২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১৬:৫০
নেতানিয়াহু ইরাককে হুমকি দিল/পাল্টা হুঁশিয়ারি ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানানো অবস্থায় নেতানিয়াহু বক্তব্যের শুরুতেই ইরান ও আঞ্চলিক প্রতিরোধ আন্দোলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে। এর পর সরাসরি ইরাকের প্রতিরোধকামী গোষ্ঠীগুলোকেও হুমকি দেয় এবং প্রকাশ্যে তারা টার্গেট বলে ঘোষণা করে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): এই হুমকিকে ইরাকের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে বর্ণনা করে ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেইন বলেন, “ইরাকের একজন নাগরিকের ওপর হামলা মানেই পুরো দেশের ওপর হামলা হিসেবে গণ্য হবে।”



এক সাক্ষাৎকারে বিশ্লেষক মোহাম্মদ বাগের হেইদারি বলেন, নেতানিয়াহুর এমন বক্তব্য নতুন নয়। ইসরায়েলি নেতারা বিভিন্ন সময়ে ইরাকের প্রতিরোধ শক্তির বিরুদ্ধে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। প্রায় এক বছর আগে ইরাক এ বিষয়ে জাতিসংঘে অভিযোগও করেছিল।

হেইদারির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ইসরায়েলের ইরাক-সংক্রান্ত নীতি দুই মাত্রায় বিভক্ত—একটি আঞ্চলিক, অন্যটি ইরাকের ভেতরকার। আঞ্চলিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইরাককে আলাদাভাবে দেখা হয় না; বরং গোটা অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার, “গ্রেটার মিডল ইস্ট” পরিকল্পনা ও কথিত “ডেভিড করিডোর” বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।

হেইদারি বলেন, ইসরায়েল শুরু থেকেই সাতটি ফ্রন্টে সক্রিয় হওয়ার কথা বলেছে—গাজা, পশ্চিম তীর, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন, ইরান ও ইরাক। এর মধ্যে ছয়টি ফ্রন্টে তারা ইতিমধ্যে সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে; বাকি ছিল ইরাক।

তিনি আরও বলেন, ইরাকের প্রতিরোধকামী গোষ্ঠীগুলো একক সংগঠন নয়, বিভিন্ন দল রয়েছে। ফলে সামরিক ও কৌশলগত হিসাব আলাদা। আবার দেশটির কার্যকর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই, সীমান্তও নেই ইসরায়েলের সঙ্গে। যে কোনো হামলা হলে তা আকাশপথে আসবে, আর বর্তমানে ইরাকের আকাশসীমা কার্যত উন্মুক্ত।

প্রতিরোধকামী গোষ্ঠীগুলোর ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রায় এক বছর আগে এসব গোষ্ঠী ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির মধ্যে একটি সমঝোতা হয়। তখন গাজার হামলার প্রেক্ষিতে ইরাকি প্রতিরোধকামী গোষ্ঠীগুলো ‘ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স অব ইরাক’ নামে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিদিন ইসরায়েল লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাত। পরে সাদরে সমঝোতায় তারা সাময়িকভাবে থেমে যায়। তবে ইসরায়েল ইরাককে আঘাত করলে প্রতিরোধকামী গোষ্ঠীগুলো আবার হামলায় নামবে বলে তখনই সিদ্ধান্ত হয়।

হেইদারি বলেন, কেবল প্রতিরোধ গোষ্ঠী নয়—ইরাকের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সম্পদ এখন মূল টার্গেট। গত কয়েক বছর ধরে যে শান্তি বিরাজ করছিল, সেটি নষ্ট করার পরিকল্পনা চলছে বলে মনে হয়।

Tags

Your Comment

You are replying to: .
captcha