সিরিয়ার সামরিক বাহিনী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অবকাঠামো ধ্বংস করা এবং তাদের অস্ত্র, কমান্ড সেন্টার, অপারেশন কক্ষ, ত্রাণ কনভয় এবং তাদের মধ্যে যোগাযোগ লাইন ধ্বংস করার দিকে মনোনিবেশ করেছে। আল-আলম নেটওয়ার্কের বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর হামলার ফলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং তাদের আক্রমণের শক্তি ও অস্ত্র একটা অংশ হারিয়েছে এবং তাদের মধ্যে যোগাযোগের সুযোগও নষ্ট হয়েছে।
হামা শহরে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা
আল-আলম নিউজ নেটওয়ার্কের প্রতিবেদক, সিরিয়ার হামা শহরের আল-আসি স্কয়ার থেকে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো হামার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এখন এ এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এই রিপোর্ট অনুযায়ী, সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাত থেকে এই এলাকাগুলো মুক্ত করার পর মানুষ তাদের কাজে ফিরেছে।
আলেপ্পোর দখলকৃত এলাকার প্রশাসন নিয়ে দ্বন্দ্ব
আল-মায়াদিনের রিপোর্টার জানিয়েছেন, তাহরির আশ-শাম এবং জইশ আল-ইসলামের সন্ত্রাসীরা আলেপ্পো শহরের দখলকৃত এলাকার প্রশাসনের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য তারা একে অপরকে হত্যা করছে, সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে।
আল-মায়াদিনের প্রতিবেদক বলেছেন সন্ত্রাসীদের মধ্যকার এই বিরোধ খুবই প্রবল এবং তাদের মধ্যকার সংঘর্ষের জেরে তাহরির আশ-শাম কমিটির অন্যতম নেতা আবি দেজ মুহাম্বল নিহত হয়।
এই প্রতিবেদক জইশ আল-ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের কথাও জানিয়েছে।
ইদলিব এবং আলেপ্পোতে সন্ত্রাসী অবস্থানে সিরিয়া সরকারের বিমান হামলা
সিরিয়ার বিমান বাহিনী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসীদের অবস্থান লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণ করেছে।
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে: আলেপ্পোর উপকণ্ঠে আল-সাফিরা শহরের কাছে সিরিয়া ও রাশিয়ার যৌথ বোমা হামলায় কয়েক ডজন জঙ্গি হতাহত হয়েছে।
দামেস্ক এবং মস্কোর মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়ার কাছ থেকে আরও অস্ত্র সিরিয়ার এই প্রদেশের হামিমিম ঘাঁটিতে স্থানান্তর করা হবে এবং আলেপ্পো ও ইদলিবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সেসব অস্ত্র ব্যবহার করা হবে।
সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, আলেপ্পোর বর্তমান পরিস্থিতির কারণে এই প্রদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
সিরিয়ার সাথে সীমান্তবর্তী স্ট্রিপে ইরাকি সাঁজোয়া সরঞ্জাম পাঠানো
ইরাকের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে যে দেশটির সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানগুলো দক্ষিণের আল-কাইম অঞ্চল থেকে জর্ডানের সীমান্ত পর্যন্ত সীমান্ত সুরক্ষার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
একটি ইরাকি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, ইরাকি সেনাবাহিনীর সামরিক সরঞ্জাম সিরিয়া ও জর্ডানের সীমান্ত এলাকায় পৌঁছে গেছে।
মানবিক সাহায্যকে আলেপ্পোতে প্রবেশে বাধা দেওয়া
আলেপ্পোতে অবস্থিত সন্ত্রাসীরা এই শহর থেকে বের হওয়ার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই এলাকার সন্ত্রাসীরা আল-সাফিরা এলাকায় বেসামরিক লোকদের কাছে মানবিক ত্রাণ সাহায্য প্রবেশে বাধা দিচ্ছে।
সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও আজ ঘোষণা করেছে যে আলেপ্পো শহরের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সন্ত্রাসীরা টার্গেট করেছে।
আলেপ্পোর উত্তর শহরতলিতে অগ্রসর হওয়ার বিষয়ে সন্ত্রাসীদের দাবি
আল-জাজিরা টিভি চ্যানেল সন্ত্রাসীদের বরাত দিয়ে দাবি করেছে যে তারা আলেপ্পোর উত্তর উপকণ্ঠে অগ্রসর হয়েছে।
এই প্রতিবেদন অনুসারে, সন্ত্রাসীরা আরো দাবি করেছে যে তারা আলেপ্পোর উত্তর উপকণ্ঠে অবস্থিত উম হাউস, আল-ওয়াহশিহ, ফাফিন এবং আল-শাহবা গ্রামগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
তারা দাবি করেছে যে তারা সিরিয়ার সেনাবাহিনী এবং কুর্দি বাহিনীর সাথে তীব্র সংঘর্ষের পর আলেপ্পোর উপকণ্ঠে উম আল-আমেদ, তাল রাহাল, আল-জাবিয়া এবং আল-শেখ গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
গত রাতের অভিযানে রাশিয়ান ও সিরিয়ান যোদ্ধারা সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক ডজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করার পরও সন্ত্রাসীরা এসব গ্রাম দখলের দাবি করেছে।#