‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
মঙ্গলবার

২৫ জুন ২০২৪

৭:০১:৩০ PM
1467703

লেবাননের সমর্থনে হিজবুল্লাহ পূর্ণ শক্তি নিয়ে প্রবেশ করেছে / ইসরায়েলের সাথে সম্পৃক্ত ১৫৩টি জাহাজে এবং আইজেনহাওয়ার রনতরিকে লক্ষ্য করে ইয়েমেনের হামলা

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ মুভমেন্টের নেতা, লেবাননের হিজবুল্লাহর যুদ্ধে জড়ানোর দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন- লেবাননের সমর্থনে হিজবুল্লাহ পূর্ণ শক্তি নিয়ে প্রবেশ করছে এবং হিজবুল্লাহর এই অবস্থানের উপর কোনো রাজনৈতিক চাপ প্রভাব ফেলতে পারবে না।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা-সংস্থা (আবনা): ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর নেতা- সাইয়্যেদ আব্দুল মালিক বদরুদ্দীন আল-হুথি, তার সাপ্তাহিক বক্তব্যে বলেছেন- শত্রু ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নির্মম, নৃশংস ও অপরাধমূলক আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছ। অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া বন্দিদেরকে শত্রুরা কারাগারে অনাহারে রাখছে এবং তাদেরকে জোরপূর্বক ক্ষতিকর অজ্ঞাত ইনজেকশন পুশ করা হচ্ছে।

ইসলামের প্রতি তাদের ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপের অন্যতম প্রকাশ হল- দখলদার বাহিনী রাফাহ মসজিদে কাবাবের উৎসব ও ডান্স পার্টির আয়োজন করেছে।

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর নেতা আরো বলেন- গাজায় গণহত্যার পথ প্রশস্ত করতে ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের সহযোগিতায় আমেরিকা ৫০টি এফ-১৫ যুদ্ধবিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং জার্মান পার্লামেন্টও ইহুদিবাদী শাসকদের অস্ত্র সহায়তা প্রসারিত করবে বলে জানিয়েছে। এছাড়া সার্বিয়াও এই সব উদ্যোগের অংশিদার হিসাবে নিজেদের গর্বিত বলে মনে করে ।

আল-হুথি রাফাতে ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন- এই বিষয়টি তেল আবিবের জন্য অত্যান্ত উদ্বেগের, তারা গাজায় প্রচুর ক্ষয়-ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, এইসব ভীতিকর পরিস্থিতির কারণে তাদের অনেক তরুণ সামরিক-দায়িত্ব থেকে পালিয়ে গেছে। বিষয়টি ইহুদিবাদী শাসকদের জন্য বিব্রত কর এবং এ অবস্থা দিনের পর দিন আরো জটিল এবং কঠিন হয়ে উঠছে।

তিনি বলেন যে ইহুদিবাদীরা বর্তমানে অস্তিত্ব-সংকটে রয়েছে এবং ভবিষ্যতের দিনগুলোর জন্য তারা আরো বেশী অনিশ্চয়তা ও অনিরাপত্তার পূর্বাভাস পাচ্ছে। ফিলিস্তিনি জাতির প্রচেষ্টা ও অবিচলতার ফলশ্রুতিতেই মূলতঃ তাদের জন্য এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।

হিজবুল্লাহর সম্প্রতি অভূতপূর্ব হুদহুদ ড্রোন অভিযানের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এই অপারেশন উত্তর ফিলিস্তিনের অধিকৃত বিশাল এলাকায় নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করছে যা শত্রুদের জন্য গভীর উদ্বেগ ও ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর মতে, সামরিক ঘাঁটি এবং অস্ত্র তৈরির ওয়ার্কশপসহ তাদের সামরিক কার্যক্রম ও গতিবিধির উপর এই পর্যবেক্ষণ মূলতঃ এটাই স্পষ্ট করে যে, ঐসব গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থানগুলো হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তু ও টার্গেটের অংশ হবে।

