২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ - ০৮:০৮
লেবানন ও গাজায় একের পর এক বিমান হামলা।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা এবং লেবাননে মঙ্গলবার একের পর এক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সাইদনে ইসরাইলি বিমান হামলায় একটি গাড়িতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।


 যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজা সিটিতে নেতানিয়াহু বাহিনীর আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন অন্তত দুইজন।


এছাড়া পূর্ব জেরুজালেমে একটি বাড়ি ভেঙেছে দখলদাররা, আর পশ্চিমতীরে নতুন করে নোটিস দিয়েছে আরও ছয়টি বাড়ি ভাঙার। খবর আলজাজিরার।


লেবাননের নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল একটি চলন্ত যান। এ ঘটনায় ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা বেড়েছে। এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও ইসরাইলি হামলায় নিহত হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। সবশেষ গাজা সিটিতে কয়েকজন নিহত হয়েছেন। উপত্যকাটির সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, মাত্র ২৪ ঘণ্টায় তারা অ্যাম্বুলেন্স ও অগ্নিনির্বাপণ কার্যক্রমসহ ৬৫টি জরুরি উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে।

এছাড়া অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে ইসরাইলি বাহিনী একটি আবাসিক ভবন ধ্বংস করে দিয়েছে। এতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১৩টি ফিলিস্তিনি পরিবার। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছর জেরুজালেমে এ ধরনের উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে অন্তত ৩৭০ বার। একই সঙ্গে পশ্চিমতীরের হেবরনের তারকুমিয়াহ এলাকায় ছয়টি ফিলিস্তিনি বাড়ি নতুন করে ভাঙার নোটিশ দিয়েছে ইসরাইল।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, বসতি সম্প্রসারণ ও ভূমি দখলের কৌশল হিসেবেই বাড়ি ধ্বংসের পথ বেছে নিচ্ছে তেল আবিব। অন্যদিকে গাজার মিডিয়া অফিস দাবি করেছে, ইসরাইল ৮৭৫ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে।

এতে নিহত হয়েছেন ৪১১ জন, আহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি। এরই মধ্যে ৭ অক্টোবরের হামলা নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিজ দেশেই তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।

এদিকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরের বিভিন্ন শহরে অভিযান চালিয়ে একটি আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। মঙ্গলবার পূর্ব জেরুজালেমে এ অভিযানে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, জেরুজালেমে বাস্তুচ্যুতি বাড়াতে এটি ইসরাইলের চলমান অভিযানের অংশ। এর লক্ষ্য ফিলিস্তিনিদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা। 
সিলওয়ান এলাকার ওয়াদি কাদ্দুম মহল্লায় চারতলা একটি আবাসিক ভবন ভেঙে ফেলে ইসরাইলি বুলডোজার। ভবনটিতে ১৩টি অ্যাপার্টমেন্ট ছিল। এতে বহু ফিলিস্তিনি গৃহহীন হন।

মানবাধিকারকর্মীরা এটিকে চলতি বছরের ওই এলাকার সবচেয়ে বড় ভাঙচুর বলে উল্লেখ করেছেন। অভিযানের সময় তিনটি বুলডোজার দিয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। আশপাশের সড়ক ঘিরে ফেলে ইসরাইলি বাহিনী এবং পাশের ভবনগুলোর ছাদে নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়। এ সময় এক যুবক ও এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনুমতি ছাড়া নির্মাণের অভিযোগে ভাঙচুরের আদেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে ফিলিস্তিনি কর্মীরা বলছেন, ইসরাইলের কঠোর পরিকল্পনা নীতির কারণে ফিলিস্তিনিদের জন্য ভবন নির্মাণের অনুমতি পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। এই নীতি ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার একটি ধারাবাহিক কৌশল।

এদিকে ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা সম্প্রতি পশ্চিমতীরে ১৯টি নতুন বসতির স্বীকৃতি দিয়েছে। এতে চলতি বছর অনুমোদিত বসতির সংখ্যা দাঁড়াল ৬৯-এ। সরকার বসতি সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট জেরুজালেম গভর্নরেট ভাঙচুরের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই ধ্বংসযজ্ঞ ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ এবং শহরটিকে এর মূল অধিবাসীদের থেকে শূন্য করার একটি পরিকল্পিত নীতির অংশ। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যে ভাঙচুরের ফলে মানুষ ঘরছাড়া হয় তা দখলদারিত্বের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা। এর লক্ষ্য ভূমির মালিকদের জায়গায় বসতি স্থাপনকারীদের বসানো।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha