‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
শনিবার

৩০ অক্টোবর ২০২১

৩:৩৮:০৭ PM
1193647

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার সাধারণ পরিষদের সদস্য ‘সৈয়দ তাহের আল-হাশেমি’ জানিয়েছেন: ইরাক সফরে আসছেন আল-আযহারের গ্রান্ড মুফতি ড. ‘আহমাদ আত-তাইয়্যিব’।

হলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): মিসরের সক্রিয় এক শিয়া ব্যক্তিত্বের উদ্ধৃতি দিয়ে জানা গেছে যে, অতি শীঘ্রই ইরাক সফরে আসছেন মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রান্ড মুফতি শাইখ আহমাদ আত-তাইয়্যিব।

জনাব সৈয়দ তাহের আল-হাশেমি এ তথ্য নিশ্চিত করে লিখেছেন: একটি সাহসী এবং অভূতপূর্ব পদক্ষেপে মহানবি (স.)-এর বংশধর শাইখুল আজহার ড. ‘আহমদ আত-তাইয়্যিব’, আমিরুল মুমিনীন আলী ইবনে আবি তালিব (আ.)-এর খিলাফতকালীন রাজধানী এবং ইমামদের দেশ ইরাক সফর করবেন। তাঁর এ সফর ইসলাম ও মুসলমানদের ইতিহাসে একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।

আহলে বাইত (আ.) বিশ্বসংস্থার সাধারণ পরিষদের এ সদস্য মুসলিম উম্মাহ’র ঐক্যের লক্ষ্যে গৃহীত এ পদক্ষেপের জন্য শাইখ আহমাদ আত-তাইয়্যিবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে লিখেছেন: শাইখুল আযহার আহলুস সুন্নাতের সেই স্বনামধন্য আলেম যিনি ‘অন্যদের প্রতি ঘৃণার আহ্বান জানায়’ এমন সব চরমপন্থা এবং আদিম ও গোঁড়ামিপূর্ণ চিন্তাধারার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছেন।

মাযহাবসমূহকে নিকটবর্তী করণের বিষয়ে শাইখুল আযহারের দৃষ্টিভঙ্গী ও আকিদার নমুনা উল্লেখ করতে গিয়ে তাহের আল-হাশেমি বলেন: ‘চেচেন সম্মেলন’-এ তার এ দৃষ্টিভঙ্গী প্রতিফলিত হয়েছে; যা ছিল অভূতপূর্ব। ঐ সম্মেলনে সকল প্রকার উগ্রতাকে মুসলমানদের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রত্যাখ্যাত ঘোষণা করা হয়েছে এবং সম্মেলনের সমাপনী বিবৃতিতেও বলা হয়েছে, ‘কোন ধরনের উগ্রতা ও তাকফিরের স্থান আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআতের মাঝে নেই’।

বিভিন্ন ধর্ম ও মাযহাবসমূহকে নিকটবর্তী করণে গণমাধ্যমে শাইখুল আযহারের তৎপরতার বিষয়ে আল-হাশেমি লিখেছেন: মিসরের একটি টিভি চ্যানেল থেকে সম্প্রচারিত ‘ফিকহুল হায়াত’ অনুষ্ঠানেও শাইখের দৃষ্টিভঙ্গী স্পষ্ট হয়েছে। শাইখ আত-তাইয়্যিব বিশ্বসন্ধি’র একজন ঘোর সমর্থক। পপের সাথে তার বারবার বৈঠক এবং মুসলাম উম্মাহ’র ঐক্যের বিষয়ে তার পুনঃপুনঃ আহ্বান থেকে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়।

শিয়া মাযহাব সম্পর্কে শাইখ আহমাদ তাইয়্যিব’-এর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গীর বিষয়ে তিনি বলেন: তিনি বারবারই এ বিষয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন যে, ‘সুন্নি ও শিয়া মুসলিম উম্মাহর ২ ডানার মত’। এছাড়াওনাজাফেআশরাফে শিয়া ইমামকে ইকতেদা করে তিনি এটা প্রমাণ করবেন যে, তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস মুসলমানরা এক এবং ঘৃণা জন্মদানকারী সাম্প্রদায়িকতা তাদেরকে একে অপর থেকে পৃথক করতে পারবে না।

সাইয়্যেদ হাশেমি বলেন: শাইখুল আযহার তার আসন্ন ইরাক সফরে আয়াতুল্লাহ সিস্তানির সাথে সাক্ষাত করবেন।

তিনি বলেন: আমরা বিশ্বাসী যে, এ সফর এবং এর অনিবার্য ফলাফল ঐ সকল মুসলমানদের জীবন রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে যাদেরকে ইসলামের শত্রুরা তাকফিরি ও সাম্প্রদায়িক ফতওয়া প্রদানের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করেছে। শেখ আত-তাইয়্যিবের ন্যায় আলেমদের অনুপস্থিতির কারণে বিভ্রান্তকারী যে সকল তাকফিরি চিন্তাধারা কিছু কিছু মুসলমানের মনে প্রবেশ করে দ্বীনের স্থায়ী বাস্তবতা হিসেবে স্থান করে নিয়েছে তা দূর হবে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, শাইখুল আযহারের ইরাক সফরের পর মুসলমানদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। অবশ্য শর্ত হল এ সফর যেন শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার মাঝে সীমাবদ্ধ না থাকে এবং গ্রহণযোগ্য অ্যাফিলিয়েশন কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ সফরের অর্জনের বিষয়টি পর্যালোচিত হতে হবে; যা মুসলমানদেরকে পরস্পরের নিকটবর্তী করবে এবং তাদেরকে ঐক্যের প্রতি আহবান জানাবে।

সাইয়্যেদ তাহের আল-হাশেমি শাইখুল আযহারের পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে লিখেছেন: তিনি ‘তারিকাতুল হাসসানিয়্যাহ’ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং বেড়ে উঠেছেন। যে তরিকতের অনুসারীরা  নাফসের সাথে জিহাদকারী ও দুনিয়া বিমুখ হিসেবেই অধিক পরিচিত। ‘মিসর উলইয়া’র (আপার ইজিপ্ট) আল-আকসার শহরে তার জন্ম। এ অঞ্চলের লোকদের দূরদৃষ্টি, প্রজ্ঞা এবং আহলে বাইত (আ.)-এর ভক্ত হিসেবে বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। তারা মালেকি মাযহাবের পাশাপাশি আহলে বাইত (আ.)-এর শিক্ষা ও মারেফত চর্চা করে থাকেন।

সাইয়্যেদ তাহের আল-হাশেমি শাইখুল আযহারের রাজনৈতিক অবস্থান প্রসঙ্গে লিখেছেন: বিশ্বের বলদর্পী শক্তিগুলো এবং মার্কিন-জায়নবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ইসলামকে একটি শক্তিশালী ও প্রতিরোধী বাঁধ হিসেবে দাঁড় করাতে ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যাতে মুসলমানরা পশ্চিমাদের বিপরীতে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন অবস্থানের অধিকারী হয়।

প্রসঙ্গত, ড. আহমাদ আত-তাইয়্যিবের ইরাক সফর এবং নাজাফে আশরাফের মারজাগণের সাথে তাঁর সাক্ষাতের কথা ঘোষিত হলেও তাঁর সফর এবং মারজাগণের সাথে তাঁর সাক্ষাতের তারিখ সম্পর্কে কোন তথ্য এখনও জানানো হয় নি।#১৭৬