সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন বাহিনী বা ইহুদিবাদী শাসকদের অবস্থানে প্রতিটি হামলার পর সাধারণত পাশ্চাত্যের কর্মকতারা এবং গণমাধ্যমগুলো এ অঞ্চলে প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোকে সমর্থন দেয়ার অজুহাতে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানকে হামলার মূল শক্তি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এখানে এটার বলার অপেক্ষা রাখে না যে অবশ্যই ইরান সব সময় বলে আসছে যে তারা ইসলামী প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর ওপর সমর্থন অব্যাহত রাখবে। তবে তেহরান এও জোর দিয়ে বলেছে যে এসব সংগঠন তাদের সিদ্ধান্ত ও কর্মপন্থা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ইরানের কাছ থেকে কোনো নির্দেশ গ্রহণ করে না।
এর আগে সফল আল-আকসা তুফান অভিযান যেটি ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোকামী সংগঠন হামাসের নেতৃত্বে অন্যান্য প্রতিরোধকামী বাহিনী ৭ অক্টোরব শুরু করেছিল এবং ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর প্রতিরোধকে চূর্ণ করেছিল কিছু আমেরিকান এবং জায়নবাদী চক্র এ ধরনের বড় গোয়েন্দা এবং নিরাপত্তা ব্যর্থতা ঢাকার জন্য ইরানকে জড়িয়ে নানা অভিযোগ করেছে।
তারপর ইরাক এবং সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো অক্টোবর থেকে ড্রোন, রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
ইরাক ও সিরিয়াসহ পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের ইসলামি প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর সঙ্গে ইয়েমেনি বাহিনী গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর বর্বরোচিত হামলা এবং এই ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর প্রতি ওয়াশিংটনের সর্বাত্মক সমর্থনের পর বারবার এ অঞ্চলে মার্কিন ঘাটিগুলোকে টার্গেট করার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে।
গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর ক্রমাগত হামলা এবং এ হামলায় জাতিসংঘের সর্বাত্মক সমর্থনের কারণে এই অঞ্চলে সংঘাতের পরিধি বেড়ে হওয়ার বিপদ সম্পর্কে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান বারবার সতর্ক করেছে।
আমেরিকান বাহিনীর মাধ্যমে ইরাক ও সিরিয়ার জাতীয় সার্বভৌমত্বের বারবার লঙ্ঘন এবং ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনের জনগণের বিরুদ্ধে বোমা হামলা পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে চলমান অস্থিতিশীলতার পরিবেশ আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে ইরান বারবার বলে আসছে।
পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সামরিক অবস্থানের বিরুদ্ধে গতকালের পদক্ষেপ যেটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমেরিকার বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্ত হামলার মধ্যে একটি ছিল সেটি গাজা যুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীকে আমেরিকার ব্যাপক সমর্থন এবং এই অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করার ওয়াশিংটনের তৎপরতার ফলাফল বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
অতএব এই অঞ্চলে মার্কিন অবস্থানের উপর হামলার ক্ষেত্রে ইরানের ভূমিকার দাবিকে আঞ্চলিক সংঘাতকে প্রসারিত করার এবং গাজায় ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর গণহত্যা যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও আর্থিক সহায়তা অনুষ্ঠিত হচ্ছে তা থেকে জনগণের দৃষ্টিকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা হিসাবে দেখা উচিত।
আসল বিষয় হল যে প্রতিরোধের বৈধ অধিকারের জন্য ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানের সমর্থন এবং দখলদার ও আগ্রাসী বাহিনীর মোকাবেলা করার জন্য তেহরানের সমর্থন সর্বদা অব্যাহত রয়েছে এবং বহুবার এ বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর কাজ এবং তাদের কর্মকাণ্ডে ইরান হস্তক্ষেপ করছে।#
342/