‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
রবিবার

১৪ নভেম্বর ২০২১

৯:৪৭:৪৮ AM
1198301

মহারাষ্ট্রে বনধ চলাকালীন সহিংসতা, দোকানপাটে ভাঙচুর, কারফিউ জারি

ভারতের মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে বনধ চলাকালীন সহিংসতা ও দোকানপাটে ভাঙচুরের জেরে শহরে কারফিউ জারি করা হয়। গতকাল (শনিবার) সকালে বিজেপির ডাকা বনধের সময় কিছু লোক পাথর ছুড়ে দোকানপাটের ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষোভকারীরা এ সময়ে কিছু দোকানপাটে ভাঙচুর করলে বনধ সহিংস রূপ নেয়। কিছু জায়গায় পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : বিবিসি হিন্দি সূত্রে প্রকাশ, অমরাবতী শহরে গত (শুক্রবার) ভাঙচুরের প্রতিবাদে গতকাল (শনিবার) বনধের ডাক দিয়েছিল বিজেপি ও হিন্দু সংগঠনগুলো। এ সময়ে বিজেপি ও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো পাকিস্তান বিরোধী স্লোগান দেয়। বনধকে কেন্দ্র করে শহরে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে, জেলা প্রশাসন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অমরাবতী শহরে কারফিউ জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  

গতকাল সকালে বিজেপি কর্মীরা শহরের রাজকমল চকে জড়ো হয়ে মিছিল করে। বনধকে সামনে রেখে অমরাবতী শহরে ভারী পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এরআগে, বিজেপিশাসিত ত্রিপুরায় সম্প্রতি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে শুক্রবার মুসলিম সংগঠনগুলো মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি জেলায় র‍্যালি করে। এ সময় পাথর নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছে। ওই পাথর নিক্ষেপের প্রতিবাদে শনিবার বিজেপি’র পক্ষ থেকে বনধের ডাক দেওয়া হয়।     

পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, অমরাবতীর রাজকমল চকে কয়েকশো মানুষকে হাতে ‘গেরুয়া পতাকা’ নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। এরমধ্যে কিছু লোক পাথর ছুড়ে কিছু দোকানপাটের ক্ষয়ক্ষতি করে, যার জেরে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়।  

অন্যদিকে, শুক্রবারের সহিংস ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংযমের আবেদন জানিয়ে বলেছেন, রাজ্য সরকার পরিস্থিতির উপর গভীর নজর রাখছে। তিনি বলেন, নাগরিকদের কোনো গুজবে বিশ্বাস করা উচিত নয়। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সবাইকে সামাজিক ঐক্য বজায় রাখতে হবে এবং এ ব্যাপারে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।    

সহিংসতার বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে, শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, রাজ্য সরকার একটি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে এবং এই সহিংসতার জন্য দায়ী মুখগুলোকে শীঘ্রই সামনে আনা হবে। সঞ্জয় রাউত বলেন, মহারাষ্ট্রে যে সহিংসতা ঘটছে তা মহাবিকাস আঘাড়ি সরকারকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে। সহিংস ঘটনাগুলোর বিষয়ে কথা বলতে তারা (বিরোধীরা) এবার  রাজ্যপালের সাথে দেখা করবে এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি লিখবে, দাবি করবে যে মহারাষ্ট্রে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। ভবিষ্যতে এসব ঘটবে। কিন্তু রাজ্য সরকার একেবারেই স্থিতিশীল।

‘এনসিপি’ নেতা এবং রাজ্য সরকারের মন্ত্রী নবাব মালিক বলেছেন, গতকাল যা হয়েছে তা ঠিক নয়। যারা নিয়ম লঙ্ঘন করবে তাদের  বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আন্দোলন করা আপনার অধিকার, কিন্তু সহিংস আন্দোলন নয়। জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে যাতে আর সহিংসতা না হয়। কিছু লোক শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।

‘মিম’সাংসদ ইমতিয়াজ জলিল অমরাবতী সহিংসতার নিন্দা করে বলেছেন, ‘আমি ত্রিপুরা এবং মহারাষ্ট্রে যে সহিংসতা হয়েছে তার নিন্দা করেছি। আমি মুসলিম ভোটের সাহায্যে ক্ষমতায় আসা নেতাদের প্রশ্ন করতে চাই যে, তারা ত্রিপুরায় সহিংসতার নিন্দা করেননি কেন? মহারাষ্ট্রের কোনো দল যদি এই সহিংসতাকে প্রতিশোধ হিসেবে ব্যবহার করে, তাহলে আমি বলব যে এটা দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।’ 

ত্রিপুরায় মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সহিংসতার বিরুদ্ধে শুক্রবার প্রতিবাদ সমাবেশ মহারাষ্ট্র রাজ্যের কিছু অংশে সহিংসতা সৃষ্টি হয়। এরমধ্যে মালেগাঁও, নান্দেদ ও অমরাবতীতে উত্তেজনা ছিল বেশি। ত্রিপুরার   সহিংসতার বিরুদ্ধে মালেগাঁওতে বনধ ডাকা হয়। ওই বনধের সময়  সহিংসতার ঘটনা ঘটে, পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। একইসময়ে, নান্দেদে পাথর নিক্ষেপের জেরে শহরে উত্তেজনা ছড়ায়। পাথরের আঘাতে আহত হয়েছেন পুলিশ সদস্যরাও।  

মালেগাঁওতে ‘রাজা একাডেমি’সহ অন্য মুসলিম সংগঠনের পক্ষ থেকে বনধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। এরমধ্য দিয়ে ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।# 

342/