‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : Parstoday
রবিবার

১৩ নভেম্বর ২০২২

৩:২৪:১৮ PM
1322783

ইউক্রেন বিষয়ে নীতি এবং পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে

ইউক্রেন যুদ্ধের নবম মাস চলছে। ইউক্রেন বিষয়ে ইউরোপের নীতি এবং পদক্ষেপের নেতিবাচক প্রভাব ও পরিণতি বিশেষ করে এর নেতিবাচক অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবগুলো দৃশ্যমান হওয়ার পর এই ইস্যুতে ইউরোপজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধিসহ এবং অস্ত্র কিনতে জার্মানির জোট সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ের প্রতিবাদ জানাতে শনিবার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি এবং অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে ইউক্রেনে সামরিক সংঘাতে ইন্ধন জোগানোর প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।'আমেরিকার মাধ্যমে ইউরোপ বিপর্যয়ের গভীরে নিমজ্জিত হয়েছে' ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড হাতে ধারণ করে বিক্ষোভকারীরা ইউরোপীয় নেতাদের নীতির বিরুদ্ধে তারা প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন। বিক্ষোভের আয়োজনকারীরা অভিযোগ  করছেন যে জার্মানি এবং ন্যাটোর নেতারা তাদের  নিজ দেশের জনগণের কল্যাণের  প্রতি কোনোরূপ ভ্রুক্ষেপ না করেই ইউক্রেন সংঘাতকে উসকে দিচ্ছেন। বিক্ষোভকারীরা ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্র পাঠানোর বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেছেন।এর আগে জার্মানির একটি মিডিয়া জার্মান অর্থনীতিতে মন্দা শুরু হওয়ার খবর দিয়েছিল। 

এদিকে হাজার হাজার পোলিশ জাতীয়তাবাদী এবং উগ্র ডানপন্থী গোষ্ঠীর সদস্যরা পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে ১১ নভেম্বর শুক্রবার দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা  দিবস  উপলক্ষে মিছিল করেছে।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির বার্ষিকীতে একই সময়ে অনুষ্ঠিত এই পদযাত্রায় চরম ডানপন্থী সমর্থকরা ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে। যদিও জাতিগত ইস্যুতে ইউক্রেনের সাথে পোল্যান্ডের মতপার্থক্য রয়েছে তবে দেশটি বিপুল সংখ্যক ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। অন্যদিকে কিছু উগ্র ডানপন্থী দল এসব মতপার্থক্যকে জিইয়ে রাখতে  তাদের হাতে ভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড ছিল যেখানে লেখা ছিল "পোল্যান্ডের ইউক্রেনাইজেশন বন্ধ করুন।" 

এখানে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে  ইউক্রেনের পক্ষপাতদুষ্ট নীতির বিরুদ্ধে ইউরোপীয় দেশগুলিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘাতে ইউরোপীয় দেশগুলোর রুশ-বিরোধী দৃষ্টিভঙ্গির পরিণতির ক্রমবর্ধমান ফলাফল প্রকাশ হয়ে পড়ছে। ইউরোপীয় দেশগুলো মস্কোর বিরুদ্ধে একের পর এক নিষোধজ্ঞা এবং তাদের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির ফলে তারা ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক স্থবিরতার মুখে পড়েছে।  পাশাপাশি  এসব দেশ তাদের নিজ দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ ও সামাজিক ব্যয় হ্রাস করতে বাধ্য হয়েছে।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষ নিজ দেশে ক্রমবর্ধমান সামাজিক প্রতিবাদের বিস্তার নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রনেতারা খারাপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ইউরোপীয় জনগণের জীবনযাত্রার খারাপ অবস্থার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করার চেষ্টা করছেন। ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছে যে মস্কো যুদ্ধের অস্ত্র হিসাবে গ্যাসকে ব্যবহার করছে এবং তারা একটি গ্যাস যুদ্ধ শুরু করেছে।অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে ইউরোপীয় দেশগুলিতে বিশেষ করে জার্মানির উপর ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব এবং অর্থনৈতিক পরিণতি দীর্ঘমেয়াদী হবে এবং তা ২০  বছরেরও বেশি সময় ধরে অব্যাহত থাকতে পারে।#

342/