আমেরিকানরা যদিও লেবানন ফ্রন্টে ইসরায়েলের দুরবস্থা ও দুর্দশা কমানোর চেষ্টা করছে তবে তাদের চাপের ফলে হিজবুল্লাহর অবস্থান দুর্বল হবে না।

 

ইসরায়েলের সাথে সম্পৃক্ত ১৫৩টি জাহাজে এবং আইজেনহাওয়ার রনতরিকে ইয়েমেনিরা লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর নেতা তাঁর দেশের সশস্ত্র বাহিনীর অভিযান সম্পর্কে বলেছেন: এই সপ্তাহে, ২৬টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ১০টি অভিযান চালানো হয়েছে, যার মাধ্যমে মোট আটটি জাহাজকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত ইসরায়েলি, আমেরিকান এবং ব্রিটিশ শত্রুদের ইয়েমেনের লক্ষ্যবস্তু হওয়া মোট জাহাজের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১৫৩।

তিনি আরো বলেন: এই সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনগুলির মধ্যে একটি ছিল উত্তর লোহিত সাগরে তৃতীয় বারের মতো মার্কিন আইজেনহাওয়ার বিমানবাহী রণতরীকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং ঐ রনতরিকে ধাওয়া করা। এছাড়াও, অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হল- বিশেষ নৌ-অভিযানের মাধ্যমে "টোটর" নামে একটি জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়া। এই অভিযানে ইয়েমেনি নৌবাহিনীর সদস্যরা জাহাজটিতে উঠে পড়ে এবং তাতে বোমা পেতে রাখতে সক্ষম হয়, পরে একটি সামরিক নৌকার মাধ্যমে জাহাজটিকে উড়িয়ে দেওয়া হয়। ইয়েমেনি নৌবাহিনীর অভিযানে লক্ষ্যবস্তু হওয়া আরেকটি জাহাজ এডেন উপসাগরে ডুবে যাওয়ার পথে রয়েছে।

তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, আমেরিকান এবং ব্রিটিশরা ইয়েমেনের বিরুদ্ধে পাল্টা ২৪টি আক্রমণ চালিয়েছে কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ এর ফলে উল্লেখযোগ্য কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আমেরিকা বাস্তবে একটি সংকট কাল অতিক্রম করছে এবং একটি ভয়ানক ব্যর্থতার সময় পার করছে। তাদের নেতারা ইয়েমেনের সক্ষমতা অর্জনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

ইরাকি ভাইদের গাজার সপক্ষে থেকে যুদ্ধের পরিকল্পনার প্রশংসা করে তিনি আরো বলেন- ইরাকি ভাইয়েরা হাইফা বন্দরসহ সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তুগুলোতে বোমা হামলার ঘোষণা দিয়েছে।

 

সৌদি হজ ব্যবস্থাপনা হাজীদের সেবা প্রদানের দায়িত্ব পালনের যোগ্য নয়

ইয়েমেনের হুথি নেতা বাইতুল্লাহ আল-হারামের হজ সম্পর্কে বলেছেন: সৌদি প্রশাসন বাইতুল্লাহ আল-হারামের হজযাত্রীদের কাছ থেকে সেবা প্রদানের নাম করে বিপুল পরিমান সম্পদ হাতিয়ে নেয় এবং তাদের ইচ্ছাকৃত অবহেলা এবং অদূরদর্শিতার কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা হজযাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হয়।

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর নেতা বলেছেন: মুসলিম উম্মার  কল্যাণে হজ ও ওমরাহ অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে এবং বাইতুল্লাহ শরিফের পরিকল্পনায়ও এই লক্ষ্যে একটি মৌলিক ভূমিকা রাখতে হবে অথচ সৌদি ব্যবস্থাপনা এ ধরনের কাজের জন্য যোগ্য নয়। সৌদি আরব রাজনৈতিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছার প্রতি আজ্ঞাবহ, ইসরায়েলের শত্রুর সাথে তাদের শত্রুতা এবং মুসলমানদের শত্রুদের সাথে রয়েছে তাদের মিত্রতা। #176K