১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার (২০২৪) দুপুরে লেবাননজুড়ে হাজার হাজার মানুষের কাছে থাকা বেতার যোগাযোগের পেজারগুলো একসঙ্গে বিস্ফোরিত হয়। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই সন্ত্রাসী সাইবার হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত ও তিন হাজার জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। বেতার যোগাযোগের ওই যন্ত্রগুলোর উৎপাদনে জড়িত কোম্পানিগুলোর সহায়তায় ইসরাইল এই হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইসরাইলের এই সন্ত্রাসী তৎপরতার পর সন্ত্রাস বিরোধী লেবাননের জনপ্রিয় ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে বলেছে, ইহুদিবাদী শাসকচক্রের অপরাধযজ্ঞ প্রতিরোধ শক্তির সংকল্পকে দ্বিগুণ করবে এবং ইসরাইলকে এই অপরাধের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে। হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ আজ ১৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় আঞ্চলিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ভাষণ দেবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে লেবাননের স্পিকার নাবিহ বেররির নেতৃত্বাধীন আমল আন্দোলন বলেছে, ইসরাইলের এই অপরাধের ফলে লেবাননি প্রতিরোধ অব্যাহত থাকার ক্ষেত্রে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না ও ইসরাইলের নানা ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও লেবাননের প্রতিরক্ষায়ও অব্যাহত থাকবে।
ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসও বলেছে, "মার্কিন সরকারের সমর্থনেই এই অঞ্চলের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর সর্বাত্মক আগ্রাসনের আওতায় এই সন্ত্রাসী অভিযান চালানো হয়েছে।"
দ্য ফ্রি প্যালেস্টাইন মুভমেন্টও ঘোষণা করেছে, "লেবাননের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে এই ভয়ঙ্কর অপরাধটি হল উত্তর ফ্রন্টে (লেবাননের সাথে) যুদ্ধ স্থানান্তর করার জন্য নেতানিয়াহু এবং তার চরমপন্থী মন্ত্রিপরিষদের গুন্ডামি ও ব্যর্থতা আর দুর্বলতা ধামাচাপা দেয়ার ধারাবাহিকতা।"
ফিলিস্তিনের ইসলামী জিহাদও ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ইসরাইলের এইসব তৎপরতা বিভিন্ন ফ্রন্টে ফিলিস্তিনি জাতির সহয়াতাকারীদের পক্ষ থেকে ব্যাপক আঘাত খাওয়ার প্রেক্ষাপটে তেলআবিবের হতাশা ও নানা দুর্বল অবস্থাগুলোকেই তুলে ধরছে।
ইরাকের হিজবুল্লাহ ব্যাটেলিয়নসও বলেছে, লেবাননিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি অপরাধ প্রতিরোধকে জোরদার করবে এবং প্রতিরোধের সমর্থক জনগণের ক্রোধ ও আমাদের হিজবুল্লাহর ভাইদের শক্তিও জোরদার করবে, আর আমরা ইহুদিবাদীদের সঙ্গে চূড়ান্ত লড়াইয়ে জড়িত হতে পুরোপুরি প্রস্তুত।
ইরাকের নুজাবা প্রতিরোধ আন্দোলনও মার্কিন ও ইহুদিবাদী মহলের মোকাবেলায় আরব জাতিগুলোর স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছে, এইসব সন্ত্রাসী হামলা বীর প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অধ্যবসায়, সম্মান ও গৌরব বৃদ্ধি ছাড়া অন্য কোনো ফল বয়ে আনবে না।
ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের সরকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ আবদুল সালামও ইসরাইলের সাম্প্রতিক এইসব অপরাধের বিষয়ে বলেছেন, "শক্তিশালী লেবাননের প্রতিরোধ ইসরায়েলকে দমিয়ে রাখতে সক্ষম এবং এটি লেবাননের বিরুদ্ধে উত্তেজনা বাড়ানোর জবাবে ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠীকে চড়া মূল্য দিতে বাধ্য করতে সক্ষম"।
ইয়েমেনের আলেমদের জমিয়তও ইসরায়েলি সন্ত্রাসী অপরাধের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর এইসব আগ্রাসন তাদের ব্যর্থতা ঢাকারই কাপুরুষোচিত পদক্ষেপ।
লেবাননের বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়ক, মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাদ্র আল আহমাদি, ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মাদ শিয়া আসসুদানি, সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাশিম শরাফিদ্দিন ও জর্দানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইমান আসসাফদিও লেবাননের বেসামরিক জনগণের ওপর ইসরাইলি সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। #