আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): গাদিরে খুমের ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই দিনে ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর শেষ হজ্ব (বিদায় হজ্ব) থেকে ফেরার পথে গাদিরে খুম নামক স্থানে আলী বিন আবি তালিব(আ.)কে তাঁর উত্তরসূরি ও অভিভাবক হিসেবে পরিচয় করিয়েছিলেন। এই ঘটনাটি ১০ হিজরির ১৮ই জিলহজ তারিখে ঘটেছিল।
ঘটনার বিবরণ
১) ইসলামের নবী হজ্ব শেষ করে মদিনায় ফেরার পথে গাদিরে খুম নামক স্থানে থামেন।
২) জিব্রাইল (আ.) প্রিয় নবীর কাছে আসেন এবং সূরা মায়েদার ৬৭ নম্বর আয়াতটি জানান, যেখানে আল্লাহ নবীকে নির্দেশ দিয়েছেন যে তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা যেন তিনি মানুষের কাছে পৌঁছে দেন। যদি তিনি তা না করেন, তবে তিনি তাঁর রিসালাত (নবুওয়তের দায়িত্ব) পালন করেননি এবং আল্লাহ তাঁকে মানুষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করবেন।
يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ ﴿۶۷﴾
৩) নবীজী (সা.) থামার নির্দেশ দেন এবং সমস্ত হাজিদেরকে একত্রে হতে বলেন।
৪) নবীজীর জন্য উটের হাওদা দিয়ে একটি মঞ্চ তৈরি করা হয় এবং তিনি তার উপরে উঠে বিশাল জনসমাবেশে আলী বিন আবি তালিবকে তাঁর উত্তরসূরি ও অভিভাবকহিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
৫) নবীজী উচ্চস্বরে বলেন: “আমি যার মাওলা (অভিভাবক), আলীও তার মাওলা।” এবং তিনি এই কথাটি তিনবার পুনরাবৃত্তি করেন।

« مَنْ كُنْتُ مَوْلَاهُ فَهَذَا عَلِيٌّ مَوْلَاهُ »
৬) তারপর উপস্থিত লোকেরা আলী (আ.)-এর সাথে বাইয়াত (আনুগত্যের শপথ) করেন এবং তাঁকে অভিনন্দন জানান।
ঘটনার গুরুত্ব
ক) শিয়াদের দৃষ্টিতে, এই ঘটনাটি ইসলামের নবীর উত্তরসূরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
খ) শিয়া মুসলিমরা বিশ্বাস করেন যে এই দিনে নবী (সা.) আনুষ্ঠানিকভাবে আলী বিন আবি তালিবের উত্তরাধিকার ঘোষণা করেছিলেন।
গ) এই দিনটি শিয়াদের কাছে ঈদ-ই-গাদির নামে পরিচিত এবং এটি ইসলামের অন্যতম প্রধান উৎসব।
ঘ) গাদির খুমের ঘটনা শিয়া ও সুন্নি উভয় উৎসগুলোতে উল্লেখ করা হয়েছে ।
চলবে
Your Comment