জনাব গুদারজি বলেন: ইরান এবং পাকিস্তান এ অঞ্চলকে নিরাপত্তা বিঘ্নিতকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হবার সুযোগ দেবে না। তিনি বলেন: দুই দেশই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির স্বার্থে সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় একমত। সীমান্তে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতার পাশাপাশি মানব-পাচার, চোরাই পণ্য ও জ্বালানি পাচারের বিষয়টিও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ। এ কারণেই ইরান পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ স্থল ও জলসীমায় নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।
বিশিষ্ট রাজনীতি বিশেষজ্ঞ নওজার শাফিয়ি এ অঞ্চলে উগ্রপন্থা বিস্তারের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের মাদ্রাসাগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তিনি বলেন: পাকিস্তান সরকারের উচিত এর পরিণতির ব্যাপারে মনোযোগ দেওয়া। কেননা উগ্রপন্থা সীমান্ত চেনে না, সুতরাং সমগ্র এলাকাই নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে আছে।
ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে ৯০০ কিলোমিটারের মতো যৌথ সীমান্ত রয়েছে। তাছাড়া আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ নিয়েও দু'দেশের উদ্বিগ্ন হবার কারণ রয়েছে। পাকিস্তানের উপজাতীয় এলাকাগুলো উগ্রপন্থি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠিগুলোর নিরাপদ এলাকা। এ কারণে এলাকাটি প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করছে।
এ কারণে ইরান এবং পাকিস্তান যৌথ পরিকল্পনার মাধ্যমে সন্ত্রাসী ও চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর ক্ষেত্র ও তৎপরতা সংকুচিত করতে পারে। এ ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সীমান্তরক্ষা, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা আগের তুলনায় অনেক বেশি প্রয়োজন বলে মনে হচ্ছে।
পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞ আলিরেজা মেহরাবি বিশ্বাস করেন, ইসলামাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইরানের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের কার্যক্রম ইরানের জাতীয় স্বার্থ এবং নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এমনকি বলা যায় ইরানের নিরাপত্তা বিপন্ন করে তুলেছে।
যাই হোক না কেন, এই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান চরমপন্থা এবং আইএসআইএল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উপস্থিতি শক্তিশালী হবার ঘটনায় পাকিস্তানও তাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকিগ্রস্ত বলে মনে করছে। তাই দু'দেশের অভিন্ন সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় গোয়েন্দা সহযোগিতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্ত এলাকা যেন সন্ত্রাসীদের ট্রানজিট পয়েন্ট হয়ে উঠতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনে যৌথ সামরিক মহড়ার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।#
342/