‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
রবিবার

৩০ জুন ২০২৪

৩:০৯:০৬ PM
1468737

ইসরাইলি গবেষকের স্বীকারোক্তি: ইসরাইলের বিজয়ের যুগ শেষ

পার্সটুডে- ইহুদিবাদী ইসরাইলের একজন গবেষক বলেছেন, ইসরাইলের জন্য বিজয়ের যুগ শেষ হয়ে গেছে। অবশ্যই নেতানিয়াহুর ব্যর্থতার ভেতর থেকেই বিজয় কল্পনার বিষয় ভাবা উচিত।

ইহুদিবাদী বিশেষজ্ঞ "হ্যাগি ওলশানিতস্কি" জেমান ইজরায়েল নিউজ সাইটে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে লিখেছেন, ৭ অক্টোবরের ঘটনার প্রেক্ষাপটে বিজয়ের নতুন অর্থ করা উচিত এবং ইসরাইল যে ধরনের সাধারণ ও রূপকথাতুল্য বিজয় অর্জন করত সেসবের আর অস্তিত্ব নেই।

ইসরাইলের এই গবেষক লিখেছেন, ৭ অক্টোবরে শুরু হওয়া যুদ্ধে ইসরাইল কোনো লক্ষ্যই অর্জন করবে না, কারণ ইসরাইল তার ঠেকিয়ে রাখার সব শক্তিগুলো ব্যয় করেছে ও তার আর বর্ধিত কোনো শক্তি-সামর্থ্য নেই।

অন্যদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিআমিন নেতানিয়াহু বিচার বিভাগসহ ইসরাইলের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন যাতে কারাগারে যেতে না হয় তাকে। আসলে ক্ষমতালোভী নেতানিয়াহু ক্ষমতা হারানোর ভয়েই গাজা যুদ্ধের ইতি টানছে না, সে জানে যুদ্ধ অব্যাহত রাখলে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি আচরণগুলোকে ৭ অক্টোবরের ঘটনার অজুহাতে আলোকে সাফাই হিসেবে তুলে ধরতে পারবে। 

এই প্রবন্ধের লেখক আরও লিখেছেন: সাত অক্টোবরের ঘটনার পর যত ফিলিস্তিনি পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছে তা দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩০ বছরেরও বেশি বর্ণবাদী শাসনের সময় নিহত কৃষ্ণকায় নাগরিকদের সংখ্যার চেয়েও বেশি।  

আসলে কোনো যুক্তি ছাড়াই নিরপরাধ ও বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকায় পশ্চিমতীরে আরও বড় ধরনের যুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। আর এভাবে ইসরাইলের বিরুদ্ধে তৃতীয় আঞ্চলিক ফ্রন্ট গড়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিবাদীরা যেভাবে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসযজ্ঞ ও তাদের সম্পদের ওপর অগ্নিসংযোগ করছে তাতে এই নতুন যুদ্ধের আগুনকেই উস্কে দেয়া হচ্ছে।

ইসরাইলের এই বিশেষজ্ঞ আরও লিখেছেন, গাজায় যুদ্ধ থামানোর আগে ও সব কিছুতেই ইসরাইলের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে যাওয়ার আগেই ইসরাইলকে রক্ষার যে একটি ক্ষুদ্র সম্ভাবনা রয়েছে তা হল গাজায় যুদ্ধের আগুন থামানো। গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটানো যে ইসরাইলের জন্যই কল্যাণকর তা স্পষ্ট। সবচেয়ে ভালো অবস্থায় ফিলিস্তিনিদেরকে স্বাধীনতা দেয়ার সুযোগ ইসরাইলের হাতছাড়া করা উচিত নয়।

ইসরাইলি এই লেখকের মতে বর্তমানে জাতিসংঘ ও বিশ্ব-সমাজের সহায়তায় গাজার যুদ্ধ-বিরতিকে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা হিসেবে জাতিসংঘে অনুমোদন করিয়ে এই চুক্তিকে স্বীকৃতি দেয়া যেতে পারে। এই সমঝোতা বাস্তবায়নের ইচ্ছা যদি ইসরাইলের না থাকে তাহলে ইসরাইলের পরাজয় আরও শোচনীয়ভাবে ঘটবে। কারণ যে সমঝোতার প্রস্তাব ভবিষ্যতে অন্যরা তুলে ধরবে তা ইসরাইলের জন্য আরও বেশি নিকৃষ্ট হবে এবং সম্ভবত এ যুদ্ধের ফল হিসেবে ইসরাইলের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। আর তা ঘটলে জীবন ইসরাইলিদের জন্য অনেক কঠিন ও কষ্টকর হয়ে পড়বে।

ইসরাইল যদি এমন একটি সমঝোতা মেনে নিতে বাধ্য হয় যেখানে ইসরাইলের দাবি ও প্রস্তাবগুলোর প্রতিফলন না ঘটে তবে তা হবে ইসরাইলের জন্য সবচেয়ে খারাপ বিষয় ঠিক যেমনটি ঘটেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে। আর এমন অবস্থায় নিষ্পত্তিমূলক বিজয়ের কোনো সম্ভাবনা থাকবে না বরং পরাজয়ের মধ্যেই বিজয়কে খুঁজতে হবে।

এই ইহুদিবাদী গবেষক স্বীকার করেছেন যে বর্তমানে ফিলিস্তিনিরা চলাফেরায়, স্থানান্তর ও পরিবহনের ক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থে মুক্ত নয় এবং এমনকি তাদের জন্য বিশেষ কোনো পাসপোর্টও নেই যা দিয়ে তারা আসা ও যাওয়ার সুবিধা পাবে। তাদের জীবনযাত্রা ইসরাইলের সামরিক কাঠামো, পরিস্থিতি ও খেয়াল-খুশির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত। #