পাকিস্তানের ইংরেজি গণমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, গত বছরের ৯ মে'র দাঙ্গাসংশ্লিষ্ট ১২টি মামলায় এক শুনানি শেষে আজ (শনিবার) রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের (এটিসি) বিচারক মালিক ইজাজ আসিফ ইমরান খানের জামিন মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর এবং সেনা জাদুঘরে হামলা নিয়ে আরও দুই মামলায় তাকে জামিন দিয়েছে আদালত। অন্যদিকে ইমরান সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিটিআইয়ের নেতা শাহ মাহমুদ কুরেশি ১৩টি মামলায় জামিন পেয়েছেন।
ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কুরেশির জামিন আবেদনের বিপরীতে রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলার শুনানির জন্য অতিরিক্ত সময়ের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দুজনেরই মামলাগুলোতে জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে, পাঞ্জাবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৯ মের দাঙ্গা সম্পর্কিত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেয় আদালতে। সেখানে বলা হয়েছে—পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পরে সামরিক স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ করা হয়েছিল। তবে ঘটনাগুলো পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে প্রকাশ করেছে। পাঞ্জাব সরকার প্রকাশিত ১৭ পৃষ্ঠার ওই তদন্ত প্রতিবেদন পাকিস্তানের আইন ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি অনুমোদন করেছে। প্রতিবেদনে আনুষ্ঠানিকভাবে লাহোরে ৯ মে সহিংসতার জন্য ইমরান খান ও পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দায়ী করা হয়।
প্রতিবেদনে ৯ মে সংঘটিত ঘটনাগুলোকে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, সামরিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং এই হামলাগুলো পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃত্বের নির্দেশে করা হয়েছিল।
গত ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজিরা গেলে গ্রেফতার হন ইমরান খান। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে সারাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিক্ষোভ থেকে হামলা হয় সেনা স্থাপনায়। এসব হামলার ঘটনায় ইমরান খানের নামে বেশ কয়েকটি মামলা দেওয়া হয়।অবশ্য ২০২২ সালে সংসদে অনাস্থা ভোটে হেরে সরকার থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক আইনি জটিলতায় পড়ছেন ইমরান খান। তার নামে প্রায় ২০০ মামলা দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি চার মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ইমরানকে ৩৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১০ বছরের জন্য তাকে নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে পিটিআই ও ইমরান-সমর্থকদের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে এসব সাজা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কারাগারে বন্দি তিনি।#