১৬ আগস্ট ২০২৫ - ০১:৪৮
বাংলাদেশে বিপ্লবের এক বছর, আশা পরিণত হচ্ছে হতাশায়

ছাত্ররা বাংলাদেশের পুনর্গঠন চেয়েছিলেন। তারা একটি বৈষম্যহীন এবং কম দুর্নীতিগ্রস্ত গণতান্ত্রিক দেশ চেয়েছিলেন।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে: এক বছর আগে, বাংলাদেশের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ছাত্রদের ওপর নির্মম দমন পীড়ন চালান। তখন আবু সাঈদ রংপুর শহরে সশস্ত্র পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনে সাহসী ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে, দুই হাত প্রসারিত করে প্রতিবাদ জানান। মুহূর্তের মধ্যেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে আহত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। 



গণ-অভ্যুত্থানে নিহত প্রায় ১৪০০ জনের মধ্যে আবু সাঈদ একজন। এই অভ্যুত্থানেই শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের পতন ঘটে। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। তিনি এমন একটি দেশ ছেড়ে যান, যা অরাজকতার শেষসীমায় পৌঁছেছিল। তবে আশার আলোও ছিল।

ছাত্ররা বাংলাদেশের পুনর্গঠন চেয়েছিলেন। তারা একটি বৈষম্যহীন এবং কম দুর্নীতিগ্রস্ত গণতান্ত্রিক দেশ চেয়েছিলেন। এই আশা নিয়ে তারা নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগে সহায়তা করে। বাংলাদেশকে অস্থিরতা থেকে স্থিতিশীলতার দিকে নেতৃত্ব দেওয়ার কাজটি গ্রহণ করেছিলেন তিনি।

তবে অনেক বাংলাদেশি পরিবর্তনের ধীরগতি নিয়ে হতাশ। তারা ভাবছেন, আবু সাঈদের মতো প্রতিবাদকারীরা কি তাদের জীবন বৃথাই ত্যাগ করেছেন! নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিপ্লবের এক বছর পর, বাংলাদেশের পরিবর্তনের ধীরগতি ঘিরে উদ্বেগ, অর্থনীতি ও পরিচিত সমস্যাগুলো নির্মূল না হওয়া নিয়ে বিশদ আলোচনা।

ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখনও দুর্নীতি, মুদ্রাস্ফীতি, কর্মসংস্থানের ঘাটতি এবং গেঁথে বসা আমলাতন্ত্রের মতো প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যাগুলো দূর করতে হিমশিম খাচ্ছে। এসব সমস্যাও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভকে উসকে দিয়েছিল।

ছাত্ররা চাইছেন, গণতান্ত্রিক সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়িত হোক। তারা চাইছেন, গত বছরের আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় যেসব রাজনৈতিক দলের সদস্য ও পুলিশ কর্মকর্তারা জড়িত তাদের দ্রুত শাস্তি কার্যকর হোক।

আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, ‘আমার কষ্ট হয়। আমরা ভাবছিলাম দেশ নৈতিকভাবে উন্নত হবে, বৈষম্য দূর হবে, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, হত্যাকারীরা শাস্তি পাবে, আর সেই শাস্তি অপরাধীদের ভয় দেখাবে। কিন্তু এমন কিছুই ঘটেনি।’

তবে রমজানের মতে, ইউনূস না থাকলে পরিস্থিতি হয়তো আরও খারাপ হতো।

নতুন সূচনা

বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র ও দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের সংস্কার করার ভার এখন মূলত ড. ইউনূসের কাঁধে। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যেখানে এখনও বিভাজন রয়েছে এবং এখানে প্রায় ৬০টি রাজনৈতিক দল সক্রিয়।

ড. ইউনূসের প্রথম কাজ ছিল আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। বিপ্লবের পর লুটপাট, দাঙ্গা এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছিল। যদিও এখন বাংলাদেশ কিছুটা স্থিতিশীল। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, সরকার হিন্দু সংখ্যালঘু এবং শেখ হাসিনার সমর্থকদের ওপর সহিংসতার ঘটনা নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট কাজ করেনি। আর ইসলামি উগ্রবাদীরাও এখানে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করেছে।

