আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): এলাকাটি সিরিয়া সীমান্তের অত্যন্ত কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় একে কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু হিসেবে দাবি করেছে ইসরায়েল। এ ছাড়া দক্ষিণ লেবাননের মাজদাল সেলম এলাকায় পরিচালিত অন্য একটি অভিযানে আরও ১ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও লেবাননের আকাশ ও স্থলপথে ইসরায়েলি সামরিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে যে, তারা ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিশেষ শাখা কুদস ফোর্সের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হুসেইন মাহমুদ মারশাদ আল-জাওহারিকে এই হামলায় হত্যা করতে সক্ষম হয়েছে।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী, আল-জাওহারি লেবানন ও সিরিয়া থেকে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা ও পরিচালনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন।
পাশাপাশি মাজদাল সেলমের অভিযানে হিজবুল্লাহর একজন সক্রিয় সদস্যকেও তারা হত্যা করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী উভয় পক্ষের শান্ত থাকার কথা ছিল, তবে ইসরায়েল বর্তমানে কৌশলগত দোহাই দিয়ে লেবাননের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তাদের সেনা মোতায়েন করে রেখেছে।
এদিকে লেবানন সরকার আন্তর্জাতিক চাপ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ এড়াতে দক্ষিণ লেবানন থেকে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। লেবাননের সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে, ইসরায়েল সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার ভেতরে লিতানি নদীর দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণ কার্যক্রম বছরের শেষ নাগাদ সম্পন্ন করার একটি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
তবে এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই ইসরায়েল পাল্টা অভিযোগ তুলেছে যে, হিজবুল্লাহ গোপনে পুনরায় ভারী অস্ত্র সংগ্রহ করছে এবং সীমান্ত এলাকায় তাদের তৎপরতা বাড়িয়েছে। অন্যদিকে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে এখনই তাদের সকল অস্ত্র জমা দেওয়ার আহ্বান সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, যা দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের আশঙ্কা জাগিয়ে রাখছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নভেম্বর মাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় দেশটিতে ৩৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। চুক্তির শর্ত ভঙ্গের এই ধারাবাহিকতায় লেবাননের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা শক্তিগুলো সংঘাত নিরসনে কাজ করার কথা বললেও মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিতিশীল পরিবেশে লেবাননের সার্বভৌমত্ব এবং সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এখন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
Your Comment