বিখ্যাত রুশ লেখক অ্যালেগ রয়ের লেখা শহীদ জেনারেল হাজ্জ কাসেম সোলেইমানির জীবনের উপর ভিত্তি করে লেখা রুশ উপন্যাস "জ্যাকলস আর নো ম্যাচ ফর লায়ন্স"-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান আগামী বুধবার (৯ এপ্রিল) মস্কো বুক হাউসে অনুষ্ঠিত হবে। পার্সটুডে-র মতে, ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে রাশিয়ায় প্রকাশিত এই গ্রন্থটি লেখা এবং এটি প্রকাশের প্রক্রিয়া দুই বছর সময় নিয়েছে।
২৮৫ পৃষ্ঠার এই বইটিতে, রাশিয়ান পাঠকদের জন্য জেনারেল কাসেম সোলেইমানির কৈশোর থেকে তার শাহাদাত পর্যন্ত সময়গুলোর আকর্ষণীয় ঘটনার বর্ণনা রয়েছে।
"জ্যাকলস আর নো ম্যাচ ফর লায়ন্স" বইটি এই বছরের শুরুতে বিখ্যাত "ভেচ" প্রকাশনা সংস্থা দ্বারা প্রকাশিত হয় এবং তা রাশিয়ান বইয়ের বাজারে চালু হয়েছিল।
অ্যালেগ রয় বড়দের জন্য ৯০টিরও বেশি উপন্যাস লিখেছেন। তিনি রাশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ব্যক্তিত্বদের একজন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, এই লেখক তার বই প্রকাশের দিক থেকে রাশিয়ার শীর্ষ পাঁচের মধ্যে রয়েছেন এবং কথাসাহিত্য লেখকদের তালিকার শীর্ষে রয়েছেন।
বইটি লেখা শেষ করার পর রাশিয়ায় ইরানের সাংস্কৃতিক বিভাগের প্রধান মাসুদ আহমেদভান্দের সাথে এক সাক্ষাতে অলেগ রয় বলেন: "এই উপন্যাসটিতে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে আজকের তরুণদের কাছে বোধগম্য এমন এক স্টাইলে লেখা হয়েছে যিনি রাশিয়ার অনেক লোকের কাছে খুব কম পরিচিত ছিলেন। এই উপন্যাসটি এমন একজন প্রতিভাবান ব্যক্তির জীবন সম্পর্কে, যিনি তার দেশ ও ধর্মের জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।"
অ্যালেগ রয় আরও বলেন, "আমি আমার দেশের পাঠকদের জন্য শহীদ সোলেইমানি সম্পর্কে পশ্চিমা গণমাধ্যমের মিথ্যাচর ফাঁস করে দিয়ে এই মহান বীর সম্পর্কে সত্য কথা বলতে চেয়েছিলাম।"
তিনি বলেন: "এই বইটি লেখার পেছনে আমার আরেকটি লক্ষ্য হল আমাদের বন্ধুত্বকে শক্তিশালী করা, রাশিয়া এবং ইরানের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করা, একে অপরের ঐতিহ্য, মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতির প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধার উপর ভিত্তি করে একটি স্থায়ী বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠা করা। ইরানিরা আসলে আমাদের মতোই। তারা তাদের বিশ্বাস এবং ঐতিহ্য মেনে চলে এবং তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। আমাদের মতো, তারাও তাদের বীরদের সম্মান করে এবং বিনা দ্বিধায় তাদের মাতৃভূমির জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করতে পারে। এছাড়াও, আমাদের এবং ইরানিদের একই শত্রু। এই শত্রুরা ইরানি এবং আমাদের উভয়ের সাথেই প্রতারণা করছে।
অ্যালেগ রয় আরও বলেন, "জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ইরানি জনগণের স্মৃতিতে চিরকাল বেঁচে থাকবেন এবং যে লক্ষ্যে তিনি তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, তা শেষ পর্যন্ত জয়লাভ করবে। আমরা একটি বহুমেরু কেন্দ্রিক বিশ্ব গড়ে তুলছি, যেখানে একে অপরের উপর নিপীড়ন ছাড়াই, বিভিন্ন ধর্ম, ঐতিহ্য এবং মূল্যবোধগুলো বিকশিত হবে। ইরান ন্যায্যভাবেই এই বিশ্বের অন্যতম মেরু হবে, এবং এটি ন্যায্য। ইরানের সংস্কৃতি, এর পরিচয়, এর জনগণের চরিত্র সম্পূর্ণরূপে এর যোগ্য। কাসেম সোলেইমানি কি এই স্বপ্ন দেখেছেন? আমারও তাই মনে হয়, এবং যদিও সে আজ আমাদের মধ্যে নেই, তার স্বপ্ন সত্যি হবে।
"লেখকের মন্তব্য" শিরোনামে এই বইয়ের একটি অংশে বলা হয়েছে: "আমেরিকানরা জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার মতো জঘন্য ও অযৌক্তিক অপরাধ করার পর সাড়ে চার বছর কেটে গেছে। কিন্তু তার মৃত্যুর পাঁচ বছর পরও, কাসেম সোলাইমানি যে কেবল এখনও জীবিত আছে তাই নয় বরং তার শত্রুরাও তাকে এখনও ভয় পায়। এই কারণেই যখন আমি বইটি লেখা শুরু করি, তখন আমি আসল কাসেম সোলাইমানিকে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছি।" #
342/
Your Comment