২৪ ডিসেম্বর ২০২২ - ১৯:০৬
ইরানের বিরুদ্ধে জেলেনেস্কির অভিযোগের পুনরাবৃত্তি এবং তেহরানের প্রতিক্রিয়া

মার্কিন কংগ্রেসে দেয়া বক্তব্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কির তেহরান বিরোধী অভিযোগের পুনরাবৃত্তি ও অশালীন বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, জেলেনস্কির জানা উচিত যে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগের জন্য ইরানের কৌশলগত ধৈর্যের একটা সীমা আছে।

ইউক্রেনের যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ওয়াশিংটন সফর করেন। ইউক্রেনে মার্কিন প্রতিরক্ষা সহায়তা আরো জোরদার করার পাশাপাশি যুদ্ধের জন্য ওয়াশিংটনের সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা নিয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কি আমেরিকায় মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের সাথে এক বৈঠকে তিনি ইরান বিরোধী অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা রয়েছে এবং ইউক্রেনের স্থাপনায় হামলায় ইরানি ড্রোন দিয়ে হামলা চালাচ্ছে মস্কো।  

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানয়ানি গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, কিয়েভের পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে- তেহরান মস্কোকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য ড্রোন দিয়েছে।  তিনি সুস্পষ্ট করে বলেন, তার দেশ যুদ্ধরত কোনো পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ করেনি এবং এ নিয়ে কোন পরিকল্পনাও নেই।

ইরান ও রাশিয়ার ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র পাঠানোর ন্যায্যতার প্রতিষ্ঠার জন্য কোনো ধরনের নথি প্রমাণ উপস্থাপন ছাড়াই ইউক্রেনসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশে দাবি করে আসছে যে ইউক্রেন যুদ্ধে  মস্কো ইরানি ড্রোন ব্যবহার করছে ।

গত ২৪ অক্টোবর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন যে রাশিয়া ইরান থেকে দুই হাজার "শাহেদ -১৩৬" ড্রোনের অর্ডার দিয়েছে। এর কয়েক দিন পর ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর মুখপাত্রও দাবি করেন যে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ৩০০টির বেশি ইরানের তৈরি "শাহেদ 136" ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

তেহরানের বিরুদ্ধে যখন এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তখন একই সময় ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ইউক্রেন সংকটের বিষয়ে বারবার জোর দিয়ে বলে আসছে যে যে তারা এই সংকটের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার নীতি মেনে চলে। প্রকৃতপক্ষে ইরান এই সঙ্কটের কোনো পক্ষ নয় এবং ইউক্রেন ও রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কাঠামোর আওতায় দুই দেশকে মতপার্থক্য নিরসন করে যুদ্ধের ধারাবাহিকতা বন্ধ করার লক্ষ্যে চলমান সংকটের শুরু থেকেই তেহরান দুই দেশকে কূটনীতির পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। 

ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা যা ইউক্রেন সংকটের আগে থেকে অব্যাহত রয়েছে, মস্কোকে ড্রোন সরবরাহের বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কাঠামোর মধ্যে একটি পদক্ষেপ যা কখনও ইউক্রেনের উপর আক্রমণের জন্য সামরিক সমর্থন বলে মনে করা হয় না।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেছেন, আমরা বহু বছর ধরে রাশিয়ার সাথে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা করেছি, কিন্তু আমরা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে সমর্থন করিনি এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য আমরা রাশিয়াকে কোনো ইরানি অস্ত্র সরবরাহ করিনি।#

342/