‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
বুধবার

১২ জুলাই ২০২৩

৭:০০:১৪ PM
1379056

আমি ‘গাদীরের হাদীস’ ও ‘সাকালাইনের হাদীসের’ কল্যাণে শীয়া হয়েছি/ শীয়া হচ্ছে প্রতিরোধ ও আত্নমর্যাদার প্রতীক

সাইয়্যেদ যাকি বলেন: হাদীসে সাকলাইনকে এভাবে জানতাম যে, উক্ত হাদীসে দ্বিতীয় ভারি বস্তু বলতে নবীর ইতরাতের (পবিত্র বংশধারার) পরিবর্তে নবীর সুন্নাতের কথা উল্লেখ রয়েছে। অতপরঃ আমি কৌতূহল বশতঃ যখন জানার চেষ্টা করলাম, দেখলাম হাদীসে-সাকলাইন কেবল আমাদের কিতাবগুলোতে সহীহ সূত্রে বিদ্যমান রয়েছে এমন নয় বরং তা অত্যন্ত শক্তিশালি সনদে বর্ণিত মুতাওয়াতির পর্যায়ের হাদীস! প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে তা বর্ণনা করা হয় না কেন? অন্যদিকে, কেন আমাদেরকে অধিক নির্ভরযোগ্য এই হাদীসের পরিবর্তে দুর্বল সূত্রে বর্ণিত মুরসাল-হাদীস বলা হয়?!

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা):

সুদানে শীয়াদের ইতিহাস মূলত: ফাতেমি শাসকদের সাথে সম্পৃক্ত। সালাউদ্দীন আইয়ুবীর অত্যাচারের কারণে কিছু সাদাত ও শীয়া পরিবার সুদানে এসে বসবাস শুরু করে। সুদানের স্থানীয় শীয়াদের অন্যতম হচ্ছে- ‘সাদতে ইদ্রিসি’, ‘সাদতে মারাঘনেহ’ এবং ‘সাদতে আরেকিন’। এছাড়াও ইমাম সাদিক (আঃ)-এর পুত্র ইসহাক মুতামানের বংশধরগন এবং সাইয়্যিদা নাফিসার বংশধরগন ‘সাদতে আলে-জাকি’ হিসাবে বিশেষ ভাবে পরিচিত। বর্তমানে সুদানে বসবাসকারী দ্বাদশ ইমামি শীয়ারা সময়ের শ্রতধারায় নিজেদের অতীত ইতিহাস ঐতিহ্য ভুলে অন্যান্য সাধারণ মুসলিমদের মত জীবন যাপন করলেও, বিগত কয়েক দশকে তারা নতুন করে শীয়া মতাদর্শ গ্রহন করে, নিজেদের অতীত ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে ফিরে আসে।

সুদানের সূফী সম্প্রদায়, বিশেষ করে তাদের মধ্যে খাতমিয়া এবং আনসার সম্প্রদায়, আহলে বাইতের প্রতি অনেক বেশি ভালোবাসা পোষণ করে থাকে এবং তাদের নিকট ইমাম আলী (আ.)-এর মর্যাদা অনেক উঁচুতে।

‘সাইয়্যিদ মুহাম্মদ জাকি’ সুদানের শিয়া সাংস্কৃতিক কর্মীদের একজন, যিনি কোমে পড়াশোনা করেছেন। তার সাথে কথোপকথনের দ্বিতীয় অংশে, আমরা তার শীয়া মতাদর্শ গ্রহণ করার বিষয় নিয়ে এবং সেদেশে আহলে বাইত (আ.)-এর অনুসারীদের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেছ, যা নিন্মরুপ:

আবনা: প্রথম প্রশ্ন হিসেবে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, আহলে বাইত (সা.)- সম্পর্কে তাঁর জানার শুরুটা কিভাবে হয়েছিল এবং শীয়া হওয়ার গল্প কোথা থেকে শুরু হয়েছিল বা তাঁর শীয়া হওয়ার কারণ কী ছিল?

