২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ০৮:৪৬
পুতিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল মূল্যহীন এমনি বলছে ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেবেছিল, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সুসম্পর্কের জোরেই ইউক্রেনে যুদ্ধ থামিয়ে দেবে সে। কিন্তু যখন দেখল, তার আশায় গুড়েবালি দিয়ে পুতিন নিজের মরজিমাফিক চলছে, তখন তাদের মৈত্রীর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে ট্রাম্প।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তার কথিত সাতটি যুদ্ধ থামানোর বিষয়টি উঠে আসে। তার দাবি করা কৃতিত্বে ম্যাক্রোঁর দিক থেকেও সহায়তা আছে বলে প্রশংসা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।



সাতটি যুদ্ধ থামানোর দাবি করে তিনি বলেন, কয়েকটি ম্যাক্রোঁর কৃতিত্ব রয়েছে। তবে তিনি চরম হতাশ হয়েছেন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে। কারণ তিনি ভেবেছিলেন, পুতিনের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে এই সংকট সমাধানই বরং সবচেয়ে সহজ হবে।

হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই সম্পর্কের কোনও মূল্য নেই।

সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিতে গিয়েও নিজের বড়াই করতে ভোলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার দাবি, আমি যে সাতটি যুদ্ধ শেষ করেছি, তার প্রতিটিতে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছিল। সবাই বলতো, ওই যুদ্ধগুলো কখনও শেষ হবে না। সেগুলোর কোনওটি ৩১ বছর, একটি তো চলছিল ৩৬ বছর ধরে।

কোনও প্রেসিডেন্ট বা নেতা তার এই অবদানের ধারেকাছেও কিছুই করতে পারেননি বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প।

এসব যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, তারা সংকট সমাধানে সাহায্য করার চেষ্টা পর্যন্ত করেনি। জাতিসংঘ তার সম্ভাবনার কাছাকাছি পৌঁছাতেও পারেনি। তারা কেবল ফাঁকা বুলি আওড়েছে। আর ফাঁকা বুলি দিয়ে যুদ্ধ শেষ হয় না।

পুতিনকে নিয়ে হতাশা প্রকাশে মাসখানেক আগেই রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠক করেছিলেন ট্রাম্প। সে সময় ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা নিয়ে তারা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন বলে প্রচার করা হয়। যদিও এরপর থেকে দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি। 


বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, রাশিয়া ও ইউক্রেন একদফা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবে। এরপর প্রয়োজন হলে ট্রাম্প, পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে। তবে এ পর্যন্ত একটা বৈঠকও হয়নি।

এদিকে, ইউক্রেন-রাশিয়া ইস্যুতে ট্রাম্পের অবস্থানও যেন পরিবর্তিত হচ্ছে। একদিকে তিনি জেলেনস্কিকে বলেছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মতো অবস্থানে তিনি নেই। অন্যদিকে আবার দাবি করেছেন, রাশিয়ার কাছে থেকে দখলকৃত সব ভূখণ্ড ছিনিয়ে নিতে সক্ষম ইউক্রেন।

জেলেনস্কির সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকের পর নিজ মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, আমি মনে করি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন নিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যেতে এবং জয়লাভ করতে সক্ষম। তারা নিজেদের দখল হয়ে যাওয়া ভূখণ্ডও ফেরত নিতে পারবে।

কিছুদিন আগে তিনি পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটো সদস্যদের প্রতি আহ্বান করেছিলেন, তাদের আকাশসীমায় রুশ ড্রোন বা বিমান প্রবেশ করলে, নির্দ্বিধায় যেন তা উড়িয়ে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, কিছুদিন ধরে ন্যাটোভুক্ত একাধিক দেশের আকাশসীমায় রুশ যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বাভাবিকভাবেই এসব অস্বীকার করে ক্রেমলিন বলেছে, তাদের বাহন সবসময় আন্তর্জাতিক জলসীমার ওপরই ছিল।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha