১০ মে ২০২৫ - ২২:৪০
Source: Parstoday
তেল আবিবে আবার সতর্কতামূলক সাইরেন: ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের জবাবে ইয়েমেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী ইহুদিবাদী ইসরাইলের বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দর এবং তেল আবিবে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এবং ড্রোন হামলা চালিয়ে ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠীকে চমকে দিয়েছে।

পার্সটুডে অনুসারে শুক্রবার এক নজিরবিহীন অভিযানে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী তেল আবিবের কাছে বেন গুরিওন বিমানবন্দরকে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং তেল আবিবের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুকে "ইয়াফা" ড্রোন দিয়ে হামলা চালায়। ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছেন যে গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠীর অপরাধযজ্ঞের  প্রতিশোধ এবং ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের সমর্থনে এই হামলা চালানো হয়েছে। তার মতে,ইয়েমেনি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে এবং ইসরায়েলি সরকারের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যার মধ্যে থাড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও রয়েছে, তা আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

ইয়েমেনি ভূখণ্ড থেকে ২০০০ কিলোমিটার দূর থেকে চালানো এই হামলায় বেন গুরিওন বিমানবন্দর প্রায় এক ঘন্টা বন্ধ রাখা হয় এবং তেল আবিব এবং অধিকৃত অঞ্চলের ২০০ টিরও বেশি স্থানে সাইরেন বাজানো হয়। ইহুদিবাদী গণমাধ্যম তেল আবিবে লক্ষ লক্ষ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়ে যাওয়ার এবং বিশৃঙ্খলার খবর দিয়েছে। ইয়েমেনি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ফলে তেল আবিবে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে এবং ইসরাইলি সরকার হামলার মাত্রা তদন্ত করছে।

এমন সময় ইয়েমেনি হামলা অব্যাহত রয়েছে যখন সানা ইহুদিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে বিমান ও সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখার উপর জোর দিচ্ছে এবং বিমান সংস্থাগুলোকে  অধিকৃত অঞ্চলে তাদের ফ্লাইট বন্ধ করার জন্য সতর্ক করেছে। হামলার পর লুফথানসা ১৮ মে পর্যন্ত তেল আবিবে তাদের ফ্লাইট স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে।

অন্যদিকে সানার আল-সাবাইন স্কয়ারে লাখ লাখ ইয়েমেনি নাগরিক ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সমাবেশ করে ইয়েমেনে মার্কিন হামলা বন্ধ করাকে "ঐশ্বরিক বিজয়" বলে অভিহিত করেছেন। গাজাকে সমর্থন করার একই সময়ে তারা ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থাকে পরাজিত করারও  হুমকি দিয়েছেন। ওমানের মধ্যস্থতায় ইয়েমেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পর এই মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল, কিন্তু ইয়েমেনি কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে চুক্তিতে ইহুদিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

এদিকে, ইসরাইলি নিরাপত্তা বিষয়ক সাংবাদিক হিলাল বিটন রোজেন থাড প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যর্থতাকে গত সপ্তাহে সিস্টেমের দ্বিতীয় ব্যর্থতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এটি ইয়েমেনি আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার দুর্বলতা নিয়ে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ইসরাইলের সাবেক যুদ্ধমন্ত্রী আভিগডোর লিবারম্যানও বর্তমান পরিস্থিতিকে 'অবিশ্বাস্য' বলে বর্ণনা করে বলেন,'যুদ্ধের পর এক বছর সাত মাস কেটে গেছে এবং প্রতিদিন লাখ লাখ ইসরাইলি আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যাচ্ছে।"

বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিডও ইয়েমেনি অবকাঠামোর উপর তাৎক্ষণিক আক্রমণের আহ্বান জানিয়েছেন এবং নেতানিয়াহু সরকারকে "ভয় এবং গড়িমসি" করার অভিযোগ করেছেন।

ইহুদিবাদী সাংবাদিক ডোরন কাদোশও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইয়েমেনের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করেছেন এবং এই আক্রমণকে "ইসরাইলকে একা ফেলে রাখার ফলাফল বলে মনে করছেন এবং একইসঙ্গে তিনি লিখেছেন. "প্রতিটি ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ইসরাইলের সমস্যা আছে।"

Your Comment

You are replying to: .
captcha