বিভিন্ন বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ ইঙ্গিত করে যে লেবাননের হিজবুল্লাহকে মোকাবেলা করার জন্য অধিকৃত উত্তরাঞ্চলে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ইসরাইলি সেনা ইউনিট অবস্থান নিয়েছে। সেখানে বিপুল সংখ্যক সামরিক যান এবং সেনা মোতায়েন থাকায় ইসরাইলি বাহিনীকে এক নতুন ফ্রেন্টে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে এবং এর ফলে গাজা কম চাপের মধ্যে রয়েছে।
ইহুদিবাদী সূত্র ঘোষণা করেছে যে লেবাননের হিজবুল্লাহ অধিকৃত উত্তরাঞ্চলের দিকে প্রায় ৪ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট নিক্ষেপ করেছে। এর ফলে অধিকৃত ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চল থেকে প্রায় ২ লাখের বেশি ইহুদি বসতিকে বাস্তুচ্যুত করা সম্ভব হয়েছে।
এই বিষয়গুলো ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে এবং এতে তাদের জন্য ব্যাপক ক্ষতি বয়ে নিয়ে এনেছে।
গত দিনগুলোতে দক্ষিণ লেবাননের বিভিন্ন এলাকায় বোমা হামলা ছাড়াও ইসরাইলি সেনারা হিজবুল্লাহ কমান্ডারদের হত্যার লক্ষে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে আসছে। হিজবুল্লাহও পাল্টা প্রতিশোধ নিতে ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলকৃত ভূখণ্ডের গভীরে বিভিন্ন হামলাও চালিয়েছে। অধিকৃত ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চলে লেবাননের হিজবুল্লাহর হামলা বন্ধ করার জন্য ইসরাইল প্রায় সবকিছুই করেছে, কিন্তু তার সমস্ত প্রচেষ্টা ও কর্মকাণ্ড ব্যর্থ হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে অধিকৃত জেরুজালেম শাসক গোষ্ঠীর সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট জোর দিয়ে বলেছিলেন,
উত্তরাঞ্চলে ইসরাইলের সমস্ত প্রচেষ্টা এবং উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে এবং এটিই হিজবুল্লাহ যে তেল আবিবের উপর তার কাঙ্ক্ষিত এজেন্ডা চাপিয়ে দিয়েছে।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা বৃদ্ধির আবহের মধ্যেই লেবাননের হিজবুল্লাহ অস্ত্র ও সামরিক কৌশলের ক্ষেত্রে নিত্য নতুন এবং আশ্চর্যজনক আবিষ্কার অব্যাহত রেখেছে। এই সমস্যা জেরুজালেম আল কুদস দখলদার শাসক গোষ্ঠীর জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
উদাহরণস্বরূপ, অধিকৃত ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে একটি ইহুদিবাদী সামরিক ঘাঁটিতে লেবাননের হিজবুল্লাহর সামরিক ইউনিটের সাম্প্রতিক ড্রোন হামলায় ২০ জনেরও বেশি ইসরাইলি সামরিক কমান্ডার হতাহত হয়েছেন। এই বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে ইহুদিবাদী সামরিক বিশেষজ্ঞরা সেখানে হিজবুল্লাহর সামরিক তথ্য প্রাপ্তিতে খুবই বিস্মিত হয়েছিলেন।
এত কিছুর পরও হিজবুল্লাহর ব্যাপারে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সাত মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও এই অবৈধ শাসক গোষ্ঠী গাজার অভ্যন্তরে তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং একই সঙ্গে হিজবুল্লাহর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অক্ষম প্রমাণিত হয়েছে। ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী উত্তরাঞ্চলে বসবাসকারী হাজার হাজার ইহুদিবাদীদের জন্যও কিছুই করতে পারে নি যারা হিজবুল্লাহর হামলার ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
এটাকে অবৈধ ইহুদিবাদী শাসনের জন্য খুবই খারাপ পরাজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই সমস্যার মূল কারণ হল লেবাননের হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র ও অস্ত্র ভাণ্ডারে দেড় লাখেরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিভিন্ন শ্রেণীর ড্রোন রয়েছে। হিজবুল্লাহর কাছে রয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষিত কমান্ডো বাহিনীও। বিগত বছরগুলোতে হিজবুল্লাহ সাঁজোয়া এবং বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট গঠন করতে সক্ষম হয়েছে। এই সমস্ত সমীকরণ লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরাইলের কোনো ধরনের হঠকারিতা বা দুঃসাহসিক অভিযানের ক্ষেত্রে এই সরকারের জন্য হতাশাজনক পরিস্থিতিই কেবল বয়ে আনতে পারে।#