আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): জাগরেব ইয়ুথ ক্লাবের আয়োজনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়, যার মূল লক্ষ্য ছিল তরুণদের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলা ও ধর্মীয় পরিচয়কে আরও দৃঢ় করা।
সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিসাক ইসলামিক সেন্টারের ইমাম আলেম ক্রনকিচ, যিনি ‘তিনটি হাদিস—নবীর শিক্ষামূলক স্কুলের তিনটি ভিত্তি’ শীর্ষক বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর হাদিসের আলোকে ইসলামী নীতিশাস্ত্র, মানবিক আবেগ ও আদর্শ ব্যক্তিত্বের মূল দিকগুলো তুলে ধরেন।
ইমাম ক্রনকিচ বলেন, নবীর শিক্ষায় এমন তিনটি মৌলিক নীতি রয়েছে, যা ইসলামী জীবনের সৌন্দর্য প্রকাশ করে—ভালোবাসা ও করুণা, উপকার ও কর্ম, এবং উত্তম চরিত্র। তাঁর মতে, এই নীতিগুলোর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষা শুধু জ্ঞান দেয় না, বরং ঈমানের মাধুর্য ও আত্মার সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে।
প্রথম নীতি হিসেবে তিনি তুলে ধরেন ভালোবাসা ও করুণার শিক্ষা। নবী (সা.)-এর বাণী উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘তোমাদের কেউ প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা ভালোবাসে, তা তার ভাইয়ের জন্যও ভালোবাসে।’
তিনি ব্যাখ্যা করেন, প্রকৃত ঈমানের সূচনা হয় একটি বিশুদ্ধ হৃদয় থেকে, যা অন্যদের কল্যাণ কামনা করে এবং ভালোবাসা ও সহমর্মিতায় গঠিত সমাজ প্রতিষ্ঠা করে।
দ্বিতীয় নীতি হিসেবে তিনি আলোচনা করেন উপকার ও কর্মের নীতি। নবীর আরেকটি হাদিস উল্লেখ করে বলেন, ‘মানুষের মধ্যে সর্বোত্তম তারা, যারা অন্যদের জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী।’
তিনি বলেন, ঈমান কেবল মুখের কথায় নয়; তা প্রকাশ পায় কর্মে, সমাজের কল্যাণে এবং মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টির মাধ্যমে।
তৃতীয় নীতি হিসেবে ইমাম ক্রনকিচ উল্লেখ করেন উত্তম চরিত্রের গুরুত্ব। নবীর বাণী উদ্ধৃত করে বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে কাছে থাকবে সেই ব্যক্তি, যার চরিত্র সবচেয়ে উত্তম।’ তিনি বলেন, নৈতিকতা হলো ঈমানের আয়না, আর চরিত্রকে শুদ্ধ করা ইসলামী জীবনের প্রকৃত সার্থকতা।
বক্তৃতার শেষে তিনি তরুণদের প্রতি আহ্বান জানান নিজেদের হৃদয়ে ভালোবাসা ধারণ করা, অন্যদের সাহায্যে এগিয়ে আসা এবং উত্তম চরিত্র গড়ে তোলার প্রতি। সেমিনারে তরুণরা নবীর হাদিসের শিক্ষা হৃদয়ে ধারণ করে নিজেদের জীবনকে আলোকিত করার অঙ্গীকার করেন।
Your Comment