ইউনূসের পরবর্তী লক্ষ্য ছিল, একটি ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচি শুরু করা। এ লক্ষ্যে সংস্কারের প্রস্তাব দিতে তিনি ১১টি কমিশন তৈরি করেন, যার মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা এবং পুলিশ সংস্কার অন্তর্ভুক্ত। এর সামগ্রিক লক্ষ্য ছিল, শেখ হাসিনা ক্ষমতা ধরে রাখতে যেসব প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন এনেছিলেন সেগুলোর সংস্কার করা। কিন্তু এই সংস্কারের কমই বাস্তবায়িত হয়েছে। এর আশাও এখন হাল ছাড়ার অবস্থায়। 

আন্দোলনের সময় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন। তিনি বলেন, এখন সবকিছু যেন বিশৃঙ্খল মনে হচ্ছে। আমাদের স্বপ্নগুলো এখনও পূরণ হয়নি।

তিনি জানান, ছাত্রনেতারা তাড়াহুড়োর মধ্যে পরিকল্পনা শুরু করেছিল, তা এখন ফিকে হয়ে আসছে।  

গত সপ্তাহে ড. ইউনূস ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশের পুনর্গঠিত ভোটিং সিস্টেমের অধীনে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদিও রাজনৈতিক দলের মধ্যে মতবিরোধের কারণে এখনও অনেক বিষয়ের সমাধান বাকি রয়েছে।

শেখ হাসিনার পতনের বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে ইউনূস বলেছেন, তার সরকার সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ পেয়েছিল। তবে এটি ধীরে ধীরে পুনর্গঠন করা হচ্ছে। তিনি জানান, তার সরকার নির্বাচিত সরকারের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব হস্তান্তর করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ইউনূসের ক্ষমতার অর্ধেক সময়ই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ সংক্রান্ত আলোচনায় কেটে গেছে। 

শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের শক্তি হারানোর পর বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটি জোর দিয়ে বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে শুধু মুক্ত ও ন্যায়সঙ্গত নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত। অন্যান্য পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নির্বাচিত সরকারের হাতে রাখা উচিত।

তবে দেশের সবচেয়ে বড় ইসলামিক দল জামায়াতে ইসলামিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল আরও সংস্কারের পর নির্বাচন চাইছে।

বাংলাদেশের কমিশনগুলোর সংস্কার প্রস্তাব তদারকি করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল দুই মাস ধরে সংবিধান ও শাসন সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। এই আলোচনায় কোনও তিক্ত বাক্য বিনিময় হয়নি, যা অগ্রগতির আশাব্যঞ্জক চিত্র ফুটিয়ে তোলে। বিভিন্ন দল স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ও প্রধানমন্ত্রী পদে মেয়াদের সীমাবদ্ধতার মতো বিষয়গুলোতে একমত হয়েছে।  

রাজনৈতিক বিভাজন

১৭ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে রাজনৈতিক দিশা প্রধানত দুটি রাজনৈতিক বংশপরম্পরার দ্বারা নির্ধারিত হয়েছে। দেশটির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা। অপরদিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় থাকা ও পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি হওয়া সামরিক কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন, যা এখন লন্ডন থেকে তার ছেলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

একসময় দুই প্রধান রাজনৈতিক দল নিয়মিতভাবে ক্ষমতার দায়িত্ব একে অপরকে হস্তান্তর করতো। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে শেষ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করতে অস্বীকার করে। তারা সেটিকে নির্বাচনি জালিয়াতি বলে অভিহিত করেছিল। তবে আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগই অনুপস্থিত থাকতে পারে, যেহেতু দেশের মধ্যে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ।  

নতুন রাজনৈতিক দলগুলো গ্রামীণ ও মফস্বলে এলাকায় তাদের প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতা নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকার থেকে বেরিয়ে গিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন করেন। গত জুলাই মাসে জনগণের সমর্থন জোগাতে তারা দেশজুড়ে পদযাত্রা করেন।  

সব দলেই তরুণ ভোটাররা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর গড় বয়স প্রায় ২৬ এবং দেশের অনেক তরুণই এমন সময় বড় হয়েছে যখন তারা শুধু হাসিনার শাসনই দেখেছে।

চলচ্চিত্র নির্মাতা সাঈদ খান সাগর বলেন, ‘আমরা, এই প্রজন্ম, গণতন্ত্রকে ভালোভাবে বুঝি না, কারণ আমরা এটি কখনও দেখিনি। সুতরাং রাষ্ট্র নিশ্চিত করবে নাগরিকরা শান্তিতে জীবনযাপন করবে, কোনও ধরনের ভয়ের ছায়া ছাড়া।’

