আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ইসরায়েলি বাহিনী রাতারাতি গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলে বোমা হামলা বাড়িয়েছে।
একযোগে বিমান হামলা ও ট্যাংকের গোলাবর্ষণে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া এতে বিধ্বস্ত অঞ্চলের আরও বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এদিকে ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থি গোষ্ঠী হামাস মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ফিরতে প্রস্তুত।
স্থানীয় বাসিন্দা ও চিকিৎসকরা জানান, জাইতুন এলাকার একটি বাড়িতে ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলা আঘাত হানলে আটজন নিহত হয়। কাছের শুজাইয়া উপশহরের একটি ভবনে বিমান হামলায় একজন নিহত হন। টুফাহ উপশহরে ট্যাংকের গোলায় আরও দুজন মারা যান।
স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা জাইতুন এলাকা থেকে আটকে পড়া পরিবারের কল পেয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকে আহত অবস্থায় ছিলেন। তবে অ্যাম্বুলেন্স সেখানে পৌঁছাতে পারেনি।
গাজা সিটির ৪০ বছর বয়সী বাসিন্দা ইসমাইল বলেন, পূর্ব গাজার বিশেষ করে জাইতুন ও শুজাইয়ায় অবিরাম বিস্ফোরণ হচ্ছে। ইসরায়েল সেখানে ঘরবাড়ি মুছে ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, রাতে আমরা নিরাপত্তার জন্য প্রার্থনা করি। কারণ বিস্ফোরণের শব্দ ক্রমেই জোরালো ও কাছে চলে আসে। আমরা আশা করি মিসর যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিশ্চিত করতে পারবে। তার আগে যেন আমরা সবাই মারা না যাই।
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের ২২ মাস পেরিয়ে গেলেও বাসিন্দারা ক্রমবর্ধমান ক্ষুধা সংকটের সঙ্গেও লড়াই করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও চার জন মারা গেছেন। এতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৯। এর মধ্যে ১০৬ জন শিশু।
ইসরায়েল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া অপুষ্টি ও ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যার বিরোধিতা করেছে।
পরিকল্পিত সামরিক উত্তেজনা এড়াতে মিসর গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে এবং হামাসের একটি প্রতিনিধি দলকে আশ্রয় দিয়েছে। এই দলের নেতৃত্বে আছেন গোষ্ঠীর প্রধান আলোচক খালিল আল-হাইয়া।
তিনি বুধবার কায়রোতে মধ্যস্থতাকারীদের জানান, হামাস অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি অর্জনের জন্য আলোচনায় ফিরতে প্রস্তুত এবং যুদ্ধ শেষ করার জন্য একটি সর্বসম্মত চুক্তি নিয়েও আলোচনা করতে আগ্রহী। এমনটি জানিয়েছে মিসরীয় ও ফিলিস্তিনি সূত্র।
সবশেষ কাতারে পরোক্ষ আলোচনার রাউন্ড জুলাইয়ের শেষ দিকে অচলাবস্থায় শেষ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির চুক্তিতে অগ্রগতি না হওয়ার জন্য ইসরায়েল ও হামাস একে অপরকে দোষারোপ করে।
মূল ইস্যুগুলোতে উভয় পক্ষের মধ্যে ফারাক রয়ে গেছে। যার মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের সামরিক প্রত্যাহারের পরিমাণ এবং হামাসকে নিরস্ত্র করার দাবি।
যুদ্ধ শুরু হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১,২০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে। এরপর থেকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযানে ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
Your Comment