১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ - ১৬:৪০
তেহরানে ইসলামী ঐক্য সম্মেলনের বিবৃতি প্রকাশ: 'নয়া মুসলিম সভ্যতা' গড়ে তোলার অঙ্গিকার

তেহরানে অনুষ্ঠিত ইসলামী ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত ৩০তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন বিবৃতি প্রকাশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আরো সতর্কতা এবং মুসলিম ঐক্য জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করে আন্তর্জাতিক ইসলামী ঐক্য সম্মেলন শেষ হয়।

আবনা ডেস্ক: তেহরানে অনুষ্ঠিত ইসলামী ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত ৩০তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন বিবৃতি প্রকাশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আরো সতর্কতা এবং মুসলিম ঐক্য জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করে আন্তর্জাতিক ইসলামী ঐক্য সম্মেলন শেষ হয়।
২৭টি ধারায় প্রণীত ওই বিবৃতিতে মুসলিম দেশগুলোর সর্বশেষ অবস্থা খতিয়ে দেখা এবং মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ রোধে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের ওপর। এ ছাড়া, তাকফিরি সন্ত্রাসীদের অপরাধযজ্ঞ মোকাবেলায় মুসলিম ঐক্য জোরদার করার উপায় খুঁজে বের করার বিষয়টি তিনদিনের এই আলোচনায় বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। তাকফিরি চিন্তাভাবনা ও তার কুফল এবং নয়া মুসলিম সভ্যতা গড়ে তুলতে মুসলিম উম্মাহর লক্ষ্য বাস্তবায়নের নানা দিক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক ইসলামী ঐক্য সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা মুসলিম ঐক্য ধ্বংস এবং মুসলমানদের বিভিন্ন মাজহাবের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি, বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়া ও রক্তপাত ঘটানোর পেছনে উগ্র তাকফিরিদের ভূমিকার বিষয়টি আরো ভালোভাবে পর্যালোচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তাদের মতে, উগ্র তাকফিরি চিন্তা-চেতনা মুসলিম ঐক্যের পথে সবচেয়ে বড়া বাধা। এ অবস্থায় যারা ঐক্যে বিশ্বাসী তাদের উচিৎ হবে তাকফিরিদের মোকাবেলার বিষয়টিকে সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেয়া। আন্তর্জাতিক মুসলিম ঐক্য সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা তাদের বিবৃতিতে মুসলিম উম্মাহকে পিছিয়ে রাখা ও দুর্বল করার জন্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর ষড়যন্ত্র চিহ্নিত করা এবং তাদের মোকাবেলায় মুসলিম উম্মাহর সতর্কতা ও জাগরণের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া, বিবৃতিতে, ইরাক ও সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সেদেশের জনগণের বিজয়কেও শুভেচ্ছা জানিয়ে ওই দেশ দুটিতে দ্রুত শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসার ব্যাপারেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। তারা ইয়েমেনে সৌদি গণহত্যা বন্ধেরও দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে গতকাল ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, মার্কিন ও ইহুদিবাদীরা মুসলমানদের জন্য যে দুর্দশা তৈরি করেছে তা থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, “আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারি এবং ইসলামি লক্ষ্যের দিকে এগুতে পরি তাহলে ক্ষতিকর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী ও ইহুদিবাদী শক্তি বিভিন্ন দেশকে তাদের কব্জায় রাখতে পারবে না।” মহানবী হযরত মুহাম্মাদ(স.) এর পবিত্র জন্মবার্ষিকী ও ইসলামি ঐক্য সপ্তাহ উপলক্ষে তেহরানে আয়োজিত আন্তর্জাতিক ইসলামি সম্মেলনে অংশ নেয়া রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা, কূটনীতিক প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সর্বোচ্চ নেতা পরিষ্কার করে বলেন, আজকের দিনে মুসলিম বিশ্ব যে মহা বিপদের মোকাবেলা করছে তার থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় হচ্ছে ঐক্য। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত আজ মুসলমানেরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। এরমধ্যে কেউ মারা যাচ্ছে বোকো হারামের হাতে, কেউ উগ্র বৌদ্ধদের হাতে। তিনি বলেন, শিয়া ইসলামের ব্রিটিশ ভার্সন এবং সুন্নি ইসলামের মার্কিন ভার্সন তৈরি করে মুসলমানদের একে অপরের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এ দুটো হচ্ছে একই ছুরির দুই ধার। #