‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : IRIB
সোমবার

১৪ ডিসেম্বর ২০১৫

৫:২৮:১৫ PM
724898

নাইজেরিয়ায় শিয়া মুসলিম হত্যাকাণ্ড: সন্দেহের তীর ইসরাইল ও আমেরিকার দিকে

নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কাদুনা রাজ্যের জনগণ জারিয়া শহরে নিরীহ শিয়া মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

আবনা ডেস্ক : নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কাদুনা রাজ্যের জনগণ জারিয়া শহরে নিরীহ শিয়া মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। বিক্ষোভকারী জনতা গতকাল(রবিবার) জারিয়া শহরে শিয়া মুসলিম হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে প্রভাবশালী শিয়া আলেম আয়াতুল্লাহ ইব্রাহিম আল-জাকজাকির প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছেন।
জারিয়া শহরে গতকাল সেনা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় শিয়া মুসলমানদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে বহু লোক হতাহত হয়। সেনাবাহিনী শিয়া আলেম আয়াতুল্লাহ ইব্রাহিম আল-জাকজাকির বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। আয়াতুল্লাহ ইব্রাহিম আল-জাকজাকির ব্যাপারে পরস্পর বিরোধী খবর পাওয়া যাচ্ছে। নাইজেরিয়ার ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র ইব্রাহিম মুসা বলেছেন, শিয়া নেতা জাকজাকির বাড়ি পুরো ধ্বংস করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। এ ছাড়া, এ আন্দোলনের উপ প্রধান ও নিরাপত্তা বিভাগের প্রধানকেও হত্যা করেছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। আটককৃত শিয়া নেতা জাকজাকিসহ তার পরিবারের অন্য সদস্যকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নাইজেরিয়ায় ইসলামী আন্দোলনের সমর্থকরা জারিয়া শহরে ‘হুসাইনিয়া বাকিয়াতুল্লায়’ একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত হয়েছিলেন। সমাবেশে মানুষের উপস্থিতি ধারনার চাইতেও বহুগুণে বেশি হয়েছিল। কিন্তু নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র সানি ওসমান দাবি করেছেন, সেনা প্রধান লে. জেনারেল তুকুর ইউসুফ বুরাতিয়ার গাড়িবহর হুসাইনিয়া অতিক্রম করার সময় জাকজাকির অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালালে সেনাবাহিনীও পাল্টা হামলা চালাতে বাধ্য হয়। সেনাবাহিনী আরো দাবি করেছে, ইসলামী আন্দোলনের সমর্থকরা সেনা প্রধানের গাড়ি বহর থামিয়ে দিয়ে সেনা প্রধানসহ অন্য কর্মকর্তাদের হত্যার চেষ্টা করেছিল।
তবে নাইজেরিয়া সেনাবাহিনীর এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র ইব্রাহিম মুসা বলেছেন, সেনাবাহিনী কোনো কারণ ছাড়াই শিয়া মুসলমানদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে এবং এ ঘটনায় বহু লোক হতাহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীসহ ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা সেনাবাহিনীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেনাবাহিনী এ জঘন্য হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে।
সেনা মুখপাত্র সানি ওসমান আরো দাবি করেছেন, সেনা প্রধানের রক্ষা করার দায়িত্ব সেনাবাহিনীর। এ অবস্থায় তার গাড়ি বহর রক্ষার জন্য হামলা চালানো ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তবে নাইজেরিয়ার বিশিষ্ট শিয়া আলেম মোহাম্মদ সালেস জারিয়া শহরে শিয়া মুসলমানদের ওপর সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে সেদেশের বিরুদ্ধে আমেরিকা ও ইসরাইলের ষড়যন্ত্রের ফসল বলে অভিহিত করেছেন। তিনি ইরানের আল আলম স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, ইমাম হোসেন(আ.)’র আরবাইন বা চল্লিশা পালন উপলক্ষে জারিয়া শহরে লাখ লাখ শিয়া মুসলমান সমবেত হলে পাশ্চাত্যের সমর্থনপুষ্ট সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। নাইজেরিয়ার এ শিয়া আলেম আরো বলেছেন, শিয়া মুসলমানদের শৃঙ্খলা, ঐক্য ও শক্তিতে ভীত হয়েই সেনাবাহিনী হামলা চালিয়েছে।
নাইজেরিয়ার জনগণ মনে করেন, জারিয়া শহরে সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ডের পেছনে অবশ্যই ইসরাইল ও আমেরিকার হাত রয়েছে। ইউসুফ হামজা নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, সারা বিশ্বের যেখানেই শিয়া মুসলমানদেরকে হত্যা করা হচ্ছে সেখানেই সন্দেহাতীতভাবে আমেরিকা ও ইসরাইলের হাত রয়েছে। #