‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
বুধবার

৪ আগস্ট ২০২১

৮:২৮:৪২ AM
1166351

উত্তর প্রদেশে আশুরায় সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ

ভারতের বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশ সরকার ১০ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া আশুরা (মহররম) সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করেছে। সরকারের জারি করা নির্দেশিকা নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : নির্দেশনায় মুসলিম সম্প্রদায়ের  মানুষের মধ্যে তিক্ততা ও বিভেদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রাজ্য সরকারের জারি করা নির্দেশিকা খসড়ার প্রতিবাদে শিয়া মুসলিম সম্প্রদায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। শিয়া ধর্মীয় নেতারা মহররম সংক্রান্ত জারি করা নির্দেশিকা খসড়া অবিলম্বে পরিবর্তন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।    

আগামী ১০ আগস্ট থেকে ইসলামিক ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস মহররম শুরু হচ্ছে। ইসলামে মহররম মাস শিয়া ও সুন্নি উভয়ের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

উত্তরপ্রদেশের পুলিশ মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে মহররম সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী কোভিডের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যে মহররমের মিছিলের  অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুলিশের ডিজি বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের ওই বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশ, ডিজিপি পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দিয়েছেন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে, সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা চেক করতে।  

পুলিশের জারি করা খসড়া নির্দেশিকায়,  মুসলিম সম্প্রদায়ের শিয়া এবং সুন্নিদের মধ্যে ফাটল তৈরির চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। নির্দেশিকাগুলোতে শিয়া সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মহররমের ধর্মীয় বিদ্বেষ প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সরকারের জারি করা নির্দেশিকা খসড়ায় বলা হয়েছে, মহররম উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা যা পাঠ করেন সেজন্য সুন্নি সম্প্রদায় তীব্র আপত্তি প্রকাশ করা হয়। গাইডলাইনের খসড়ায় আরও বলা হয়েছে যে, শিয়া গোষ্ঠীর অসামাজিক উপাদানের দ্বারা পাবলিক প্লেস, ঘুড়ি ও  বিপথগামী পশুর উপরে বিদ্বেষপূর্ণ লেখা শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে শত্রুতা তৈরি করে, যা বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে। 

এ ছাড়া, মহরমের নির্দেশিকা খসড়ায়, মুসলিমদের সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে ফাটল তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। খসড়ায় বলা হয়েছে যে, দেওবন্দি/আহলে হাদিস ফিরকার মুসলিমরা মহরম মাসে মুসলিম সম্প্রদায়ের শিয়া ও সুন্নি সদস্যদের দ্বারা প্রকাশিত শোক ও তাজিয়াদারির বিরোধিতা করে, যার ফলে একটি অতিস্পর্শকাতর বিষয় সৃষ্টি হয়। 

এ প্রসঙ্গে শিয়া ধর্মগুরু ড. কালবে সিবতেন নূরী বলেছেন, এই নির্দেশিকার খসড়া অবিলম্বে পরিবর্তন করা উচিত। তিনি বলেন, মহরম এখনও শুরু হয়নি এবং আমাদের অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে, কে এ ধরনের খসড়া তৈরি করেছে তা সরকারের তদন্ত করা উচিত।     

কংগ্রেস নেতা সাদফ জাফরও পুলিশের নির্দেশিকা খসড়ায় পরিবর্তন আনার দাবি জানিয়ে বলেছেন, মহরমের জুলুস নিয়ে শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে। বিজেপি সরকার যারা কেবলমাত্র বিভাজনের ভিত্তিতে ক্ষমতায় এসেছিল এবং তারা এভাবে  ক্ষমতায় থাকতে চায়। তিনি বলেন, ওই নির্দেশিকা শুধু শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করেনি, বরং সুফি, হানাফি, বেরেলভী এবং দেওবন্দি মতাদর্শের অনুসারীদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টাও স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়েছে। #

342/