‘আহলে বাইত বার্তা সংস্থা’

সূত্র : ABNA
বুধবার

১৬ নভেম্বর ২০১৬

৭:৩৭:১১ AM
792250

আপডেট;

নাইজেরিয়ায় পুলিশের হামলায়; ১০০ ব্যক্তির শাহাদত

নাইজেরিয়া ইসলামি মুভমেন্টের ঘোষণার ভিত্তিতে, দেশের উত্তরাঞ্চলীয় কানো শহরের শিয়া মুসলিমদের উপর পুলিশী হামলায় অন্তত ১০০ ব্যক্তি শহীদ এবং বহু লোক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

আহলে বাইত (আ.) বার্তা সংস্থা –আবনা-: ইমাম হুসাইন (আ.) এর চেহলাম উপলক্ষে আয়োজিত নাইজেরিয়ার কানো শহরে শোক মিছিলের উপর চালানো পুলিশী হামলায় অন্তত ১০০ জন শহীদ হয়েছে। তথ্য নাইজেরিয়া ইসলামি মুভমেন্টের। এ হামলায় বহু লোক আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইমাম হুসাইন (আ.) এর চেহলামের (চল্লিশা) কয়েক দিন আগে নাইজেরিয়ার কানো শহরের জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে একটি শোক মিছিলে অংশগ্রহণ করেছিল। পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও যুদ্ধে ব্যবহৃত গুলি ব্যবহার করে।

ইমাম হুসাইন (আ.) এর চেহলাম উপলক্ষে আযাদারীতে অংশগ্রহণকারীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে আযাদারী করতে পারে সে লক্ষ্য নাইজেরিয়া সরকার বরাবর একটি চিঠি লিখে সরকারে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল দেশটির ইসলামি মানবাধিকার কমিশন। এরপরও গত সোমবার (১৪ নভেম্বর-২০১৬) ঐ নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে ইমাম হুসাইন (আ.) এর আযাদারদের উপর।

এএফপি জানিয়েছে, নাইজেরিয়ার শিয়ারা যখন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে ব্যস্ত ছিল তখন এ ঘটনা ঘটে।

নাইজেরিয়ার পুলিশের জনৈক সদস্য শিয়াদের উদ্দেশ্যে গুলি চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তিনি হতাহতদের সংখ্যা সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে রাজি হননি।

ইলিয়াস আমানি নামক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন: পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিয়াদেরকে বিচ্ছিন্ন করতে তাদের লাইনগুলোকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ অফিসারের দাবী, তারা (শোকার্ত ব্যক্তিরা) আমাদের একজন অফিসারকে আহত করলে তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। কারণ তারা মারমুখি হয়ে উঠছিল।

নাইজেরিয়া ইসলামি মুভমেন্ট জানিয়েছে, কানো শহরের রাস্তায় শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা চালিয়েছে পুলিশ। তারা মিছিলে অংশগ্রহণকারীদেরকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে শিয়াদের গুলি চালানোর বিষয়টি একটি বানোয়াট গল্প ও শয়তানি চক্রান্ত। এটি ইসলামি মুভমেন্টকে দমন করার উদ্দেশ্যে সাজানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নাইজেরিয়ার শিয়ারা ইমাম হুসাইন (আ.) এর চেহলাম উপলক্ষে পায়ে হেটে কয়েকদিনের পথ পাড়ি দিয়ে কাদুনা ও নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় বড় বড় শহরগুলোতে যায়।

ইসলামি মুভেমেন্টের তৎপরতাকে অবৈধ ঘোষণা করেছে নাইজেরিয়া সরকার। বিপরীতে আবুজা সরকারকেও স্বীকৃতি দেয় না এ মুভমেন্ট।

নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানা গেছে যে, সম্প্রতি মাসগুলোতে এ অঞ্চলে -বিশেষতঃ কাদুনা’তে- শিয়াদের বিরুদ্ধে শত্রুতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। উগ্রতাবাদী পেশ ইমামরা নিজেদের সকল ধরনের বক্তৃতায় শিয়াদের বিরুদ্ধে যে কোন অপবাদ আরোপ ও মিথ্যাচারে দ্বিধা করে না।

নাইজেরিয়ায় শিয়াদের বিরুদ্ধে দমন নীতি, গত বছর কাদুনা প্রদেশের যারিয়া শহরের একটি ইমামবাড়ীতে আযাদারীতে ব্যস্ত শোকার্ত মানুষের উপর নাইজেরিয়া সেনাবাহিনীর হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হয়।

নাইজেরিয় সেনারা, যারিয়ায় অবস্থিত এদেশের ইসলামি মুভমেন্টের নেতা শেইখ ইব্রাহিম যাকযাকি’র বাসভবন সংলঘ্ন ইমামবাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় আটক করে। ঐ হামলা তিনি একটি চোখ হারান এবং তারপর থেকে একবছর যাবত অবৈধভাবে তাকে আটকে রাখা হয়েছে।

এ ঘটনার পর, ৩৫০ শিয়া হত্যা ও তাদেরকে গণকবরে দাফনের অভিযোগে নাইজেরিয়া সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করেছিল এ্যামনেস্টি ইন্টান্যাশনাল।

আগস্ট মাসে কাদুনা প্রদেশের গভর্নর ৩৪৭ জনকে হত্যার বিষয়ে স্বতন্ত্র তদন্তের আশ্বাস দিলেও এ নাগাদ একজন সেনাকেও ঐ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিচার বা কারো বিরুদ্ধে গ্রেফতারের আদেশ বা পরোয়ানা জারি করা হয়নি।#