‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
শুক্রবার

৩ ডিসেম্বর ২০২১

২:৫৭:৪৯ PM
1204707

ক্রমবর্ধমান দরিদ্রতা আফগানিস্তানে দায়েশের শক্তি বৃদ্ধির কারণ হতে পারে : আলামি বালখি

‘দায়েশ শক্তিশালী হচ্ছে কি না’ এমন প্রশ্নের জবাবে আফগানিস্তানের ওলামা পরিষদের সদস্য জানিয়েছেন: তারা কতটুকু উন্নতি করবে তা নির্ভর করছে তালেবান সরকারের কার্যক্রমের উপর এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সমাজের অবস্থানের উপর।

হলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): তালেবান কর্তৃক আফগানিস্তানের ক্ষমতা গ্রহণের পর সন্ত্রাসী বাহিনী দায়েশ দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে রক্তক্ষয়ী হামলা চালিয়েছে। ঐ সকল হামলায় শত শত ব্যক্তি হতাহত হয়েছে। অথচ তালেবান কর্মকর্তারা বারবার ঘোষণা করেছেন যে, আফগানিস্তানে দায়েশের উপস্থিতি নেই এবং তাদের পক্ষ থেকে গুরুতর কোন হুমকির মুখোমুখিও আফগানিস্তান নয়।

আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি যে প্রতিবেদন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দাখিল করেছেন তাতে তিনি দেশটির নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে লিখেছেন: দায়েশের খোরাসান শাখার যোদ্ধারা আফগানিস্তানের প্রায় ৩৪টি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এ দলটিকে দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে তালেবান।

আফগানিস্তানের পূর্ববর্তী সরকারের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী ও আফগানিস্তানের ওলামা পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট আফগানিস্তানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে করা প্রশ্নের জবাবে বলেন: আফগানিস্তানে দায়েশের সদস্য বৃদ্ধি ও তৎপরতা বিস্তারের জন্য সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে খুব একটা প্রস্তুত নয়। কারণ শিয়া এবং সুন্নি নির্বিশেষে আমাদের জনগণ সাধারণত মধ্যপন্থী। আফগান সমাজ একটি মধ্যপন্থী সমাজ এবং উগ্রতাকে গ্রহণ করে না। তবে কিছু কিছু দেশ নিজেদের স্বার্থে পৌঁছানোর লক্ষ্যে চেষ্টা চালায়, বিনিয়োগ করে এবং দায়েশের পক্ষে লোক জড়ো করার চেষ্টা করে।

আফগানিস্তানের সমস্ত প্রদেশে দায়েশ রয়েছে বলে দেশটিতে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধির মন্তব্যকে কিছুটা অতিরঞ্জিত বলে অভিহিত করে জনাব বালখি বলেন: "আফগানিস্তানে দায়েশ রয়েছে এটি সত্য কথা।তবে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি যে সংখ্যার কথা উল্লেখ করেছেন তা সঠিক নয়।"

‘দায়েশ শক্তিশালী হচ্ছে কি না’ এমন প্রশ্নের জবাবে আফগানিস্তানের ওলামা পরিষদের সদস্য জানিয়েছেন: তারা কতটুকু উন্নতি করবে তা নির্ভর করছে তালেবান সরকারের কার্যক্রমের এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সমাজের অবস্থানের উপর। যদি তারা তালেবান সরকারকে দূর্বল করার পথে হাটে তাহলে স্বাভাবিকভাবে দায়েশ দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠবে।

একইভাবে দায়েশের সাথে তালেবানের আচরণ কিরূপ হবে, তাদের দেশ পরিচালনার পদ্ধতি, তাদের সাথে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আচরণ এবং দায়েশ ও আফগান সরকারের বিষয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর অবস্থানও দায়েশের বিস্তার ও সদস্য বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সমস্ত ইসলামি মাযহাবের বিরোধী দায়েশ। তারা শুধুমাত্র শিয়াদের শত্রু নয়, বরং তারা সমস্ত মাযহাবের অনুসারীদেরকেই কাফের জ্ঞান করে অথবা তাদের সাথে যুদ্ধ করে। অবশ্য শিয়াদের বিরুদ্ধে তারা বেশী কঠোর, বিশেষ করে ইরাক ও সিরিয়াতে পরাজয়ের পর থেকে। এছাড়া শিয়াদের বিষয়ে তাদের মনে বিশেষ হিংসা ও শত্রুতাও রয়েছে।

তার মতে,  আফগানিস্তানে ব্যাপক আকারে দারিদ্র্য ছড়িয়ে পড়েছে, দেশটির মোট জনসংখ্যার শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি মানুষ বর্তমানে দারিদ্র্য কবলিত। আর এই দারিদ্র্য দায়েশের সদস্য সংগ্রহের সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র বিবেচিত হতে পারে।

প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসী বাহিনী দায়েশের খোরাসান শাখার সদস্যরা ২০১৪ সালের শেষের দিকে নিজেদের অস্তিত্বের ঘোষণা দেয়। বিগত বছরগুলোতে আফগানিস্তানের নাঙ্গারহারসহ দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে তারা সক্রিয় ছিল। তালেবান পূনরায় ক্ষমতা গ্রহণের পর দায়েশের হুমকি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত মাসগুলোতে বেশ কিছু গণজমায়েতের স্থানে বিশেষ করে কয়েকটি মসজিদে জুমআর নামাজ চলাকালীন সময় নৃশংস হামলা চালিয়েছে দায়েশ; সেগুলোর মধ্যে কান্দুয ও কান্দাহারের শিয়া মসজিদ উল্লেখযোগ্য। ঐ সকল হামলায় শত শত ব্যক্তি হতাহত হয়েছে। #176