(জবাবে তিনি বলেন)- প্রথমে, আপনি যে আমাকে দাওয়াত করেছেন এবং আমার জন্য সময় নির্ধারন করেছেন তার জন্য আপনাকে এবং আহলে বাইত বার্তা সংস্থাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

১৯৯০-৯১ এর পূর্বে, আমাদের এক চাচা শীয়া হয়ে ছিলেন। এরপর আমার দ্বিতীয় চাচা ও বড় ভাই শীয়া মতাদর্শ গ্রহন করে আর এভাবেই আমাদের পরিবারে শীয়া মতাদর্শ বিস্তারের শুরু। শীয়া মতাদর্শের সাথে আমাদের পরিবারের সম্পর্কের শুরুটা গর্ব করার মত! পরবর্তিতে তাদের সাথে আলাপআলোচনা করে এবং কিছু বইপত্র পাঠ করে, আমি নিজেও শীয়া মতাদর্শের বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠি। চৌদ্দ বছর বয়সে, বিশেষ করে আল্লামা সাইয়্যেদ আবদাল-হুসাইন শারাফুদ্দিনের বিশ্ব:খ্যাত কিতাব ‘আল-মুরাজায়াত’ অধ্যয়ন করার পরে এবং হাদীসে সাকলাইনের মতো বেশ কিছু অকাঠ্য-দলীল প্রমাণের সাথে পরিচিত হওয়ার মাধ্যমে শীয়া মতাদর্শ গ্রহন করে ছিলাম।

আমরা হাদীসে সাকলাইনকে এভাবে জানতাম- উক্ত হাদীসটিতে দ্বিতীয় ভারিবস্তু বলতে নবীর ইতরাতের (পবিত্র বংশধারার) পরিবর্তে নবীর সুন্নাতের কথা উল্লেখ রয়েছে। অতপরঃ আমি কৌতূহল বসত: জানার চেষ্টা করলাম যে, যখন হাদীসে-সাকলাইন আমাদের কিতাবগুলোতে কেবল সাহীহ সূত্রে বিদ্যমান রয়েছে এমন নয় বরং তা একটি মুতাওয়াতির পর্যায়ের হাদীস! তাহলে তা বর্ণনা করা হয় না কেন? অন্যদিকে, কেন আমাদেরকে অধিক নির্ভরযোগ্য হাদীসের পরিবর্তে কেবল দুর্বল সূত্রে বর্ণিত হাদীস বর্ণনা বলা হয়?!

‘হাদিসে গাদীর’ যা আমরা কখনো শুনিনি! এটা আমার কাছে খুব আশ্চার্যের বিষয় ছিল যে, যখন আমি দেখলাম যে সবই অত্যান্ত সুস্পষ্ট, বিশেষ করে হাদীসের

‘من کونت مولی فهذا علی مولاه’ (আমি যার মাওলা এই আলীও তাঁর মাওলা) অংশটুকু তো মুতাওয়াতের সূত্রে বর্ণিত। এত সব কিছু থাকার পরও, কোন সে ব্যক্তি যে চাইনি, আমরা ইমাম আলী এবং আহলে বাইতের (আ.) সাথে পরিচিত হই!? এসময় আমার চিন্তার কেন্দ্রে কেবল একটি বিষয়ই উকি দিচ্ছিল আর তা হলো নিশ্চয় কোন মহা-সত্য পর্দার অন্তরালে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।

সাধারনতঃ মানুষ এটা মেনে নিতে পারে না যে, সে এবং তার পূর্বপুরুষরা সবাই ভুল করে গেছে। তাই এই সব হাদিসের জন্য একটি উপায় বের করা হলো- ব্যাখ্যা দেওয়া হলো যে, গাদীরের হাদীসে, ‘মাওলা’ শব্দের অর্থ বন্ধু বা সহযোগী। এভাবে দাবী করা হয় যে, শুধুমাত্র শিয়ারাই একমাত্র আহলে বাইত (আঃ) এর অনুসারী এমন নয় বরং আমরা সবাই আহলে বাইতের অনুসারী! সুফিগনও আহলে বাইত (আ.)-এর প্রতি ভালোবাসা পোষণকারী হতে পারেন।

