‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
শনিবার

২৪ অক্টোবর ২০২০

৯:৩৪:১৬ AM
1080565

ইরাকে কোটি মানুষের ৩ মহাসমাবেশে মৃত্যের সংখ্যা ১

করোনা ভীতি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে হতে পারে এ ভয় দেখিয়ে সমগ্র বিশ্বে শত শত বিলিয়ন ডলারের তথাকথিত করোনা ভ্যাক্সিন বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলোর পকেটস্থ করা। পাশাপাশি করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর চেয়েও তাড়াহুড়ো করে তৈরি টিকা প্রদান করে এ টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় বিশাল ও ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটান।

হলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা):

লেখক: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

ইরাকে এ বছর আরবাঈন উপলক্ষে ২ মিলিয়ন বাসিন্দা অধ্যুষিত দুই পবিত্র ধর্মীয় নগরী (এই দুই নগরীর প্রতিটিরই লোকসংখ্যা ২ মিলিয়ন) : নাজাফ -ই আশরাফে ও পবিত্র কারবালা-ই মু'আল্লা -এ দুই শহরের প্রতিটিতেই ১৪ মিলিয়ন আশিক-ই ইমাম হুসাইন (আ.) অর্থাৎ হুসাইনের প্রেমিক ও ভক্ত জনতার মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় করোনা মহামারি ও সংক্রমণের মধ্যেই। অথচ কারবালায় ১৪ মিলিয়নের এত বড় বিশাল মহাসমাবেশের পরেও এ পর্যন্ত একজন লোকও করোনায় মারা যায় নি। তবে নাজাফে এ সময় মাত্র এক ব্যক্তি করোনায় মারা গেছে। সত্যি এটা খুবই বিস্ময়কর!! খোদা না করুক যদি এ মহাসমাবেশের পর করোনায় কয়েক শো থেকে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হত তাহলে সেটাও ধর্তব্যের মধ্যে আসত না । কারণ ১৪ মিলিয়ন জনতার মহাসমাবেশের পর করোনায় কয়েক হাজার লোকের মৃত্যুও অত্যন্ত অপ্রতুল ও অল্প বলেই গণ্য হত।

আসলে সমগ্র ইরাকে গত দু মাস (মুহররম ও সফর) ধরে জনাকীর্ণ শোক সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে । কিন্তু দেশটিতে করোনা মহামারি ও সংক্রমণের তাণ্ডব একদম পরিলক্ষিত হয় নি। অনেক অনেক কম সংখ্যক মানুষ এ রোগে ইরাকে এ দুমাসে (মুহররম ও সফর) মারা গেছে যা ইমাম হুসাইনের (আ.) শোকানুষ্ঠান সমূহে মিলিয়ন মিলিয়ন (কোটি কোটি) জনতার অংশগ্রহণ ও সমাবেশের কাছে কিছুই না । শুধু শুধু করোনা সম্পর্কে বিশ্ব জুড়ে অহেতুক ভয় ভীতি ছড়ানো হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হতে পারে যে করোনা ভীতি দেখিয়ে সমগ্র বিশ্বে শত শত বিলিয়ন ডলারের তথাকথিত করোনা টিকা বা ভ্যাক্সিন বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি গুলোর পকেটস্থ হওয়া এবং করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর চেয়েও তাড়াহুড়ো করে তৈরি টিকা প্রদান করে এ টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় বিশাল ও ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটান এবং আরেক বিরাট সংখ্যক পৃথিবীবাসীর বন্ধাত্ব করণ যার মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি গুলো পৃথিবীর জনসংখ্যা কমিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও জাতির উপর নিজেদের কর্তৃত্ব ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে ও তা বলবৎ রাখতে সক্ষম হয় । কারণ বিশাল জনসংখ্যা সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর বিশ্বের উপর আধিপত্য ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথে অন্তরায় স্বরূপ ।

