‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
সোমবার

২৯ মে ২০২৩

১:৪৬:০৪ AM
1369486

ভারতের উত্তরাঞ্চলে হজ যাত্রীদের বাসে উগ্র হিন্দুদের হামলা

ভারতের রাজস্থান রাজ্যে আল্লাহর ঘর কাবার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া মুসলিম হজ যাত্রীদের একটি বাসে হামলা চালিয়েছে চরমপন্থী হিন্দুরা। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা (আবনা): ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের কোটা শহরে একদল মুসলিম হজ যাত্রী বহনকারী বাসে হিন্দু চরমপন্থীরা পাথর নিক্ষেপ করে।

হিন্দু চরমপন্থীরা বাসটিকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে মারার পর, বাসের ক্ষয়ক্ষতির ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে। ঐ ফুটেজে বেশ কয়েকজন আহত বাস যাত্রীকে দেখা গেছে।

হামলায় আহত ঐ ব্যক্তিরা বলেন, এই ঘৃণ্য অপরাধ হিন্দু ডানপন্থী কর্মীদের একটি দলের কাজ। হামলার সময় তাদেরকে হিন্দুত্ব বাদী স্লোগান দিতে দেখা গেছে। এমনকি তারা বাসে থাকা নারী ও মেয়েদেরকে অপহরণ ও লাঞ্ছিত করার হুমকি দেয়।

অপরদিকে কোটা শহরের পুলিশ তাদের অফিসিয়াল টুইটারে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে করা এক টুইটে লিখেছে, এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এখনও অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

ভারতীয় মুসলিম এক্টিভিস্ট তালহা রশিদি, এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন: হজ একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। হজে যাওয়া প্রত্যেক ব্যক্তি ধর্মীয় বৈষম্য ছাড়াই যার সাথে দেখা হয় তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন।

তিনি আরও বলেন: আমি মনে করছি এই আগ্রাসীদের মনে অনেক বেশি ঘৃণা ছিল। এমনকি তারা সুযোগ পেলে হজ যাত্রীদের সাথে থাকা শিশুদের উপরও হামলা করতো।

সামাজিক কর্মী আমিনা কাউসার বলেছেন: রাজস্থানে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পার্টির সরকার থাকার পরও এমন ঘৃণ্য চরমপন্থী আচরণ মেনে নেয়া যায় না।

২০১২ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হাজী সহায়তা প্রকল্প স্থগিত করে। ২০১৮ সালে, ভারতের হিন্দুত্ব বাদী মোদী সরকার ঘোষণা করে যে, তার সরকার কয়েক দশকের মুসলিম হজ যাত্রী বহনকারী ফ্লাইটে ভর্তুকি দেওয়া নীতির অবসান ঘটাচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হিসেবে তারা বলে, এটি করা হয়েছে মূলতঃ ধর্মকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হতে বিরত রাখতে।

ক্ষমতাসীন কট্টরপন্থী রাজনৈতিক হিন্দু সংগঠন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), তাদের বিরোধী দল কংগ্রেস পার্টিকে এ বিষয়ে অভিযোগ করে, তারা ১৯৫০ এর দশকে হজ যাত্রীদের সহায়তা করার যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছিল, তা ছিল মূলতঃ মুসলিম ভোটারদেরকে আর্থিক সাহায্য দিয়ে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে।

এই নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারই কিন্তু ৪ সপ্তাহের ব্যবধানে লক্ষাধিক হিন্দুর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠান কুম্ভ মেলায় মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে।

ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা ২০ কোটির বেশি। ২৬শে মে ২০১৪ সালে ভারতে নরেন্দ্র মোদীর দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলমানদের উপর নিপীড়ন এবং জাতিগত বৈষম্য বহুগুণে বেড়ে গেছে।#176