.অন্যত্র সহীহ মুসলিম ও বুখারীতে মহানবীর বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে- আমার পরে বারোজন নেতা থাকবেন! কায্যত এ হাদিসে সত্যকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন অবকাশ রাখা হয়নি। এই সব সুস্পষ্ট বিষয়ের সাথে আহলে বাইত (আ.)-এর মর্যাদা সম্পর্কিত অন্যান্য বর্ণনাগুলো, সবই যেন আমাদেরকে শিয়া মতবাদের দিকেই পথনির্দেশ করেছিল।

আমি নিশ্চিত ইয়াকিনের সাথে অনুধাবন করলাম- এখন হয় সত্যকে গ্রহন করতে হবে নতুবা বলতে হবে যে, আমি সত্য চাই না, বরং বাপ-দাদার পথে চলতে থাকি! ১৯৯০-৯১ সাল পর্যন্ত আমি মালেকি মাযহাবের অনুসারি ছিলাম! যখন আমার বয়স চৌদ্দ বা পনের বছর হয় তখন আমি শীয়া মতাদর্শ গ্রহন করি। অর্থাৎ বয়ঃসন্ধিকাল বা তাকলিফের বয়স থেকেই আমি শীয়া। অধ্যয়ন করে, চিন্তা-ভাবনা করে, গাদীর ও সাকলাইনের হাদীস জানার মাধ্যমে এবং সর্বপরি আহলে বাইত (আঃ)-এর মহান শিক্ষার প্রভাবে আমরা শীয়া মতাদর্শ গ্রহন করি।

আবনা: আপনার স্ত্রীও কি একজন শীয়া?

হ্যাঁ, সেও শীয়া! সে পেশায় একজন ডাক্তার, সুদানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা কর্মে নিয়োজিত। আমার স্ত্রী যখন ইউনিভার্সিটির ষষ্ঠ বর্ষে ছিল যখন সে ধারাবাহিক ভাবে কিছু বই পড়ে শীয়া হয়েছিল। আমি নিজেও আমার স্ত্রীর শীয়া হওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগীতা করে ছিলাম! তার বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সব শীয়া লোকজন ছিল, তাদের সাথেও অনেক আলাপ আলোচনা করে ছিলাম। সব শেষে আমার স্ত্রী হাসপাতালে কাজ শুরু করার দুই বছর পর, আমরা বিয়ে করি এবং ইরানে চলে আসি।

আবনা: আপনার কয়টি সন্তান আছে?

আমাদের মোট পাঁচ সন্তান রয়েছে।

আবনা: আত্মীয়-স্বজন বা শহরের অন্যান্যরা আপনাকে জিজ্ঞেস করেনি, কেন শিয়া হলেন? আপনি কি এই পথে কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন?

হ্যাঁ, অনেক সমস্যা ছিল। অবশ্য আমাদের পারিবারিক অবস্থা ছিল ভিন্ন; আমার প্রয়াত দাদা একজন মহান আলেম ছিলেন, বলতে গেলে আমাদের বাড়িই যেন একটি ঐতিহ্যবাহী সুন্নি শিক্ষাকেন্দ্র ছিল। আমার বাবা এবং দাদা উভয়ই জুমার ইমাম ছিলেন। তারা চার-সুন্নি মাযহাবের উপর ভিত্তি করে ফতোয়া দিতেন। আমি একটি আলেম-পরিবারে বড় হয়েছি এবং আমাদের পূর্বপুরুষরা ছিলেন কুরআনের শিক্ষক। অধিকাংশ অভিজাত সাদতগন যারা সুদানে সক্রিয়, তারা শেখ সুফিয়া নামে বিখ্যাত। লোকেরা আমাদের পিতাদের কাছ থেকে ধর্ম শিক্ষা গ্রহন করত এবং ধর্মীয় বিষয়ে আমাদের পিতারা কী বলবেন, তা শুনার অপেক্ষায় থাকত।

