জার্মান অর্থনৈতিক বিষয়ক সংবাদপত্র দৈনিক হ্যান্ডেলসব্ল্যাট লিখেছে: ইউরোপীয় কমিশন প্রথমবারের মতো মার্কিন শুল্ক ইউরোপীয় অর্থনীতিতে কী অর্থনৈতিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে তার পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
স্টুডেন্ট নিউজ এজেন্সি ইসনার বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে, যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইইউ পণ্যের উপর ঘোষিত সমস্ত শুল্ক আরোপ করেন, তাহলে ইইউর অর্থনৈতিক উৎপাদন ০.২ শতাংশ কমে যাবে। ইউরোপীয় কমিশনের মতে, মার্কিন অর্থনীতির ক্ষতি বেশি হবে এবং একই সময়ের মধ্যে এই দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১.৪ শতাংশ হ্রাস পাবে।
ইউরোপীয় কমিশনের এই মূল্যায়ন অনুসারে, যদি শুল্ক স্থায়ীভাবে বহাল থাকে অথবা অন্যান্য দেশ যদি পারস্পরিক শুল্ক এবং বাণিজ্য যুদ্ধের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়, তাহলে অর্থনৈতিক খরচ আরও বেশি হবে, যার ক্ষতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩.৩ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ০.৬ শতাংশ এবং বিশ্বব্যাপী ১.২ শতাংশ হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের মতে, এই সব পরিসংখ্যানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগকারীদের অনাস্থার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হয়নি। এটাকে ধরলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় আঘাত উল্লেখ করে ডোমব্রোভস্কিস আরো বলেন: "শুল্ক কল্যাণ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর এবং এতে অর্থনৈতিক ভবিষ্যত ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে উঠছে।
৯০ দিনের শুল্ক স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য বিরোধ নিরসনে হতাশ ইউরোপ
ইউরোপের পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট চীনের বিরুদ্ধেও শুল্ক ১৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি করেছেন। এর ফলে বেইজিং শুক্রবার আমেরিকান পণ্যের উপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক ৮৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে।
বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে ইইউর অর্থমন্ত্রীরা উত্তেজনা হ্রাসের ব্যাপারে আশাবাদী হতে পারছেন না। তাই, তারা ৯০ দিনের জন্য মার্কিন শুল্ক স্থগিতের ঘোষণায় স্বস্তি প্রকাশ করলেও, অনেক মার্কিন শুল্ক এখনও বহাল রয়েছে। এই শুল্কের মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইস্পাত এবং গাড়ির উপর ২৫ শতাংশ এবং অন্যান্য অনেক শিল্প পণ্যের উপর ১০ শতাংশ।
জার্মান ফেডারেল অর্থমন্ত্রী জর্গ কোকিসও আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেছেন যে, ইউরোপীয় কমিশন মার্কিন সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান খুঁজে পেতে পারে। তবে, জার্মান সংবাদপত্র হ্যান্ডেলসব্ল্যাটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সতর্ক করে বলেন যে, ৯০ দিন পর পরিস্থিতি আবারও খারাপ হতে পারে, এটা সম্পূর্ণরূপে অনুমেয়।
সুইডিশ অর্থমন্ত্রী এলিজাবেথ সোয়ান্টসনও বলেছেন: "মার্কিন সরকার একটি ঝুঁকিপূর্ণ খেলা খেলছে।" বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় অর্থমন্ত্রীও জোর দিয়েছিলেন যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে।
ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন ফিনান্সিয়াল টাইমসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে জোর দিয়ে বলেছেন যে পাল্টা ব্যবস্থা মার্কিন পরিষেবা খাতকেও প্রভাবিত করতে পারে।#
342/
Your Comment