ঢাকায় কাজ করা বাংলাদেশি-আমেরিকান থাহিতুন মারিয়ামের আশঙ্কা, আরেকটি সাধারণ সমস্যা ঠিকমতো সমাধান হবে না। সেটি হলো প্রথাগত সমাজে নারীদের অবমূল্যায়ন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এবং সংস্কার কেবল পুরুষ-কেন্দ্রিক, পুরুষ-প্রধান রাজনৈতিক বাস্তবতা পুনরায় তৈরি করবে।’

যেসব নারী শিক্ষার্থী ২০২৪ সালের প্রতিবাদে দৃশ্যমান ভূমিকা নিয়েছিল তাদের এখন জনসমক্ষে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু মারিয়ামের আশা, বাংলাদেশের নতুন গণতন্ত্র আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রমাণিত হবে।

দ্বন্দ্বপূর্ণ অনুভূতি

৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের বছর পূর্তির দিন ঢাকায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ সন্ধ্যার হালকা বৃষ্টির মধ্যে ইউনূসের ভাষণ শোনার জন্য জমায়েত হন রাজধানীতে। ইউনূস ভাষণে বলেন, ‘গত বছরের গণ আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের জাতীয় নায়ক হিসেবে গণ্য করা হবে এবং বাংলাদেশ শহীদদের পরিবার, আহত যোদ্ধা ও ছাত্র আন্দোলনকারীদের আইনি সুরক্ষা দেবে। এটি শুনে অনেক শ্রোতাই উল্লাস প্রকাশ করেন।’ 

তবে এই উদযাপন ঢাকা পড়ে যায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভে। কারণ ২০২৪ সালের জুলাই মাসের হত্যার দোষীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিপ্লবের প্রতিশ্রুতি এখনও পূর্ণ হয়নি।

আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী জানান, তিনি তার ভাইকে গুলি করার অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন। তবে এতে খুব কম অগ্রগতি হয়েছে। এই আদালতটি ২০০৯ সালে  হাসিনাই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 

আলী বলেন, ‘আবু সাঈদ এই আন্দোলনের একজন উল্লেখযোগ্য শহীদ। যদি তার মামলা ঠিকভাবে পরিচালিত না হয়, তাহলে বাংলাদেশ কখনও ন্যায়বিচার পাবে?’

ট্রাইব্যুনাল হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে হাসিনার বিরুদ্ধে তার অনুপস্থিতিতে বিচার চালাচ্ছে। গত সপ্তাহে তিনি ভারতে থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন, যেখানে তিনি ছাত্র বিপ্লবকে কঠিনভাবে অর্জিত গণতন্ত্রের একটি সহিংস ব্যাঘাত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

বাংলাদেশের নেতৃত্বকেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে মানবাধিকার কর্মীদের কাছে। তারা বলছেন, নতুন বাংলাদেশে কোনও স্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের উপ-পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে লিখেছেন, ‘অস্থায়ী সরকার যেন আটকে আছে। বাংলাদেশের অপরিবর্তিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, কখনও কখনো সহিংস ধর্মীয় চরমপন্থা এবং রাজনৈতিক দলগুলো বাংলাদেশের নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করার পরিবর্তে হাসিনার সমর্থকদের প্রতি প্রতিশোধ নেওয়াকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।’

বাংলাদেশে অর্থনীতি ধীরগতিতে এগোচ্ছে। এ অবস্থায় দেশটির অধিকাংশ মানুষজনের দৈনন্দিন জীবনেও উদ্বেগ বাড়ছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, গত বছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২০২৩-এর চেয়ে ৫.৮ শতাংশ থেকে কমে ৪.২ শতাংশে নেমেছে।

ঢাকার এয়ার কন্ডিশনার ও ফ্রিজ মেরামতের দোকান চালানো ৩৭ বছর বয়সী আবদুল কাদের জানান, গণ-অভ্যুত্থানের পর তার আয় ১০ শতাংশ কমেছে।  তিনি বলেন, ‘মানুষের কাছে মনে হচ্ছে পর্যাপ্ত টাকা নেই, আর যারা টাকার মালিক তারা খরচ করতে চাচ্ছেন না।’

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha