৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ২৩:২৫
বিস্ফোরক রোবট

গাজায় ইহুদিবাদী ইসরায়েলের নতুন অপরাধের হাতিয়ার-বিস্ফোরক রোবট

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): গাজায় গত ২৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরায়েলি সেনারা বিভিন্ন ধরণের নিষিদ্ধ এবং ধ্বংসাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করেছে।



এই আক্রমণের নতুন হাতিয়ার 'বোমা ফেলা রোবট' পুরনো সাঁজোয়া যান যা প্রায় পাঁচ টন বিস্ফোরক দিয়ে ভরা থাকে এবং দূরবর্তী আবাসিক এলাকায় হামলা চালায়।

ফিলিস্তিন ইনফরমেশন সেন্টার একটি প্রতিবেদনে লিখেছে, বোমা ফেলা রোবটগুলি লক্ষ্যস্থলে বিস্ফোরিত হয় কখনও স্বয়ংক্রিয়ভাবে অথবা ড্রোন দ্বারা। প্রায় ৩০০ বর্গমিটার ব্যাসার্ধ ধ্বংস করতে পারে এই রোবট।

পার্সটুডে জানিয়েছে, যুদ্ধের প্রথম মাসগুলিতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বেশিরভাগ এফ সিক্সটিন যুদ্ধবিমান এবং নির্ধারিত কিছু বোমা ব্যবহার করত কিন্তু স্মার্ট অস্ত্রের মজুদ কমে যাওয়ার ফলে তারা বিস্ফোরক রোবট ব্যবহার শুরু করে। এই রোবট তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং আরও ধ্বংসাত্মক।

সামরিক বিশেষজ্ঞ ওয়াসেফ এরাকাত বলেছেন, এই পদ্ধতিটি 'পোড়া মাটি' নীতির অংশ। তাদের লক্ষ্য ভীতি তৈরি করা এবং আবাসিক এলাকাগুলিকে খালি করতে বাধ্য করা। শুধুমাত্র দক্ষিণ গাজার জায়তুন এলাকায় ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে এই রোবটের সাহায্যে ১,৫০০ টিরও বেশি বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছিল।

মারাত্মক রোবট এবং বিস্ফোরক ড্রোনের ধরণ

ওয়াসেফ এরাকাত ধ্বংসাত্মক রোবটের দুটি ধরণের কথা বলেছেন। এর একটি হচ্ছে বড় ট্র্যাকড রোবট যা হাঁটার বোমা হিসাবে কাজ করে। আর দ্বিতীয় ধরণের রোবটটি সাইজে ছোট।

এটি ব্যবহার করা হয়  গলি এবং সুড়ঙ্গ ভেদ করার জন্য। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী 'কোয়াডকপ্টার' ড্রোন ব্যবহার করে বাড়িতে বিস্ফোরক ফেলে ধ্বংস করেছে বলেও বলেও প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক আইনজীবীরা এই রোবটগুলিকে অবৈধ অস্ত্রের বলে মনে করেন। রোবটগুলো সামরিক-বেসামরিক তফাৎ না করে এবং মানুষের ওপর গুরুতর মানসিক এবং শারীরিক প্রভাব ফেলে।

এই ধ্বংসাত্মক ডিভাইসগুলি মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ঘটায়। মানুষকে ক্রমাগত ভয় দেখিয়ে গাজা উপত্যকায় তাদের নিরাপদ আশ্রয় ছাড়তে বাধ্য করে।

সামরিক উদ্দেশ্য এবং মানবিক পরিণতি

সামরিক গবেষক রামি আবু জুবাইদাহ এই রোবট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের তিনটি প্রধান উদ্দেশ্যের তালিকার কথা বলেছেন।

নিজস্ব সৈন্যদের হতাহতের সংখ্যা হ্রাস করা, সুড়ঙ্গ এবং প্রতিরক্ষা স্থাপনা উড়িয়ে দেওয়া এবং আশেপাশের এলাকা ব্যাপক ধ্বংসের মাধ্যমে মানসিকভাবে দুর্বল করা।

এই রোবটগুলি প্রথমে ২০২৪ সালের মে মাসে জাবালিয়ায় ব্যবহার করা হয়েছিল এবং তারপর গাজার উত্তর ও দক্ষিণে, এমনকি হাসপাতাল এবং চিকিৎসা কেন্দ্রের কাছেও তাদের ব্যবহারের পরিধি বাড়িয়েছিল।

বিস্ফোরক রোবট থেকে শুরু করে বোমারু ড্রোন পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের হত্যাকাণ্ডের অস্ত্রগুলো প্রমাণ করে যে গাজায় ইসরাইলের অপরাধ গণহত্যা এবং সভ্যতা ধ্বংসের শামিল।

Your Comment

You are replying to: .
captcha