আমি শীয়া হওয়ার পর সরকারের কিছু লোকজন যারা ওহাবী বা মুসলিম ব্রাদারহুড মতাদর্শের ছিল তারা শীয়াদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছিল। যদিও শীয়াদের বিরুদ্ধে সুদান সরকারের তেমন কোন কঠোরতা ছিল না, তবে তারা অন্যান্য সরকারের সাথে মাযহাবি বিষয়ে সহযোগিতা অব্যহত রেখে ছিল। সরকার শিয়াদের বই বিতরণ ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ করলেও শিয়াদের বিরক্ত করেনি। অবশ্য অন্য কোনো শত্রুতার কারণে শীয়া হওয়ার অজুহাতে আমাকে কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ ও আটক করা হয়েছিল।

আবনা: আপনারা মোট কতজন সুদান থেকে এসে কোমে ধর্মীয় পড়াশোনা করছেন?

আমার মনে হয় প্রায় বিশ জনের মত হবে; তবে সুদান থেকে আসা মোট শিক্ষার্থীর প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হবে। আমার সাথে আসা অনেকে স্নাতক শেষ করে, সুদানে ফিরে গেছেন।

আবনা: আপনি ইরানের বিষয় কীভাবে জেনে ছিলেন এবং পড়াশোনা করতে কেন ইরানকে বেছে নিয়েছিলেন?

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য আমি ১৩৭৮-৭৯ সালে ইরানে এসেছি। তেহরানে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা বিভাগের অধিভুক্ত আল-মাহদি স্কুল নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ফার্সি ভাষা শিক্ষা দেওয়া হত। সেখানে ভাষা কোর্স শেষ করার পর, কিছু ছাত্র কাজভিনে চলে যায় এবং সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন আর কিছু ছাত্র কোমে পড়ালেখা শুরু করেন।

শহীদ বেহেশতী বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার কথা ছিল আমার, কিন্তু আমার দাদা মারা যাওয়ার কারণে আমি দেশে ফিরে যাই এবং সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করি। এর পাঁচ বছর পর ১৩৮৪ সালে, আবার আমরা ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য স্বপরিবারে কোমে আসি। ১৩৮৪ থেকে ১৩৯৫ সাল পর্যন্ত আমরা দশ বছর ইরানে ছিলাম। আমি ১৩৯৫ সালে সুদানে ফিরে যায়। ঐ সব বছরগুলিতে আমি ইরানে বারবার আসা যাওয়া করেছি।

আবনা: সুদানে শিয়াদের বর্তমান অবস্থা কেমন?

ওমর আল-বশিরের শাসনের পরে, জনসাধারণের যথেষ্ট স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। শীয়ারা তাদের বাড়িতে বিভিন্ন কর্মসূচি এবং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন। আমরা নিজেদের বাড়িতে আহলে বাইত (আ.)-এর জন্মদিনে ও মৃত্যু বার্ষিকিতে এবং কদরের রাতে ইবাদাত অনুষ্ঠান ও বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি।

আবনা: সুদানের সোশ্যাল-মিডিয়ায় কি শিয়া এবং আহলে বাইত (আ.) বিরোধী প্রচারনা চালানো হয়? এ ব্যাপারে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো কি ধরণের পদক্ষেপ নিতে পারে?

