২০০১ সালে চালু হওয়া এই নৌ জোটে প্রাথমিকভাবে ১২টি দেশ সদস্য ছিল। কিন্তু বর্তমানে এতে ৩৪টি দেশের বাহিনী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ অঞ্চলে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি লোহিত সাগর এবং পারস্য উপসাগরে জলদস্যুতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো বিষয়গুলো এই জোটের প্রধান এজেন্ডা ছিল বলে জানা গেছে। এই নৌ জোটের প্রধান সদর দপ্তর মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহর এবং মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের কাছে বাহরাইনে অবস্থিত।
সংযুক্ত আরব আমিরাত কেন এই জোট থেকে বেরিয়ে গেল সে সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন।
প্রথমত ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য আরব বিশ্ব ঐকমত্য পোষণ পর এই জোট থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত বিদায় নিয়েছে। তাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে তারা ইরানবিরোধী তৎপরতায় অংশ নেবে না। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিটিও এই বিষয়টিকে তুলে ধরেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "অন্যদের সঙ্গে আমাদের কার্যকর নিরাপত্তা সহযোগিতা যা চলমান রয়েছে তা মূল্যায়নের ফলস্বরূপ দুই মাস আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত যৌথ নৌবাহিনীর জোট থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।"
দ্বিতীয় বিষয় হল, সৌদি আরবসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাত এই সিদ্ধান্তে পৌছেছে যে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা বহিরাগত শক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার অভিন্ন লক্ষ্যগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার উপায় হিসাবে শান্তিপূর্ণ সংলাপ এবং কূটনৈতিক উপায়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তৃতীয় বিষয় হল, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পদক্ষেপ আরব দেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল হিসেবে দেখা হচ্ছে। আরব দেশগুলো বিশেষ করে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের স্বার্থে একদিকে এই অঞ্চলের দেশগুলোকে কেবল হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহারই করছে না বরং তাদেরকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখে আসছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথ সহযোগিতার ফলাফল এই যে ওয়াশিংটন আরব দেশগুলোর স্বার্থের চেয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থই দিকে বেশি যত্মশীল। এর ফলে আরব দেশগুলো তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে আরও স্বাধীন নীতি গ্রহণ করতে শুরু করেছে।#
342/