উল্লেখ্য যে, ইরাকে করোনা মহামারি ও সংক্রমণের সময় থেকে এ পর্যন্ত ইরাকীরা ইসলামী তিব্বের (চিকিৎসা) এক অতি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ দারূয়ে ইমাম কাযিম ( আ:) (ইমাম কাযিমের আ. ওষুধ) ব্যাপক ভাবে সেবন করে আসছে। এ ওষুধ ঠাণ্ডা লাগা, ফ্লু ও ইনফ্লুয়েঞ্জা, ফুসফুস, শ্বাস নালী, গলা ও বক্ষব্যাধির সংক্রমণের প্রতিষেধক হিসেবে ও সেগুলোর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় । আর এ সব বিশাল সমাবেশে করোনা সংক্রান্ত স্বাস্থ্য প্রোটোকল কোনো ভাবেই মানা সম্ভব নয় । কিন্তু আরবাঈন উপলক্ষে কারবালায় ১৪ মিলিয়ন এবং এর ৪০ দিন আগে কারবালায় ও ইরাকের সর্বত্র আশুরার সময় মিলিয়ন মিলিয়ন জনতার সমাবেশের কারণে বর্তমানে মিলিয়ন মিলিয়ন ইরাকীর করোনায় আক্রান্ত এবং ৫০-৬০ হাজারের অধিক ইরাকীর মৃত্যু হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু বাস্তবে এ অবস্থা হয় নি অর্থাৎ মিলিয়ন মিলিয়ন ইরাকী আক্রান্ত হয় নি এবং ৫০-৬০ হাজার ইরাকীরও মৃত্যু হয় নি । দীর্ঘ ৪০ বছরের বিভিন্ন যুদ্ধে ইরাকের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ সার্বিক রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে যদিও সাদ্দাম উত্তর ইরাকী সরকার ও প্রশাসন দেশের অবকাঠামো গড়ে তোলায় মনোনিবেশ করেছে । এ অবস্থায় ইরাকে কেন করোনা সংক্রমণ ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বেশ কিছু দেশের মতো মোটেও ভীতিকর ও মারাত্মক হয় নি? এর একটা সম্ভাব্য কারণ এটাও হতে পারে যে যে সব দেশে করোনা মারাত্মক মহামারির আকার ধারণ করেছে এবং করোনা সংক্রান্ত তীব্র ভয়-ভীতিও ছড়ানো হয়েছে বা হচ্ছে সে সব দেশের মতো ইরাকীদের মধ্যে করোনা সংক্রান্ত কোনো ভয় ভীতি বিদ্যমান নেই যারফলে করোনা নিয়ে তাদের মধ্যে মানসিক চাপ ও স্ট্রেস তৈরি হয় নি এবং এ কারণে হয়তো তাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি ভেঙ্গে পড়ে নি। আর স্ট্রেস দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল অথবা তা নষ্ট করে দেয় । আর আশুরা ও আরবাঈনে মিলিয়ন মিলিয়ন ইরাকী জনতার শোক সমাবেশ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে ইরাকীদের মনে করোনা নিয়ে মোটেও ভয় ভীতি নেই । আর এ ছাড়া ইরাকীরা ব্যাপক ভাবে একই প্লেট ও গ্লাসে পানাহার করার অভ্যাসের কারণে তাদের মধ্যে অনুজীবদের ন্যাচারাল ফ্লোরা ও রোগ তৈরি কারী জীবাণুর পারস্পরিক আদান প্রদান হওয়ায় তাদের দেহে বিভিন্ন রোগ জীবাণুর বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ শক্তি ও নিরাময় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকতে পারে ।

যা হোক করোনা নিয়ে আসলে পর্যাপ্ত, বস্তুনিষ্ঠ ও বাস্তবধর্মী গবেষণা করতঃ তদানুসারে বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ নেয়া দরকার। আর তা না হলে ভবিষ্যতে করোনা লকডাউন ও এতদ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কড়াকড়িমূলক পদক্ষেপ জনিত অর্থনৈতিক মন্দা, বিপর্যয়, দেউলিয়াত্ব, দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য ঘাটতি ও সংকটের কারণে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর চাইতেও বিশ্বজূড়ে অধিক সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হতে পারে !!!