শত শত বিমান হামলা চালিয়ে সামরিক স্থাপনা ধ্বংসের পাশাপাশি অসংখ্য বেসামরিক প্রাণহানি ঘটিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha