৫ জুন ২০২৫ - ২১:৪০
Source: Parstoday
ইসরাইলের জন্য সামরিক সরঞ্জাম লোড করতে ফরাসি মারসি কর্মীদের বাধা

পার্সটুডে-নিরাপত্তা পরিষদে গাজা বিষয়ক একটি প্রস্তাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়েছে। মার্কিন ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

মার্কিন ভেটোর পর, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আবারও গাজা উপত্যকার উপর একটি প্রস্তাব গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, নিরাপত্তা পরিষদের অন্য ১৪ সদস্যই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একাই বিরোধিতা করেছে এবং ভেটো দিয়ে এটি গ্রহণে বাধা দিয়েছে। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলা বৃদ্ধি এবং এ অঞ্চলে মানবিক সংকট অব্যাহত থাকার পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়েছিল, যার লক্ষ্য ছিল যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ইসরাইলের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।

গাজায় হত্যাকাণ্ডের জন্য ইহুদিবাদীদের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্ল্যাঙ্ক চেক

ফিলিস্তিনি মুজাহিদীন আন্দোলন গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের খসড়া প্রস্তাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোকে গাজার জনগণের ওপর গণহত্যা চালানোর জন্য ইহুদিবাদীদের প্রতি দেশটির দেওয়া খালি চেক হিসেবে উল্লেখ করেছে। ফিলিস্তিনি মুজাহিদীন আন্দোলন "অপরাধী মার্কিন সরকারের" ভেটোর তীব্র নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। ওই বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে: এই পদক্ষেপ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে ট্রাম্প প্রশাসন, তার পূর্ববর্তী সরকারের মতো, ইহুদিবাদী ইসরাইলের মাধ্যমে গাজার জনগণের ওপর গণহত্যা এবং জাতিগত নির্মূল অভিযানের প্রধান অংশীদার।

নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন পদক্ষেপের প্রতি বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ

জাতিসংঘে রাশিয়ার প্রতিনিধি জোর দিয়ে বলেছেন যে গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর নৃশংস গণহত্যায় আমেরিকা জড়িত। ফ্রান্সও খসড়া প্রস্তাবের ভেটোর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং জোর দিয়ে বলেছে যে গাজা উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ। পাকিস্তান ঘোষণা করেছে যে মার্কিন ভেটো ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালানোর জন্য ইহুদিবাদী ইসরাইলকে দেওয়া সবুজ সংকেত এবং নিরাপত্তা পরিষদের কপালে একটি কলঙ্ক। মালয়েশিয়াও এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদে ব্রিটিশ প্রতিনিধি জোর দিয়ে বলেছেন যুদ্ধ বন্ধ করা এবং গাজায় সাহায্য সরবরাহের সুবিধার্থে আহ্বান জানানোর প্রস্তাবকে লন্ডন সমর্থন করে। নিরাপত্তা পরিষদে চীনের প্রতিনিধি আরও বলেন: নিরাপত্তা পরিষদের ভোটের ফলাফল থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে গাজা সংকটের অবসানে প্রতিষ্ঠানটির অক্ষমতার কারণ হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাধা।

গাজার প্রতি সমর্থন: ট্রিনিটি বিশ্ববিদ্যালয় ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে

আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে অবস্থিত মর্যাদাপূর্ণ ট্রিনিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড গাজা যুদ্ধের সময় ইহুদিবাদী ইসরাইলের আন্তর্জাতিক ও মানবিক আইন লঙ্ঘনের প্রতিবাদে ইসরাইলি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোম্পানিগুলোর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে সম্মত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে শিক্ষা, গবেষণা এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতা বন্ধ করার পাশাপাশি ইসরাইলি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে বিনিয়োগ এবং ছাত্র বিনিময় চুক্তি বাতিল করার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুসারে, ট্রিনিটি বিশ্ববিদ্যালয় আয়ারল্যান্ড আর ইসরাইলি প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে সহযোগিতা সহজতর কিংবা সমর্থন করবে না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের পাঁচ দিনের প্রচারণার পর ট্রিনিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দখলকৃত অঞ্চলে অস্ত্র পাঠানোর বিরুদ্ধে 'না'

মার্সেইয়ের ফরাসি বন্দর শ্রমিক ইউনিয়ন সামরিক সরঞ্জাম সম্বলিত একটি কন্টেইনার লোড করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে যা ইসরাইলে পাঠানোর কথা ছিল। মার্সেই বন্দর শ্রমিক ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলেছে: এই বন্দর ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে অস্ত্র ও সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে: এই কন্টেইনারের সরঞ্জামগুলো ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলি সেনাবাহিনী যে আক্রমণ ও গণহত্যা চালায়, তাতে ব্যবহৃত হয়।

গাজায় অপরাধের জন্য ইহুদিবাদী অফিসারকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে

ইহুদি সংবাদপত্র হারেৎজ জানিয়েছে যে গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপরাধ করা সত্ত্বেও ইসরাইলি সেনাবাহিনী একজন দখলদার অফিসারকে পদোন্নতি দিয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, অন্যান্য ইহুদিবাদী সৈন্যরা সাক্ষ্য দিয়েছে যে প্রশ্নবিদ্ধ ইহুদিবাদী অফিসার সাদা পতাকাধারী ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। গাজা উপত্যকায় এই ইহুদিবাদী অফিসারের অধীনে থাকা সৈন্যরা স্বীকার করেছে যে তিনি এই আদেশ জারি করেছিলেন সেইসব ফিলিস্তিনিদের ওপর যারা তাদের জন্য কোনও বিপদ ডেকে আনে নি।

ইহুদিবাদী ইসরাইলের কারাগারে দশ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দী

"প্রিজনার্স অ্যাফেয়ার্স অর্গানাইজেশন", "প্রিজনার্স ক্লাব" এবং "জামির ইনস্টিটিউট" একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেছে। ওই বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে জুনের শুরুতে (১ জুন) দখলদারদের কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দীর মোট সংখ্যা অন্তত ১০,৪০০ জন। বিবৃতি অনুসারে, এই সংখ্যায় দখলদার ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর শিবিরে বন্দী ফিলিস্তিনীরা অন্তর্ভুক্ত নয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে বন্দীদের মধ্যে ৪৯ জন মহিলা রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৮ জনকে কোনও অভিযোগ ছাড়াই প্রশাসনিকভাবে আটক করা হয়েছে। বন্দীদের মধ্যে ৪৪০ জন শিশু এবং ৩,৫৬২ জন প্রশাসনিক বন্দীও রয়েছে।#

Your Comment

You are replying to: .
captcha