এটা স্বাভাবিক যে, সোশ্যাল-মিডিয়ায় শিয়াদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম থাকবে; অবশ্য এসব শুধু শিয়াদের বিরুদ্ধেই হচ্ছে এমন নয়। বর্তমানে, আমরা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক এবং চরিত্র, নৈতিকতার উপরেও আক্রমণ প্রত্যক্ষ করছি। আমার মতে, সুদানের অভ্যন্তরে এবং বাইরের সকলকে সংগঠিত করা দরকার, যাতে নাস্তিকতা রোধ করতে এবং মানুষকে ধর্মের দিকে নিয়ে আসার জন্য জনমত গঠনে তারা ভূমিকা রাখতে পারেন। সোশ্যাল-মিডিয়ায় ধর্মীয় বিষয়গুলিকে আরও দক্ষতার সাথে তুলে ধরার ও ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের অবশ্যই বস্তুবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে এবং রাজনৈতিক ইস্যুতে ভুল বিশ্লেষনের স্বীকার হওয়ার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বণ করতে হবে।

আবনা: সোশ্যাল-মিডিয়ায় শীয়াদের ভিত্তি শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বাধা কী কী?

শীয়া শব্দটির উদ্দেশ্য মাযহাবের বিরুদ্ধে কোন মাযহাব হওয় উচিৎ নয়, বরং আমার মতে এটি আত্নসম্মান ও প্রতিরোধের অর্থ বহন করে। শীয়া হচ্ছে প্রতিরোধ ও আত্নমর্যাদার প্রতিক! তাই মর্যাদা এবং প্রতিরোধের বিষয়গুলো তুলে ধরার পাশাপাশি শিয়া-সুন্নির মত বিতর্কিত বিষয়গুলিতে ফোকাস না করে আহলে বাইত (আ.)-এর শিক্ষাকে বেশি প্রচার করা বেশী প্রয়োজন। এতে কোন সন্দেহ নেই যে, আমাদের জনবল তৈরী করতে হবে এবং কর্মী নিয়োগ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের জন্য কাজের সুযোগ করে দিতে হবে এবং পারিপার্শিক অবস্থার আলোকে কৌশল নির্ধারণ, পুনর্গঠন ও সংশোধন আনতে হবে।

আবনা: আপনার দৃষ্টিতে, আহলে বাইত বার্তা সংস্থা- আবনা, কীভাবে সুদানে ভূমিকা রাখতে পারে?

একটি বার্তা সংস্থা হিসাবে আবনা যদি সুদানের জন সাধারণের মধ্যে কাজ করতে চায়, তবে মনে রাখতে হবে যে, লেবানন এবং ইরাকের মতো আমাদের খোলা জায়গা নেই এবং এ দেশে শিয়াদের উপস্থিতিও অত্যান্ত দুর্বল। সুদানে বার্তা সংস্থা আবনার কার্যক্রম সেখানকার জনমতের দৃষ্টিতে নেতিবাচক বলে বিবেচিত হতে পারে, তবে আবনা যদি কয়েকজন সুদানী ছাত্রদেরকে মিডিয়ার কাজ শেখায় যাতে আবনার কার্যক্রমের বিষযয়ে তারা সহযোগিতা করতে পারে, সে ক্ষেত্রে সফলতা পাওয়া যাবে বলে মনে করি।

আবনার উচিত হবে সুদানে শিয়া সংবাদের কভারেজে ধর্মীয় ও মাযহাবি মুখপাত্র হয়ে কাজ না করা। পশ্চিমাদের অহংকারী উগ্র পন্থার মোকাবেলায় ইরানী মিডিয়াগুলো ইসলামের পরিচয়, নৈতিকতা, হিজাব, আত্মবিশ্বাস এবং মানষের মর্যাদা সম্পর্কিত বিষযয়াবলী প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে। শিয়া ও সুন্নি ইস্যুতে জড়িত না হওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের শত্রুদের নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় সবসময় সুন্নি ও শিয়া মতভেদকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে কেউ যেন মনে না করেন যে, তিনি মতানক্যৈর বিষয়ে কাজ করে, শরীয়তের দায়িত্ব পালন করছেন! কারণ এই সব বিবাদ-বিভাজনের আলোচনায় যিনি লাভবান হবেন তিনি না শিয়া, না সুন্নি, বরং আমাদের শত্রুরাই এই সব মতভেদ থেকে লাভবান হবে।

আবনাঃ আমাদেরকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ!