‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : parstoday
মঙ্গলবার

২ নভেম্বর ২০২১

১:৫৭:৪০ PM
1194699

আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ বেধে যেতে পারে: পাক রাষ্ট্রদূতের হুঁশিয়ারি

কাবুলে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আফগানিস্তানে সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা) : মানসুর আহমাদ খান বলেছেন, 'আফগানিস্তানের সব পক্ষ যদি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনে ব্যর্থ হয় তাহলে সেদেশে গৃহযুদ্ধ বেধে যেতে পারে।' তিনি গত চার দশকের বেশি সময় ধরে আফগান যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে বলেন, 'এ সংঘাত ওই দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো ভূমিকা রাখেনি। তাই সব পক্ষকে নিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক উদ্যোগ নেয়া ছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।' সম্প্রতি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশিও আফগানিস্তানে অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, 'শাসন ক্ষমতায় সবার অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হলে আন্তর্জাতিক সমাজের কাছেও আফগানিস্তানের গ্রহণযোগ্যতা বজায় থাকবে।'

কাবুলে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত এমন সময় আফগানিস্তানে সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করলেন যখন এর আগে কেউই এ ধরনের হুশিয়ারি সংকেত দেননি। গত ১৫ আগস্ট তালেবান ক্ষমতা দখলের পর পাকিস্তান সরকার আফগানিস্তানে ব্যাপক সংস্কারের বিষেয়টিকে স্বাগত জানায় এবং ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তালেবানকে সরকার গঠনে সব রকম সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে ইসলামাবাদ। এ লক্ষ্যে পাকিস্তান সরকার তালেবানের প্রতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালানোর পাশাপাশি আমেরিকায় আটকে থাকা আফগানিস্তানের অর্থ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। গত তিন মাসে পাকিস্তানের কর্মকর্তারা যখনই আফগানিস্তানের বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন তখনই সেখানে অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়েছেন। এ দীর্ঘ সময়ে পাক কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে এলেও এবার পাক রাষ্ট্রদূত গৃহযুদ্ধের যে আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন তাতে ওই দেশটিতে খুব শিগগিরি বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, তালেবান আফগানিস্তানে অংশগ্রহণমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিলেও যেহেতু তা এখনো বাস্তবায় হয়নি সেকারণে সেদেশে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না বরং এ আশঙ্কা এখন দিন দিন বাড়ছে। তালেবানের অস্থায়ী সরকার জনগণের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। বিশেষ করে হেলমান্দ প্রদেশে উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস জঙ্গিরা সংখ্যলঘু শিয়া মুসলমানদের ওপর হত্যাকাণ্ড ও জুলুম নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। অন্যান্য অঞ্চলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় আফগান জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে আছে। এ অবস্থায় ওই  দেশটিতে গৃহযুদ্ধ বেধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যাইহোক বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠনের কোনো বিকল্প তালেবানের সমানে নেই। এর অন্যথায় তালেবানও ক্ষমতা থেকে ছিটকে পড়তে পারে।  আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানকে পাকিস্তানের জন্য বিজয় হিসেবে দেখা হলেও গৃহযুদ্ধের ব্যাপারে কাবুলে পাক রাষ্ট্রদূতের এ হুশিয়ারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।#     

342/